বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ডিজিটাল সুপার গাড়ি

শেখ আনোয়ার

১১:০৪, ৫ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১১:১০, ৫ আগস্ট ২০২২

৭৮৬

ডিজিটাল সুপার গাড়ি

দিন দিন গাড়ীর ব্যবহার বাড়ছে। তেমনি বাড়ছে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজেদের গাড়ীকে আরও আকর্ষণীয় ও চমকপ্রদ করার প্রতিযোগিতা। গাড়ি ব্যবহার এখন আর কেবলমাত্র প্রয়োজন নয়। অনেকাংশেই বিলাসিতা। আর এই বিলাসিতার প্রয়োজনেই গাড়িতে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল সাজ সরঞ্জাম। যেমন- জেনারেল মোটর্স এর গাড়ি ব্যবহারকারীরা তাদের গাড়ীতে বসেই হোটেলে বুকিং দিতে পারেন অথবা ফুল পাঠিয়ে দিতে পারেন প্রিয়জনের ঠিকানায়। এজন্য তাকে যা করতে হচ্ছে তা হলো- গাড়িতে সংযুক্ত একটি ডিজিটাল বোতামে চাপ দিয়ে অনলাইন সংযোগের মাধ্যমে একজন উপদেষ্টার সাহায্য নেয়া।

 

মার্কিন গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান জেনারেল মোটর্স তাদের গাড়ীতে কন্ঠস্বর নিয়ন্ত্রিত বা ভয়েস অ্যাকটিভেটেড ৫ জি স্মার্ট ফোন সার্ভিস; ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট সার্ভিস এবং ট্রাফিক রিপোর্ট জানার সুবিধা সংযুক্ত করেছে। মার্কিন কোম্পানী এটিএক্স মার্সিডিজ বেঞ্জ ব্যবহারকারীদের টেক্সট বেজড আবহাওয়া সংবাদ, খেলাধুলা সংবাদ এবং স্টক মার্কেটের হালনাগাদ অবস্থা জানার সুবিধা দেয়। এটি সম্ভব হয়েছে মার্সিডিজ বেঞ্চের নিজস্ব সি লিঙ্গুয়াট্রনিক ব্যবস্থা রয়েছে বলে। জার্মান নির্মাতা ‘তেগারন’ তাদের গাড়ীতে সতর্কতা সংকেত সংযুক্ত করেছে গাড়ী চুরি রোধের সুবিধার্থে। ইতালিয়ান টেলিকম কোম্পানী ‘ভিয়াসাট’ তাদের গ্রাহকদের গাড়ীতে বসেই কেনাকাটা করার ও তাদের নিজস্ব ওয়েব থেকে গান ডাইনলোড করার সুযোগ দেয়। ফলে জ্যামে আটকে থাকলেও সময়ের অপচয় কমিয়ে ফেলা সম্ভব হয় অনেকাংশে। 

এ সুবিধাসমূহকে গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো নাম দিয়েছে ‘টেলিম্যাটিকস’। এর অর্থ হচ্ছে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবহার করে সেবাসমূহের সাহায্য নেওয়া। এর মাধ্যম বলতে বোঝানো হচ্ছে টেক্সট, সুইচ বা বোতাম, টাচ স্ক্রীন, ভয়েস সার্ভিস ইত্যাদি। এ যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো এক ব্যাপার। উল্লেখ্য, ‘টাইম’ ম্যাগাজিন ভবিষ্যতের গাড়ী নিয়ে কল্পনাভিত্তিক একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিলো। যাতে উভচর গাড়ীর কথা উল্লেখ ছিল। যা মাটি ও পানি উভয় স্থানেই সমানতালে চলতে পারে। সে গাড়িতে বসে থেকে ডিনারের অর্ডার দেয়া যাবে। বর্তমান ডিজিটাল যুগে ‘টেলিম্যাটিকস’-এর ব্যবহার গাড়ি চালনাকে শুধু সহজই করেনি, করেছে নিরাপদও। ভয়েস অ্যাকটিভেটেড বিভিন্ন সার্ভিস থাকার ফলে চালককে চোখ রাস্তা থেকে সরানোর কোন দরকারই পড়ে না। ফলে অ্যাকসিডেন্ট হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়। আবার ‘ভিয়াসাট’ ও ‘তেগারনের’ মতো গাড়ীতে এমন প্রযুক্তি সংযুক্ত আছে যাতে অ্যাকসিডেন্টের সাথে সাথে কাছাকাছি থাকা সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে অটোমেটিক সাহায্যবার্তা পৌঁছে যায়। 

ইতোমধ্যে ডিজিটাল প্রজন্মের চাহিদা মেটাতে টয়োটা জাপান তাদের গাড়িতে স্টিয়ারিং এর মধ্যেই মিডিয়া কন্ট্রোলিং, ফোন রিসিভ  ইত্যাদি ফিচার স্থাপন করে ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার জমজমাট গাড়ি বাজার দখল করে ফেলেছে। তবে সবচাইতে নিরাপদ হচ্ছে ‘বুইক বেঙ্গল’ চিন্তাধারার গাড়িটি। এতে ভয়েস অ্যাকটিভেটেড কন্ট্রোল প্যানেলটি রয়েছে উইন্ডস্ক্রীনে। চামড়ায় আবৃত ড্যাস বোর্ডটি পুরোটাই বিশালাকার স্পীকার। সুতরাং আপনার হাত দু’টোকে কখনোই স্টিয়ারিং হুইল থেকে সরানোর দরকার হয় না।


 
ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র তৈরি করেছে পৃথিবীর প্রথম উভচর গাড়ি গিবস্ অ্যাকোয়াডা। ৩.৭ লিটার ভি সিক্স ইঞ্জিন বিশিষ্ট এই গাড়ি নদী-সাগরের পানিতে ঘন্টায় ৪৩ মাইল বেগে দূরন্ত গতিতে ছুঁটতে পারে। ন্যুভয়াজ এনেছে পাইথন ও লিমুজিন টেন্ডার ৩৩ মডেলের গাড়ি। এই গাড়িকে বলা হচ্ছে 'উভচর গাড়ি'। প্রায় জেমস বন্ডের গাড়ির মতো। এটি রাস্তায় বিলাসবহুল গাড়ি, আবার পানিতে নামলে সুন্দর একটি ইয়ট। এই গাড়ির প্রবেশে রয়েছে সিঁড়ি। ভেতরটাও সুসজ্জিত। অনায়াসে জলে-স্থলে সমান তালে চলতে সক্ষম গাড়িটিকে তৈরি করা হয়েছে আগামী প্রজন্মের পরিবহনের কথা মাথায় রেখে। সুপার কার ক্যাটাগরি থেকে মুহ্ূের্ত পানিতে নেমে এই লিমুজিন গাড়ি হয়ে উঠতে পারে মেগা ইয়ট। এছাড়াও উভচর গাড়ি ল্যাম্বরগিনিটি বানিয়েছেন মাইক রায়ান। দারুণ স্টাইল আর গতির ল্যাম্বরগিনি রাস্তার মতো পানিতেও দাপিয়ে বেড়ায়। ঠিক টাইম সাময়িকীতে প্রকাশিত কল্পনার সেই উভচর গাড়ীটির মতোই।  

শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank