শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কণ্ঠহীনদের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে আসাল, ১৬তম কনভেনশনে বললেন বক্তারা

বিশেষ সংবাদদাতা

২৩:২৩, ৫ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ০২:০৩, ৬ ডিসেম্বর ২০২৩

১১৩৭

কণ্ঠহীনদের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে আসাল, ১৬তম কনভেনশনে বললেন বক্তারা

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশীয়দের গন্ডি পেরিয়ে গোটা এশিয়া তথা গোটা মাইগ্র্যান্ট কমিউনিটির কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে আসাল- অ্যালায়ান্স অব সাউথ এশিয়ান আমেরিকান লেবার। আসাল এখন কণ্ঠহীনদের কণ্ঠস্বর।  এমনটাই বলছিলেন বক্তারা। আসাল এর ১৬তম বার্ষিক কনভেনশন হচ্ছিলো নিউইয়র্কের ব্রুকলিনের একটি হোটেলের হলরুমে। নিউইয়র্ক, নিউজার্সি, জর্জিয়া, মিশিগান, মেরিল্যান্ড, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়া, ফ্লোরিডা, লসএঞ্জেলস ওয়াশিংটন ডিসি থেকে আসালের ২০টি চ্যাপ্টারের শত শত নেতাকর্মী যোগ দেন এই সম্মিলনীতে। কেবল নেতা-কর্মীই নয় তাদের পরিবারের সদস্যদের অংশগ্রহণে এক মিলনমেলায় পরিণত হয় এই সমাবেশ। যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণএশীয়দের প্রাণের সংগঠন হয়ে উঠেছে এই আসাল। যা ফুটে ওঠে বক্তাদের কথায় আর তাদের অংশগ্রহণে।

আসাল'র শীর্ষ নেতৃত্বে রয়েছেন এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মাফ মেজবাহ উদ্দিন। যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম আন্দোলনে এক অপরিহার্য এবং অতিপরিচিত নাম। ন্যাশনাল সেক্রেটারি মোহামেদ করিম চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র নিম্ন আয়ের মানুষদের তথা নব্য ইমিগ্র্যান্টদের কাজের সুযোগ তৈরিতে এক নিরলস যোদ্ধা হিসেবে যার সুনাম রয়েছে। সম্প্রতি নিউইয়র্কের স্ট্যাটানআয়ল্ডের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের তালিকায় উঠে এসেছে তার নাম। এই দুই শীর্ষ নেতৃত্ব ছাড়াও অন্যান্য নেতৃত্বের আত্মনিয়োজনে আসাল প্রতিনিয়ত সংগঠিত করে যাচ্ছে আরও নতুন নতুন কমিউনিটিকে।  

মাফ মেসবাহ উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় এগিয়ে যায় কনভেনশন ২০২৩। দুপুর ২টায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে এই সম্মেলন। উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন আসালের এবারের কনভেনশন কমিটির চেয়ারম্যান ড. গোলাম এম আই চৌধুরী।

উই আর গ্রোয়িং উই আর গ্রোয়িং এই স্লোগানই বার বার উচ্চারিত হচ্ছিলো আসালের ১৬তম কনভেনশনে। বক্তারা তাদের শুরুর দিকের অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে বর্তমানে আসাল তাদের কতটা অনুপ্রেরণা কতটা শক্তির উৎস হয়ে উঠেছে তা তুলে ধরছিলেন। 

তবে আসালের শ্রেষ্ঠত্বের বাণি সবচেয়ে প্রণিধানযোগ্য হয়ে উঠেছে এই কনভেনশনের কি নোট স্পিকারের কণ্ঠ থেকে। তিনি ছিলেন স্বয়ং সেনেটর ক্রিস্টেন জিলিব্র্যান্ড। যুক্তরাষ্ট্রে শ্রম পরিবেশ উন্নয়ন, শ্রমিকের ন্যয্য মজুরি আদায়ের লড়াইয়ে আসালের অবদান তুলে ধরেন তিনি। আর আসালকে ধন্যবাদ জানান অধিকার আদায়ের সংগ্রামে জনপ্রতিনিধিদের পাশে থাকার জন্য। 

"দক্ষিণ এশীয় আমেরিকান শ্রমজীবিরা আমাদের কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ কণ্ঠস্বর এবং নিউইয়র্কের বহুজাতিক কর্মশক্তি গঠনে আসাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে," বলেন জিলিব্র্যান্ড।  

যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবাসীদের পরিশ্রমী ও পরিবার বান্ধব বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কমিউনিটি আমেরিকান সোসাইটিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। মূলধারার রাজনীতিতেও দক্ষিণ এশীয়রা শক্তিশালী অবস্থান গড়ে তুলছে। নিজেদের কণ্ঠস্বরকে আরও শক্তিশালী করতে কমিউনিটির সবাই ভোটার হওয়া ও ভোট দেবার জন্যও আহবান জানান সিনেটর জিলিব্র্যান্ড।

