রোববার   ০৫ মে ২০২৪ || ২২ বৈশাখ ১৪৩১ || ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ গবেষনার সম্ভাবনা উজ্জল: অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

১৫:৪৬, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

২৮৬

জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যৌথ গবেষনার সম্ভাবনা উজ্জল: অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল

জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে আমাদের চিকিৎসা বিজ্ঞানে গবেষনার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশনের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল। সম্প্রতি জাপানের দুটি ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় ওইতা বিশ্ববিদ্যালয় ও এহিমে বিশ্ববিদ্যালয় সফরের অভিজ্ঞতা নিয়ে আলোচনা করতে যেয়ে এই মন্তব্য করেন অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল।

তিনি জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরই দেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানে গুনগতমানসম্পন্ন ও ফলপ্রসূ গবেষনার উপর জোড় দিচ্ছেন। একটা সময় ছিলো যখন বিদেশীদের সাথে আমাদের কোলাবরেশন মানেই ছিলো রোগীদের রক্তের স্যম্পল নিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে বৈজ্ঞানিক জার্নালে আর্টিকেল প্রকাশ করা। এতে দেশের খুব একটা লাভ হয়নি, কারন এতে ডাটার উপর আমাদের নিয়ন্ত্রন যেমন একদিকে কমে যায়, তেমনি অন্যদিকে দেশের ও দেশের মানুষের জন্য সত্যিকারের প্রয়োজনীয় গবেষনা কার্যক্রম পরিচালনার স্বাধীনতাও খর্ব হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সেই সময়টাকে অনেকটাই পিছনে ফেলে এসেছে। কৃষিতেতো বটেই, চিকিৎসা বিজ্ঞানেও আমারা বর্তমান সরকারের উদ্যোগগুলোর কারনে অনেক দুর এগিয়েছি।আমাদের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও ইন্সটিটিউটগুলোর রিসার্চ সক্ষমতা এখন অনেক বেশী। তিনি নিজেও দেশের একাধীক বিশ্ববিদ্যালয় ও ন্যাশনাল ইন্সটিটিউটের সাথে ফ্যাটি লিভার ও লিভার ক্যন্সার চিকিৎসায় হার্বাল ওষুধ নিয়ে গবেষনা করছেন বলে জানান অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল।

এই প্রেক্ষাপটে তার এবারের জাপান সফর খুবই ফলপ্রসূ বলে মন্তব্য করেন তিনি। এই সফরকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে এতে স্বাক্ষর করেন মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ আর ওইতা বিশ্ববিদ্যালযের পক্ষে স্বাক্ষরদানকারী ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির মাননীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর গ্লোবাল এন্ড লোকাল ইনফেকশাস ডিজিজের ডিন অধ্যাপক ডা. নিশিজানো। এই সমঝোতা স্মারকটি স্বক্ষরিত হওয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয় দুটির মধ্যে যৌথ গবেষনার সুযোগ সৃস্টি হবে। ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তার দু’বছর ধরে চলমান গবেষনা সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে, বিশ্ববিদ্যালয়টির কতৃপক্ষের সাথে তার বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল। তিনি বলেন যে ভাইরাল হেপাটাইটিসসহ অন্যান্য যৌথ গবেষনার বিষয়ে ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং তারা একসাথে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।এই আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং রিসার্চার, বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত জাপানী চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর ও ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাকিরূল খান।

উল্লেখ্য অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল ও ডা. আকবর ওইতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে “ওষুধ উদ্ভাবনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত” একটি  বৈজ্ঞানিক সেমিনারেও বক্তব্য রাখেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়টির সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সিনিয়র অধ্যাপকবৃন্দ ও ফ্যাকাল্টি মেম্বাররা যোগ দেন।

এ ছাড়াও অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল জাপানের অপর আরেকটি ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, এহিমে বিশ্ববিদ্যালয়ও সফর করেন। উল্লেখ্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ন্যাসভ্যাক নামক হেপাটাইটিস বি’র নতুন উদ্ভাবিত ওষুধটি নিয়ে বর্তমানে গুরুত্বপূর্ণ গবেষনা পরিচালিত হচ্ছে। এরই মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যাসভ্যাকের একটি ফেজ-২ ক্লিনিকাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে, যেখানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হেপাটাইটিস বি রোগীর ন্যাসভ্যাক দিয়ে চিকিৎসায় এইচ.বি.এস.এজি নেগেটিভ হওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে। এই যৌথ গবেষনার ফলাফল এরই মধ্যে হেপাটোলজি রিসার্চ নামক একটি শীর্ষস্থানীয় বৈজ্ঞানিক জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। এহিমে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. ওইচি হিয়াসার সাথে আলোচনার সময় তারা এ বিষয়ে আরো যৌথ গবেষনা চালিয়ে যেতে সম্মত হন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর ও এহিমে বিশ্ববিদ্যালয়র সহযোগী অধ্যাপক ডা. ওসামু ইয়োশিদা।

উল্লেখ্য ন্যাসভাকের অন্যতম উদ্ভাবক ডা. শেখ মোহাম্মদ ফজলে আকবর আর অন্যদিকে বাংলাদেশে ওষুধটির ফেজ-১, ২ ও ৩ ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলোর প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর ছিলেন অধ্যাপক ডা. স্বপ্নীল। ন্যাসভ্যাব বর্তমানে কিউবাসহ বিশ্বের একাধিক দেশে হেপাটাইটিস বি’র চিকিৎসায় ব্যবহৃত হচ্ছে। বাংলাদেশের ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটি ইতিমধ্যেই ওষুধটির রেসিপি অনুমোদন করেছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের শুরুতে ওষুধটি বাংলাদেশের বাজারে আসবে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বাধিক পঠিত