ওয়েবিনারে জেমস গার্ডিনার
তরুণদের প্রযুক্তি দক্ষতা বাড়াতে একসাথে কাজ করতে পারে কোডার্সট্রাস্ট ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
ওয়েবিনারে জেমস গার্ডিনার
তরুণদের প্রযুক্তি দক্ষতা বাড়াতে একসাথে কাজ করতে পারে কোডার্সট্রাস্ট ও যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস
![]() |
'কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন' এটাই ছিলো আলোচনার প্রতিপাদ্য। আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। আর এর আয়োজক ছিলো কোডার্সট্রাস্ট। রবিবার (২ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ও যুক্তরাষ্ট্র সময় (ইস্টার্ন) সকাল ১০টায় এই ওয়েবিনারে অন্যতম প্যানেল আলোচক ছিলেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এনভায়রনমনেন্ট, সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড হেলথ বিভাগের প্রধান জেমস গার্ডিনার।
কোডার্সট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সুপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশি আমেরিকান আইটি উদ্যোক্তা আজিজ আহমদের সভাপতিত্বে এবং কোডার্সট্রাস্ট্রের গ্রাজুয়েট ও পরবর্তীতে এর ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বপালনকারী কাজী তারানার সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও অংশ নেন কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট ও শিক্ষক মোহাম্মদ কায়কোবাদ, কোডার্সট্রাস্টের উপদেষ্টা ও সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম, সাবেক শিক্ষাসচিব এনআই খান। এছাড়াও যোগ দেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই থেকে কোডার্সট্রাস্টের অপর উপদেষ্টা ক্যাপ্টেন ক্রেইগ হাউলি। দর্শক প্যানেল থেকে আলোচনায় অংশ নেন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান জিজিডব্লিউ'র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ডেইজি গ্যালাগার।
আজিজ আহমদ তার আলোচনায় জানান, বিশ্বের, বিশেষ করে বাংলাদেশের আনএমপ্লয়েড ও আন্ডারএমপ্লয়েড তরুণদের সামনে রেখে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১৪ সালে কোডার্সট্রাস্ট তার যাত্রা শুরু করে। তিনি বলেন, আমি নিজে প্রযুক্তিখাতে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছি, যেখানে আমরা চতূর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রকৃত চিত্র দেখতে পাই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) থেকে মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজ, রোবোটিক অ্যাপ্লিকেশনের প্রয়োগ দেখছি। একই সঙ্গে আমার জন্ম বাংলাদেশে এবং এটি একটি অগ্রসরমান দেশ যা এখন মধ্য আয়ের দেশের পথে হাঁটছে সে দেশটির এখন প্রয়োজন দক্ষতাভিত্তিক জনশক্তি। এ অবস্থায় কেবল বাংলাদেশের সঙ্গেই নয়, অন্যান্য অগ্রসরমান দেশগুলোর সঙ্গে উন্নত দেশগুলোর যে ফারাক তা কমিয়ে আনতেই কোডার্সট্রাস্টের জন্ম। বিশ্বজুড়ে জনশক্তির মাঝে ব্যবহারিক আইসিটি দক্ষতা সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য।
আমরা বিশ্বকে আইটি দক্ষতার একটি আনুভূমিক সমতল ভূমিতে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করছি, বলেন আজিজ আহমদ।
থট লিডার অব ফিউচার অব ওয়ার্ক বা কাজের ভবিষ্যত বিষয়ে চিন্তক হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে খ্যাতি রয়েছে আজিজ আহমদের।
তিনি বলেন, "আজ কেউ একটি লোগো তৈরি করে ৫ ডলার আয় করতে পারে, এই আয় একসময় ৫০ ডলার থেকে ৫০০ ডলার হয়ে যাবে। যে সব যুবকের একটি যথার্থ কাজ নেই- বেকার কিংবা যে কাজটি করছে তা তার যোগ্যতার চেয়ে অনেক নিচের তাদের জন্য এমন একটি স্কিল-সেট অত্যন্ত উপযোগী।"
বাংলাদেশ সরকার দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলছে, এজন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আজিজ আহমদ বলেন, সরকার ব্রডব্যান্ড প্রযুক্তির ব্যবহার করছে, যুবকদের আইসিটিতে শিক্ষিত করে তুলতে তহবিল সরবরাহ করছে যা কোডার্সট্রাস্টের মূল্যবোধ, মিশন, ভিশনের সঙ্গেও সাযুজ্যপূর্ণ।
বক্তব্যে বেশকিছু পরিসংখ্যানও তুলে ধরেন আজিজ আহমদ। তিনি বলেন, আজ যে শিশুরা প্রাথমিক কিংবা এলিমেন্টারি স্কুলে যাচ্ছে তারা যখন কাজের জগতে ঢুকবে তখন বর্তমানে যেসব কাজ রয়েছে তার ৬৫ শতাংশেরই কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। এখন যারা কাজের জগতে রয়েছে তাদের ৫০ শতাংশকেই নতুন কোনো কর্মদক্ষতা অর্জন করতে হবে। এটাই বিশ্বের চিত্র। বাংলাদেশ কিংবা যুক্তরাষ্ট্র কারো জন্যই এই পরিস্থিতি থেকে ভিন্ন কিছু নয়।
এছাড়াও বর্তমানে ৬৯ শতাংশ নিয়োগকর্তা তাদের কর্মীদের সঠিক কর্মদক্ষতার অভাবের সাথে লড়াই করে যাচ্ছেন। আর ২০২৫ সালের মধ্যে বিশ্বে নতুন ৯৭ মিলিয়ন কাজ সৃষ্টি হবে যা পরিচালিত হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক কিংবা অটোমেশন টেকনোলজি দিয়ে। কিন্তু এর পাশাপাশি ৮৫ মিলিয়ন মানুষ তাদের কাজ হারাবেন। প্রযুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয় এমন কাজগুলো কর্মজগত থেকেই হারিয়ে যাবে।
আজিজ আহমদ বলেন, এখানেই আমরা কোডার্সট্রাস্টের পক্ষ থেকে বর্তমানের প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অতি উচ্চ দক্ষতার মধ্যে একটা সম্পর্ক স্থাপনে কাজ করছি। তিনি আরও জানান, আজ যারা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাচ্ছে, তারা তাদের প্রথম বর্ষে যেসব প্রযুক্তির কথা জানতে পারছে সেগুলো তাদের তৃতীয় কিংবা চতূর্থ বর্ষে এসে আর কাজ করবে না, তাদের সম্পূর্ণ নতুন দক্ষতা অর্জন করতে হবে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই এখন ১০ মিলিয়ন স্কিল গ্যাপে রয়েছে।
"কোডার্সট্রাস্ট এখানে কি করছে? ধন্যবাদ ইন্টারনেটকে। কারণ ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিশ্ব এখন খুব কাছাকাছি, সুসমন্বিত, আন্তঃসংযুক্ত। কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ, কোডার্সট্রাস্ট ইউএসএ কিংবা কোডার্সট্রাস্ট ইউরোপ সবগুলোই পরষ্পর পরষ্পরের সঙ্গে যুক্ত। এবং একসঙ্গেই আমরা বিশ্ব যে আজ সমস্যার মুখোমুখি তা সমাধানে কাজ করছি। সেক্ষেত্রে যেসব যুবক ভীষণভাবে আন্ডার এমপ্লয়েড ও আনপ্রিভিলেজড তাদের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে জরুরি।"
আমরা তাদের এই সময়ের দক্ষতা যেমন দিচ্ছি, তেমনি তাদের সামনের দিনের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতার দিকেও ধাবিত করছি। তারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, সাইবার সিকিউরিটির অ্যাডভান্সড কোর্সগুলো, ডিপ প্রোগ্রামিং শিখছে। এগুলোও কোডার্সট্রাস্টের কারিকুলামের মধ্যে রয়েছে এবং আমরা এখাতে বিনিয়োগ করছি। এবং প্রায় প্রতিমাসেই এমন কর্মসূচি নিচ্ছি।
ঘানায় কোডার্সট্রাস্টের একটি আসন্ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে আজিজ আহমদ বলেন, সেদেশে ১.৫ মিলিয়ন শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে যাতে তারা গ্লোবাল মার্কেটে কাজ পেতে পারে। এমন অনেক উদাহরণই কোডার্সট্রাস্ট সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে।
"আমরা সমস্যা পর্যবেক্ষণ করি, সমস্যাটি বুঝে নেই এবং সেই সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদ্ধতি তৈরি করি, এটাই কোডার্সট্রাস্টের কাজের ধরন," বলেন আজিজ আহমদ।
তিনি আরও বলেন, আমরা কোডার্সট্রাস্টের প্রশিক্ষকদের প্রশিক্ষক কিংবা শিক্ষক বলি না, আমরা তাদের বলি মেন্টর। তারা প্রশিক্ষণার্থীদের হাত ধরে এই দক্ষতার জ্ঞান তাদের মধ্যে দিয়ে দেন। একই সঙ্গে বিশ্ব পর্যায়ে নিয়োগকর্তদের সামনে কিভাবে নিজেদের উপস্থাপন করবে, কিভাবে যোগাযোগ করবে সেটিও আমরা তাদের শিখিয়ে দেই। বিশেষ করে ইংরেজিতে যোগাযোগ দক্ষতার জন্য আমরা তাদের ইংরেজি শেখাই। কারণ এই দক্ষতাগুলোও আমাদের গ্রাজুয়েটদের সাফল্যের অংশ।
কমিউনিকেশন স্কিল, ডিজাইন স্কিল, সোশ্যাল স্কিল এগুলোও আমাদের প্রোগ্রামের মধ্যে রয়েছে, বলেন আজিজ আহমদ।
জেমস গার্ডিনার কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের তারুণ্যের মাঝে আইটি দক্ষতা উন্নয়নে যে ভূমিকা রাখছে তার প্রশংসা করেন এবং এর প্রতিষ্ঠাতা আজিজ আহমদকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এখন সবচেয়ে জরুরি হচ্ছে বিশ্ব আজ যে চ্যালেঞ্জগুলো মুখোমুখি সেগুলো বুঝে নেও। আর তার সমাধান খুঁজে বের করা ও সুযোগ সৃষ্টি করা। আর এই সুযোগ সৃষ্টিতে কোডার্সট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কাজ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস।
জেমস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের দেশ, অভিবাসীদের দিযে গড়ে ওঠা দেশ। আর এই দেশের প্রধানতম ভিতটিই হচ্ছে এর শিক্ষা ব্যবস্থা। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার্থে ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ভিসা অনুমোদন করেছে। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ৯০০০ নতুন শিক্ষার্থী পড়ার সুযোগ পেয়েছে এই শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরে একেকজন উদ্যোক্তা হতে পারবে, কর্পোরেটগুলো উচ্চপদে কাজ করতে পারবে। যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১৪তম বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এবং বলেন বাংলাদেশ বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। সেই হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রেও বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম হতে পারে।
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে গবেষণা বিনিময় কর্মসূচির কথা জানিয়ে জেমস গার্ডিনার বলেন, ফুলব্রাইট রিসার্চ এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা বাংলাদেশে আর বাংলাদেশের গবেষকরা যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করছেন। এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার পাঠক্রমে পরিবর্তন আসবে, অনেক সমস্যারও সমাধান আসবে, যোগ করেন তিনি। বর্তমানে স্টেম এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের আওতায় ২০০০ বাংলাদেশি যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে জানিয়ে জেমস বলেন, আমরা যখন সামনের দিকে তাকাই আমরা দেখতে পাই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত নিয়েই চ্যালেঞ্জটা বেশি। এর উত্তরণে এমন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ এর মধ্য দিয়েই অর্জিত হবে দক্ষতা।
জেমস বলেন, এসব সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে কোডার্সট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস কাজ করতে পারে। গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, উবার-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর এখন বাংলাদেশে তাদের কার্যালয় খুলেছে কারণ বাংলাদেশ একটি বৃহৎ মার্কেট। এখানে তরুণ-তরুণীদের কিছু দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিতে পারলেই তারা সেই দক্ষতার ভিত্তিতে ব্যবসা গড়ে তুলতে পারবে।
এই বিশেষ সুযোগ সৃষ্টিতে সরকার ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতেও কোডার্সট্রাস্ট ও দূতাবাস একসঙ্গে কাজ করতে পারে, মত দেন জেমস গার্ডিনার। উদ্যোক্তাদের জন্য একটি কার্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ এমনটা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তথ্যের প্রবাহ ও একই সঙ্গে তার সুরক্ষার জন্য ক্লাউড টেকনোলজি, ড্যাটা প্রোটেকশন রেজিমেন্ট জরুরি। আর এ ক্ষেত্রেও আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।
এনআই খান তার আলোচনায় প্রতিবছর যে হারে মানুষ উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে তার তুলনায় কর্মসংস্থানের সুযোগ অনেক কম বলে উল্লেখ করেন। এবং বলেন, এ ক্ষেত্রে আইটি প্রশিক্ষণই একমাত্র তাদের কর্মজগতে নিয়ে আসতে পারবে। ডিজিটাল সেন্টার, হাইটেক পার্কসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ জরুরি। কোডার্সট্রাস্ট এক্ষেত্রে একটি অনন্য ভূমিকা পালন করছে বলেও উল্লেখ করেন সাবেক এই শিক্ষা সচিব ও এটুআই কর্মসূচির সাবেক প্রধান। কোভিড-১৯ এর গোড়ার দিকে দেশের ১০ হাজার শিক্ষককে বিনামূল্যে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার প্রশিক্ষণ দিয়েছে কোডার্সট্রাস্ট, সেকথা উল্লেখ করে এনআই খান বলেন, একা কোডার্সট্রাস্ট নয়, আমাদের এমন প্রতিষ্ঠান আরও প্রয়োজন। স্কুল থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য কোডার্সট্রাস্ট প্রশিক্ষণ কর্মসূচি নিতে পারে যাতে তারা শিখতে ও আয় করতে পারে এবং একটি ভালো জীবন পেতে পারে, প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এনআই খান।
আইটি খাতে প্রশিক্ষিত হয়ে ফ্রিল্যান্সিংয়ের পথ ধরে ধীরে ধীরে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশের তরুণরা, এমন মত দিয়ে তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে উচ্চ আয় নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।
আবদুল করিম তার বক্তব্যে বাংলাদেশি ছেলে-মেয়েদের অত্যন্ত মেধাবী বলে উল্লেখ করে বলেন এ অবস্থায় তাদের যদি কোনো বিশেষ দক্ষতা দেওয়া যায় তাহলে তারা বিষ্ময় সৃষ্টি করতে পারবে।
আইটি দক্ষতার পাশাপাশি যোগাযোগ দক্ষতা ও ইংরেজি ভাষার দক্ষতার ওপরও জোর দেন সাবেক এই মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষা সকলের জন্য নয়। যারা গবেষণা করবে তারাই উচ্চশিক্ষায় যাবে কিন্তু যাদের সেটা প্রয়োজন নেই তারা সরাসরি কোনো একটি দক্ষতা নিয়েই পারে কর্মজগতে ঢুকতে।
দেশে কোডার্সট্রাস্ট প্রতিবছর হাজার হাজার তরুণ তরুণীকে আইসিটি প্রশিক্ষক দিচ্ছে, কিন্তু চতূর্থ শিল্প বিপ্লবের এই সময়ে আমারদের এমন প্রশিক্ষণ আরও প্রয়োজন। বাংলাদেশ যখন মধ্য আয়ের দেশ হয়ে উঠছে, এসডিজি অর্জনে সচেষ্ট, বিশ বছরের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে, স্বাধীনতার ১০০ বছরে ২০৭১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হতে চাইছে এমন সময় আমাদের তারুণ্যের জন্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষণই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।
সামাজিক দায়বদ্ধতার ফান্ডগুলো এখন এমন দক্ষতাউন্নয়ন ভিত্তিক উদ্যোগগুলোতে কাজে লাগানো উচিত বলেও মত দেন তিনি। কোডার্সট্রাস্টের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে এই ফান্ড চ্যানেলাইজ করা উচিত, বলে মত দেন আবদুল করিম।
মোহাম্মদ কায়কোবাদ কর্মজগতে প্রবেশের আগেই দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বলেন, একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে আমাদের তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনশক্তি বাড়ানোই হবে সবচেয়ে কার্যকর পথ। তিনি বলেন, আমাদের গ্রাজুয়েটসরা এখন গুগল, মাইক্রোসফট, ফেসবুক, টুইটারে কাজ করছে। তবে এই সুযোগ আরও বাড়াতে হবে।
আমাদের পদ্মাসেতু, কর্ণফুলী টানেল, রূপপুর পরমানু বিদ্যুতের মতো মেগা প্রকল্প রয়েছে। কিন্তু এগুলো কার্যকর ব্যবহারে কম্পিউটারাইজড পদ্ধতির প্রয়োগ প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত নই এমনটা হচ্ছে কি না। আমরা যদি সত্যিই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই আর আমাদের কম্পিউটার অ্যাকসেসরিজ, সফটওয়ার কিনে আনতে হয় বিদেশ থেকে, তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্ভব হবে না। আর আমাদের তরুণদের আইটি প্রশিক্ষত করাটাই এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে জরুরি। তাদের মেধা রয়েছে, তাদের ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে, বলেন অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
ক্যাপ্টেইন ক্রেইগ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, কোডার্সট্রাস্টের মডেল অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইয়ে সেখানকার ক্রমবর্ধমান কমিউনিটিতে বিশেষ করে নারীদের ও তরুণদের প্রশিক্ষিত করা হচ্ছে।
ডেইজি গ্যালাগার বলেন, কোডার্সট্রাস্ট তরুণদের ও নারীদের মধ্যে প্রযুক্তি দক্ষতা বাড়াতে যে কাজ করে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।

আরও পড়ুন
- বুধ, শনি ও চাঁদ ত্রিভুজ হয়ে দেখা দেবে রাতের আকাশে
- কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ৫ ভয়ংকর দিক
- ফ্রিল্যান্সার ফাহিম ছিলেন আমাদের বিস্ময়, আমাদের অনুপ্রেরণা
- জীবন বাঁচাতেও সাহায্য করে মোবাইল, জানা আছে কি?
- কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের উদ্যোগে
ফ্রিল্যান্সিং প্রতিযোগিতায় ১০০০০০ টাকার প্রাইজমানি জিতলেন ফাতেমা মোস্তারী - বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট, নতুন সম্ভাবনা
- কী আছে বাজারে আসা নতুন আইফোনে!
- ওয়ানপ্লাস ছাড়লেন সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্ল পেই
- একচেটিয়া ব্যবসা ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ
অ্যামাজন-অ্যাপল-ফেসবুক-গুগলের বিরুদ্ধে ৪৪৯ পৃষ্ঠার রিপোর্ট - চাঁদে যাচ্ছে চীনের চ্যাং-৫