কনভেনশনে সরাসরি উপস্থিত থাকতে না পেরে বাণি পাঠান নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস। নিউইয়র্কের ৫টি বোরোতে দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটিকে গতিশীল করে তুলতে ও তাদের ভাগ্যের উন্নয়নে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আসাল নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। মেয়রের পক্ষ থেকে এবারের সম্মেলনে সাইটেশন দেওয়া হয় আসালের দুইজন নেতৃত্বকে। এরা হচ্ছেন আসালের ন্যাশনাল সেক্রেটারি মোহামেদ করিম চৌধুরী ও ব্রুকলিন চ্যাপটারের পলিটিকাল ডাইরেক্টর নেতা মো. আজিজুল হক। 

নিউইয়র্কের গভর্নর ক্যাথি হোকুল, নিউজার্সির গভর্নর ফিলিপ ডি. মারফি, সেনেটর চার্লস ই. শুমার, সেনেটর ক্রিস্টেন জিলিব্র্যান্ড, স্টেট কম্পট্রোলার থমাস পি. ডিনাপোলি, অ্যাটর্নি জেনারেল লেটিশিয়া জেমস, স্টেট সিনেটর আন্দ্রিয়া স্টুয়ার্ট কাজিনস, স্পিকার কার্ল ই হিস্টি, কংগ্রেসম্যান হাকিম জেফরি এই কনভেনশনে তাদের বাণি পাঠান। 

উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড.নুরুন্নবী, সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড এ. ল্যান্ডার, জর্জিয়ার স্টেট সিনেটর শেখ রহমান, নিউইয়র্ক স্টেট সিনেটর জন ল্যু, এসেম্বলিওম্যান কারিনা রেস, এসেম্বলিম্যান রন কিমসহ আরও অনেকে। 

এবারের সম্মেলনে আসালের পক্ষ থেকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয় স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান মাইকেল কিউসিক, নিউইয়র্ক সিটি সেন্ট্রাল লেবার কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ভিনসেন্ট আলভারেজ, টিডব্লিউইউ লোকাল ১০০ এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডেভিস ও জুমা জেনিফার (মরনোত্তর)কে।

কনভেনশনে আসালের প্রতিটি চ্যাপ্টারের নেতা-কর্মীরা তাদের নিজ নিজ নেতৃত্বকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা তুলেছে ধরেন। 

কুইন্স চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কাজি ফরিদ আহমেদ, ব্রঙ্কস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ তাহমিদুল হক, ব্রুকলিন চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ড. মুজিবুর রহমান মজুমদার, স্ট্যাটান আয়ল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ইরাশাদ শেখ, নিউজার্সি চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মো. ফারুক হোসেন, জর্জিয়া চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট আবু লিয়াকত হোসেন, মিশিগান চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মো. আলী রেজা, পেনসিলভানিয়া চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট শাহ এম গোলাম কাদের, নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটাল রিজিয়ন চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান, ইউএস ক্যাপিটাল চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট শারাফাত হোসেন, জ্যাকসন হাইটস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট সোমনাথ ঘিমিরি, ভার্জিনিয়া চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট জাকির হোসেন, মেরিল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট কবিরুল ইসলাম, রিচমন্ড হিল চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট আলবার্ট বাল্ডিও, লং আয়ল্যান্ড চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট এমডি মুজিবুল হক, লস এঞ্জেলস চ্যাপ্টারের প্রেসিডেন্ট ড. রফিক আহমেদ নিজ নিজ চ্যাপ্টারের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবারের সম্মেলনে। 

নিউইয়র্কের আরও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও কেন্দ্রীয় সংগঠনের নেতারা সংহতি জানাতে আসালের এই সম্মেলনে আসেন ও তাদের বক্তব্য রাখেন। এদের মধ্যে আমন্ত্রিত ছিলেন এনএএসিপি'র নিউইয়র্ক সিটি প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি হারমন, এনওয়াইসি লেবার কাউন্সিল ফর ল্যাটিন আমেরিকান অ্যাডভান্সমেন্ট'র এনওয়াইসি প্রেসিডেন্ট পেড্রো এ কার্ডি, এনওয়াইসি কোয়ালিশন অব ব্ল্যাক ট্রেড ইউনিয়নিস্ট এর প্রেসিডেন্ট চার্লস জেনকিনস, পাবলিক এমপ্লয়ি ফেডারেশনেনর ভাইস প্রেসিডেন্ট শ্যারন ডিসিলভা ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ডারলিন উইলিয়ামস, লোকাল ১৯৩০'র প্রেসিডেন্ট ডেবরা উইলিয়ামস। 

আসালের সাফল্য ও আসাল যে দিনে দিনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে আর হয়ে উঠছে কণ্ঠহীনদের কণ্ঠস্বর তা উঠে আসে এসব নেতৃত্বের বক্তব্যে। 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank