শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জার্মানির হামবুর্গে বাংলাদেশ সমিতির আনন্দমেলায় প্রবাসীদের ঢল

সৈয়দ মারজান উল হাসান, জার্মানি

১৭:৫০, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২১

৪৬৭

জার্মানির হামবুর্গে বাংলাদেশ সমিতির আনন্দমেলায় প্রবাসীদের ঢল

চারিদিকে জালের মতো জলাশয় বেষ্টিত জার্মানির দ্বিতীয় জনবহুল নগরী হামবুর্গে গ্রীষ্মের বিদায় লগ্নে রোদ-বৃষ্টির তুমুল প্রতিযোগিতা চলে। অনেক সময় রোদের দেখা মেলা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। তেমনই এক সৌভাগ্যময় রোদেলা দুপুরে অনুষ্ঠিত হলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের দিনব্যাপী আনন্দ উৎসব। ৫ সেপ্টেম্বর রবিবার বন্দর নগরীর হামার পার্কে বাংলাদেশ সমিতি এ.ফাও. হামবুর্গের উদ্যোগে আনন্দমেলা ও গ্রীল পার্টির আয়োজন করা হয়।

এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা করোনার কারণে দমবন্ধ পরিবেশে এক প্রকার গৃহবন্দী ছিলেন। মাসের পর মাস একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন। কাছে থেকেও যেন কত দূর! জরুরি প্রয়োজনে দেখা হলেও মাস্কে ঢাকা মুখ। নিরাপদ দূরত্বে ক্ষণিকের সাক্ষাতে মন খুলে কথা বলার তেমন সুযোগ নেই!

করোনার বিধিনিষেধ কিছুটা হালকা হতেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বাংলাদেশ সমিতি এ.ফাও হামবুর্গ এ অচলায়তনের বাধ ভাঙার উদ্যোগ নেয়। সংগঠনটির আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নগরীর প্রাণকেন্দ্রে হামার পার্কের সবুজের বুকে এসে সমবেত হন। নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরদের বাংলা ভাষার কলকাকলিতে দেখে যে কারও মনে হবে এ যেন জার্মানির বুকে আমাদের প্রিয় বাংলাদেশ!

মজাদার নানান রকমের গ্রিল করা খাবারের সঙ্গে গল্প, আড্ডায় জমে ওঠে হামার পার্কের অরণ্যঘেরা সবুজ প্রান্তর। উপস্থিত শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার থিম ছিল বাংলাদেশ। প্রবাসী মা–বাবার সন্তানদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা জার্মানিতে। তাদের অনেকেই বাংলা সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়নি। কেউ কেউ বাংলা ভাষায় ভালো করে কথাও বলতে পারে না। কিন্তু তাদের ধমনিতে মিশে আছে বাংলাদেশের শোণিত-প্রাণ। এমনই ছোট ছোট শিশুর রংপেনসিলের কোমল ছোঁয়ায় উঠে আসে নয়নাভিরাম বাংলাদেশের নানান দৃশ্যপট। নারী-পুরুষদের বিভিন্ন স্পোর্টস ইভেন্ট ছিল টান টান উত্তেজনায় ভরা।

বিপুল করতালি ও ভালোবাসার মাধ্যমে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলাদেশ সমিতি এ.ফাও. এর নবগঠিত কার্যনির্বাহী কমিটিকে।

গল্প-কথায় সময় যে কখন ফুরিয়ে যায়, সেদিকে কারও যেন হুঁশ ছিল না। সুয্যিমামা মাথার ওপর থেকে পশ্চিম দিগন্তে হেলে পড়তে শুরু করেছিল। ততক্ষণে আনন্দমেলার শেষের বাঁশি বাজতে শুরু করেছে।

অনুষ্ঠানের শেষাংশে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘দলমত, জাতি-ধর্ম, পদ-পদবিনির্বিশেষে আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশ সমিতি প্রবাসীদের কল্যাণে তার কাজের ধারা অব্যাহত রাখবে।’

হামবুর্গে বসবাসরত প্রবীণতম বাংলাদেশি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব আলম বলেন, এখানকার প্রবাসীদের সবাইকে একটি মঞ্চে এনে সমবেত করার প্রয়াস নিয়েছে বাংলাদেশ সমিতি। এ ধরনের উদ্যোগের কারণে এই দূরদেশেও বাংলাদেশের সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখা সম্ভব হয়েছে। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক ইসমে আজম, বীর মুক্তিযাদ্ধা আতিকুর রহমান, ফরিদ আলম, আদনান আবদুল হাই, জুলফিকার হায়দার, মাহফুজুল হক, রবিউল হক, মোজ্জাম্মেল ফারুক, মতিউর রহমান মোল্লসহ অনেক প্রবাসী। আনন্দমেলায় প্রায় ২০০ প্রবাসী বাংলাদেশি অংশ নেন।

বাংলাদেশ সমিতি এ.ফাও ১৯৭২ সালের ১লা ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয়। সংগঠনটি জার্মানিতে সরকারিভাবে নিবন্ধিত।

লেখা: সৈয়দ মারজান উল হাসান, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক, বাংলাদেশ সমিতি এ.ফাও হামবুর্গ, জার্মানি

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank