শনিবার   ২৭ জুলাই ২০২৪ || ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ || ১৮ মুহররম ১৪৪৬

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

এভারিস্তো: যে ব্রাজিলিয়ানকে সমান ভালোবাসে রিয়াল-বার্সা

আতিক উল্লাহ

১৭:৩৭, ১৪ জানুয়ারি ২০২১

আপডেট: ০৮:৪৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২১

৩১৮০

এভারিস্তো: যে ব্রাজিলিয়ানকে সমান ভালোবাসে রিয়াল-বার্সা

ফুটবল বিশ্বে দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার দ্বৈরথ তো সবার জানা। ক্রিকেটে ভারত-পাকিস্তান যেমন ফুটবলে ‘এল ক্লাসিকো’ তারচেয়ে বেশি রোমাঞ্চকর। বিশ্বে ২০০ কোটি মানুষ সরাসরি দেখে দু’দলের খেলা। মাঠের পাশাপাশি বাইরেও চলে সমান লড়াই। ভালো ফুটবলার পেলে যেমন কাড়াকিাড়ি চলে তেমনি ফুটবলার বিক্রির সময়ও দেখা যায় শত্রুতা। খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়া ফুটবলারকেও বিক্রি করেনা চরম শত্রুর কাছে। 

তবে পর্তুগালের লুইস ফিগো কিংবা ব্রাজিলের রোনালদো ঠিকই খেলেছেন দুই ক্লাবে। কিন্তু বার্সা ছেড়ে রিয়ালে যোগ দেয়ায় দুয়ো শুনতে হতো দুজনকেই । ফিগোকে তো বার্সা সমর্থকরা ’বিশ্বাসঘাতক’ ই বলতো। তবে ইতিহাসে এমন ফুটবলার আছেন যিনি খেলেছেন দুই ক্লাবেই, অথচ তাকে সমানতালেই ভালোবাসে ক্লাবদ্বয়!

এই কিংবদন্তী ফুটবলারের নাম এভারিস্তো দে ম্যাসিডো ফিলোহো। বার্সার ইতিহাসে প্রথম ব্রাজিলিয়ান স্টাইকারের গোলসংখ্যা রোনাল্দো কিংবা রোমারিও’র চেয়ে বেশি। ম্যাচ প্রতি গোল হারে এগিয়ে আছেন নেইমার এবং রিভালদো থেকেও। তার নৈপুণ্যেই প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান কাপ থেকে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় করে বার্সেলোনা। কিন্তু পাঁচ বছর বার্সায় কাটানোর পর সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। জেনে নেয়া যাক এভারিস্তোকে দু’ক্লাবের ভালোবাসার গল্প। 
 
শৈশব ও স্বপ্নের ক্লাব ফ্ল্যামিঙ্গো

বর্তমানে ৮৭ বছর বয়সি এভারিস্তোর জন্ম রিও ডি জেনিরো’র উত্তরাঞ্চলের ছোট্ট এক গ্রামে। যেখানে বন্ধুদের সাথে মজা করেই রাস্তায় ফুটবল খেলতেন তিনি। কিন্তু দৃশ্যপট পাল্টে যায় মাদুরেইরা নামক ক্লাবে বন্ধুর ট্রায়াল দেখতে গেলে। 

এসময় অনেকটা জোর করেই ট্রায়ালে এভারিস্তোকেও ঢুকিয়ে দেয় স্থানীয় কোচরা। তার বুট জোড়াও দেয়া হয় ক্লাব থেকেই, যা পায়ের মাপ থেকে কিছুটা ছোট ছিল। কিন্তু এমন আঁটসাঁট জুতা নিয়েও কোচদের মুগ্ধ করেন ১৭ বছর বয়সি এভারিস্কো। খেলা দেখে তাকে পরেরদিন আবারও আসতে বলা হয়। 

এক পর্যায়ে এভারিস্তোকে মূল দলে নিয়ে নেয় মাদারেইরা। যেখানে ৩৫ ম্যাচ খেলে ১৮ গোল করেন এই স্ট্রাইকার। তখনকার ব্রাজিল জাতীয় দলের গোলকিপার চাস্তিলহোর বিপক্ষে মারাকানা স্টেডিয়ামে করা একটি গোলও ছিল। 

অপেশাদার হিসেবে মাদারেইরাতে খেলা এভারিস্তো ডাক পেয়ে যান ১৯৫২ সালের হেলসিংকি অলিম্পিকে। কোয়ার্টার ফাইনালে অভিজ্ঞ জার্মানির বিপক্ষে হেরে বিদায় নেয়ার আগে তিন ম্যাচে ৯ গোল করে ব্রাজিল। 

তারপরই নিজের পছন্দের ক্লাব ফ্লামেঙ্গো’র হয়ে খেলতে ডাক পড়ে তার। যেখানে একই সাথে যোগ দেয় পরবর্তীতে ব্রাজিলের হয়ে দু’বার বিশ্বকাপ জেতা ভাভা ও জোজিমো। তিন বছর এই ক্লাবে খেলে দলকে তিনবারই চ্যাম্পিয়ন করেন রিও স্টেট চ্যাম্পিয়নশিপে। 

বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এভারিস্তো জানান, “ফ্ল্যামেঙ্গো সবসময় আমার স্বপ্নের ক্লাব ছিল। ছোটবেলা থেকেই দলটির খেলা দেখে বড় হয়েছি। তাই হৃদয়ে শুধু এই ক্লাবকেই ধারণ করেছি। আমাকে ভাস্কো দ্য গামা ও ফ্লুমিনেন্সের হয়েও খেলতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আমি ফ্ল্যামেঙ্গোতে সন্তুষ্ট ছিলাম”। 

ফ্ল্যামেঙ্গোর হয়ে ১৯১ ম্যাচ খেলে ১০৩ গোল করেন এই স্ট্রাইকার। দলটির অনেক রেকর্ডে এখনও আছে এভারিস্তোর নাম। মারাকানার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জয় ফ্ল্যামেঙ্গোর। ১২-২ ব্যাবধানে সাও ক্রিসতোভাকে হারানোর দিনে গোল করে এভারিস্তোও। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় জয়েও আছে তার নাম। ১৯৫৭ সালে দক্ষিণ আমেরিকান চ্যাম্পিয়নশিপে (বর্তমানে কোপা আমেরিকা) কলম্বিয়াকে ৯-০ গোলে হারায় তার দল। 

এভারিস্তোর বার্সা জীবন

১৯৫৮ বিশ্বকাপ বাছাাইপর্ব খেলার সময়ই ফ্লামেঙ্গো ছাড়েন এভারিস্তো। এসময় বার্সা তাদের দলকে পূনর্গঠনের কাজ করছিল। নতুন এক স্ট্রাইকারের সন্ধানে তখনকার বার্সার টেকনিক্যাল সেক্রেটারি জোসেফ সামিটিয়ের যান দক্ষিণ আমেরিকায়। সেসময় এভারিস্তোকে দলে নিতে এক ইতালিয়ান ক্লাবও উঠেপড়ে লাগে। কিন্তু এভারিস্তোর বাবাকে সামিটিয়ের এমন অঙ্কের প্রস্তাব দেন যা ফিরিয়ে দেয়া ছিল এককথায় অসম্ভব। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমগুলোর মতে, এভারিস্কোর বাৎসরিক বেতন ধরা হয় ৬ হাজার ইউরো। বর্তমানের হিসেবে যে সংখ্যা হবে ১ লাখ ৪০ হাজার ইউরো!   

নিজের বার্সা জীবন সম্পর্কে এভারিস্তো জানান, “বার্সেলোনায় আমার জীবন ছিল অসাধারণ। কোন সমস্যা আমাকে এখানে মোকাবেলা করতে হয়নি। বার্সায় আমাকে বাড়ি, মার্সেডিজ গাড়িসহ সবকিছু দেয়। ক্লাব আমাকে শতভাগ বিশ্বাস করতো। এটা ছিল চমৎকার এক অনুভূতি”। 


১৯৫৭ সালে বার্সার হয়ে খেলা প্রথম ম্যাচেই গোল করেন এভারিস্তো। ছয় মাস পরেই প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ন্যু ক্যাম্পে হ্যাট্রিক করেন তিনি। আর পরের মৌসুমেই গড়েন একই কীর্তি। যার মাহাত্ম ছিল অনেক বেশি। এভারিস্তোর তিন গোলেই রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে ছয় বছর পর লা লিগার শিরোপা ঘরে তোলে বার্সেলোনা। 

সে ম্যাচে তার পারফরম্যান্স নিয়ে স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম হোজা ডেল লুনস এ লেখা হয়, ‘এভারিস্কোর পায়ে যেন আঠা দিয়ে বল লাগিয়ে দেয়া হয়েছে’।

বার্সেলোনার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তার সম্পর্কে লেখা হয়েছে, “বিদেশি ফুটবলার দলে নেয়ার ইতিহাসে অন্যতম সেরা সাইনিং। ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৌন্দর্যের পাশাপাশি গোলমুখে ভয়ঙ্কর এক স্ট্রাইকার। দু’পায়ে গোল করতে যিনি সমান পারদর্শী্। এছাড়া তীব্র গতির কারণে এভারিস্তো হয়ে ওঠেন বার্সার তখনকার ইতিহাসে সেরা ফুটবলার”। 

বার্সায় এভারিস্তোদের কোচ ছিলেন হেলেনিও হ্যারেরা। এসময় রাজলো কোবালা ও লুইস সুয়ারেজের সাথে আক্রমণভাগে খেলে দুটি লা লিগা, একটি কোপা ডেল রে, দুটি ফেয়ারস কাপ (বর্তমান ইউরোপা কাপ) জেতেন এভারিস্তো। বার্সার হয়ে ১৫১ প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে তার গোল ছিল ১০৫ আর প্রীতিম্যাচসহ ২৩৭ ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ১৮১।  

এভারিস্তো প্রসঙ্গে রিভালেদো বলেন, “বার্সার হয়ে আমার থেকে বেশি গোল করেন তিনি। যদিও অফিসিয়াল ম্যাচে আমার গোল বেশি। ১৯৯৭ সালে যখন বার্সায় খেলতে যাই তখন সবার কাছে এভারিস্তো এভারিস্তো শুনি। ফুটবলারদের লকার রুমেও ছিল তার ছবি”। 
 
প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হোক বা প্রীতি সব মিলিয়ে ম্যাচপ্রতি গোলের হারে এখনও বার্সার সেরা ব্রাজিলিয়ান গোল স্কোরার এভারিস্তো।  

১৯৬০ সালে ২৩ নভেম্বর ইউরোপিয়ান কাপের দ্বিতীয় লেগে রিয়ালের বিপক্ষে ড্র করে বার্সা। ম্যাচ শেষ হওয়ার ৮ মিনিট আগে এক অসাধারণ হেডে গোল করেন এভারিস্তো। ন্যু ক্যাম্পে থাকা ১ লাখ ২০ হাজার দর্শক তখন একযোগে লাফিয়ে ওঠেন। তার এক গোলেই রিয়াল মাদ্রিদকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় দেয় বার্সা। 

এই ম্যাচ প্রসঙ্গে এভারিস্তো বলেন, “দু’দলের লড়াই তখনও ছিল সমান প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ। কারণ মাদ্রিদ ছিল রাজধানী আর বার্সেলোনা স্বাধীনতা চাইতো। মাদ্রিদকে তখন জেনারেল ফ্রাঙ্কোর (স্পেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী) দলও বলা হতো। আমার গোল তখন রিয়ালের কর্তৃত্ব খর্ব করে দেয়। দ্বৈরথের কারণে আমি তখন শিরোপা জেতার স্বাদ পাচ্ছিলাম। ম্যাচের পর আমরা পাগলাটে উদযাপন করি”। 

এ ম্যাচ নিয়ে লেখক সিড লোওয়ে তার ‘লোথিং ইন লা লিগা’ বইতে লিখেন, ম্যাচের পর রিয়াল মাদ্রিদ ফুটবলাররা ইংলিশ রেফারি ও তার সহকারীদের পেটাতে চেয়েছিল। কারণ ম্যাচে রিয়ালের চারটি গোল বাতিল করে দেয়া হয়। 

রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনালে যায় বার্সেলোনা। প্রতিযোগিতায় ৬ গোল করেন এভারিস্তো। কিন্তু ফাইনালে ৩-২ ব্যবধানে পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার কাছে হেরে যায় বার্সা। যা পরিচিত ‘স্কয়ার-পোস্ট ফাইনাল’ নামে। 

ম্যাচটির কথা স্মরণ করে এভারিস্তো বলেন, “ফাইনাল ম্যাচ হারা ছিল হতাশার। কারণ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো সব যোগ্যতা আমাদের ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ম্যাচে গোলপোস্টের রড গুলো ছিল বর্গাকৃতির। ফলে চার-পাঁচবার বল পোস্টে লেগে ফিরে আসে। যদি গোলাকার হতো তবে অবশ্যই বল জালে জড়াতো। তবে বেনফিকাও ছিল শক্ত প্রতিপক্ষ”। 

বার্সা ছেড়ে রিয়াল গমন

বার্সার হয়ে ফাইনাল খেলার পর ১২ মাসের মাথায় সবাইকে চমকে দেন এভারিস্তো। বার্সার সাথে একটি বিষয়ে একমত হতে না পেরে শত্রুশিবির রিয়াল মাদ্রিদে চলে যান এভারিস্তো। কিন্তু লুইস ফিগোকে যেভাবে ‘বিশ্বাসঘাতক’ মনে করা হয় তেমনটা হয়নি এভারিস্তোর ক্ষেত্রে। দলবদলের পরও তাকে সমানভাবে ভালোবেসে গেছে বার্সেলোনা। সব দোষ পড়ে তখনকার ক্লাবের বোর্ড সদস্যদের ঘাড়ে। 

দলবদল নিয়ে এভারিস্তো বিবিসিকে জানান, “বার্সায় আমার জাতীয়তা পরিবর্তন করতে বলে। কারণ আমি স্প্যানিশ জাতীয়তা নিলে আরেকজন বিদেশি ফুটবলার নিতে পারতো ক্লাব (এখনকার মতো তখনও বিদেশি ফুটবলারের নির্দিষ্ট কোটা ছিল)। কিন্তু রিয়ালে আমাকে তেমনটা করতে হতো না। অন্যথা কখনই বার্সা ছাড়তামনা। কারণ বার্সাকেই আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি”। 

বার্সার সাথে তার এটাই প্রথম সমস্যা ছিলনা। ১৯৫৭ সালে যখন তাকে দলে নেয়া হয় তখন বলা হয় ব্রাজিল বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলে তাকে খেলতে বাধা দেয়া হবে না। কিন্তু বার্সা সে প্রতিশ্রুতি রাখেনি। স্পেন ১৯৫৮ বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব পার হতে না পারায় বিশ্বকাপের সময়ে আয়োজন করা হয় স্প্যানিশ কাপ। তাই বাছাইপর্বে ৮ গোল করেও বিশ্বকাপ খেলা হয়নি এভারিস্তোর। 

সেসময়ের স্মৃতিচারণ করে এভারিস্তো বলেন, “বিশ্বকাপ খেলতে না পারা ছিল চরম হাতাশার। আমি রেডিওতে খেলার খোঁজ নিতাম। ফাইনাল ম্যাচের পরদিন বার্সেলোনার ম্যাচ থাকায় আমরা ট্রেনিং করছিলাম। এসময় ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ের কথা শুনে আমি অত্যন্ত আনন্দিত হই। দলে আমার অনেক বন্ধু থাকায় নিজেকে চ্যাম্পিয়ন ভাবছিলাম”। 

এভারিস্তো সম্পর্কে ব্রাজিলিয়ান সাংবাদিক মিল্টন নেভেস বলেন, যদি ১৯৬০ সালের দিকে টেলিভিশন থাকতো তবে বর্তমান রোনালদোর মতই তাকে সম্মান জানানো হতো। 

১৯৫৮ ও ১৯৬২ বিশ্বকাপজয়ী তার সতীর্থ ও ১৯৭০ সালে বিশ্বকাপজয়ী কোচ মারিও জাগোলা তার সম্পর্কে মন্তব্য করেন, এভারিস্তোর মতো ফুটবলার বিশ্বের যে কোন দলে খেলার যোগ্যতা রাখতেন। 

এভারিস্তো যখন বার্সা ছাড়েন তখন ইতালি ও ফ্রান্সে খেলার অফার পান। কিন্তু স্পেনেই থাকতে চাওয়ায় রিয়ালে যোগ দেন তিনি। ইনজুরির কারণে রিয়ালের হয়ে দুই মৌসুমে মাত্র ১৯ ম্যাচ খেলেন এভরিস্তো, এসময় ছয় গোল আসে তার পা থেকে। দুই মৌসুমেই লা লিগা জেতে রিয়াল। এভারিস্তোকে বার্সার মতোই কিংবদন্তী বলে উল্লেখ করা হয় রিয়ালের ওয়েবসাইটে।  

ফ্ল্যামেঙ্গোতে ফেরা, কোচিং ক্যারিয়ার ও শেষ জীবন 

এভারিস্তো সবসময় তার প্রথম পেশাদার ক্লাব ফ্লামেঙ্গোতে ফিরে যেতে চেয়েছিলেন। ১৯৬৫ সালে তার সে আশা পূরণও হয়। মাত্র ৩৩ বছর বয়সে অবসরে যাওয়ার আগে ক্লাবের হয়ে লিগ শিরোপা জেতের এভারিস্তো। 

৩৬ বছর বয়স থেকে কোচিংয়ে নাম লেখান এভারিস্তো। ব্রাজিলের ক্লাব সান্তা ক্রুজ, গ্রেমিও এবং বাহিয়ার হয়ে অসংখ্য কাপ জেতেন তিনি। তার অধীনেই বাহিয়াতে খেলা শুরু করেন দানি আলভেস। 

১৯৮৫ সালের এপ্রিলে তাকে ব্রাজিল দলের দায়িত্বও দেয়া হয়। তবে বিদেশি লিগে খেলা ফুটবলার দলে নিতে না চাওয়া ও বাজে পাফরম্যান্সের কারণে বাদ পড়েন তিনি। পরবর্তীতে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে ইরাকের কোচ হিসেবে ডাগআউটে দাঁড়ান এভারিস্তো। যেখানে তার অধীনে খেলেন সাদ্দাম হোসেনের ছেলে। 

২০০৫ সালে কোচিং থেকেও অবসর নেন এভারিস্তো। তারপর তার সময় কাটছে পরিবারের সাথে আর ফ্ল্যামেঙ্গোর খেলা দেখে।

খেলোয়াড়ি জীবনে টেলিভিশন না থাকায় আর বিশ্বকাপ না খেলায় অতটা জনপ্রিয়তা হয়েতা পাননি এভারিস্তো। তবে রিয়াল ও বার্সায় সমান ভালোবাসা পেয়ে হয়ে আছেন ইতিহাসের অনন্য নজির। 
 
 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank