শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

যৌতুক দিতে না পারায় কনে আনতে যায়নি বরপক্ষ

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট

১২:৫৭, ১৪ জুন ২০২১

৪১২

যৌতুক দিতে না পারায় কনে আনতে যায়নি বরপক্ষ

হাতে মেহেদী,পায়ে আলতা,আর বেনারশি শাড়ি পড়ে বধু বেশে সেজে ছিলেন হাবিবা আক্তার সুমি (২০)। সবকিছু ঠিক ছিল, কিন্তু যৌতুকের ৩ লাখ টাকার জন্য বর এলো না।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। হাবিবা আক্তার সুমি উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের পানবাড়ি গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। 

এ ঘটনায় শনিবার (১২ জুন) পাটগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দেয় হাবিবা আক্তার সুমির বাবা হাবিবুর রহমান।

এর আগে হাবিবা আক্তার সুমি ও মহাসিন আলী ভালবেসে পালিয়ে বিয়ে করেন। দরিদ্র পরিবারের মেয়ে হওয়ায় ছেলের ধনাঢ্য পরিবার বিয়ে মেনে নেয়নি। তাই মেয়ের বাড়িতেই দীর্ঘ ৮ মাস ধরে চলে তাদের সংসার। 

চলতি বছরের ২০ মে ছেলে একদিন নিজ বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে ওঠে। পরে ছেলের যৌতুক লোভী পিতা ও পরিবারের কথায় পালিয়ে যায় ছেলে। মারপিট,নির্যাতন করে বের করে দেয়া হয় মেয়েকে।

উপায়ন্তর না পেয়ে ছেলের বাড়ির বারান্দায় বৃষ্টিতে ভিজে একদিন পড়ে থাকে হাবিবা আক্তার সুমি। পুলিশ গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে এলাকাবাসির সালিশ বৈঠকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে ছেলের পরিবার। মেয়ের সুখের কথা ভেবে দরিদ্র পিতা বসতভিটার ৭ শতাংশ জমি বিক্রি করে ছেলের বাবার হাতে দুই লাখ টাকা তুলে দেয়। এরপর পাড়া- প্রতিবেশী, আত্নীয়- স্বজনকে আনুষ্ঠানিক মেয়ে বিদায়ের দিন-তারিখ ঠিক করে দাওয়াত দেয়।

শুক্রবার বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। কিন্তু ছেলের বাবার দাবিকৃত অবশিষ্ট ৩ লাখ টাকা না পাওয়ায় কনেকে নিতে আসেনি বরপক্ষের কেউ।

হাবিবা আক্তার সুমি বলেন, ছেলের পরিবার অনেক টাকা যৌতুক দাবি করে। সালিশি বৈঠকের গন্যমান্য ব্যক্তিগণ ২ লাখ টাকা দিতে বলে। বাবা জমি বিক্রি করে টাকা দেয় তাদেরকে (বরপক্ষ)। তারা টাকা নিয়ে আমার বিয়ের জন্য কোনো শাড়ি, চুরি বা একটি নাকফুলও কিনে নি। পরে আরও ৩ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আমার বাবা দিতে না পারায় বর মহাসিন ও তার পরিবার আমাকে নিতে আসেনি। এ অবস্থায় আমার জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, আমরা খুব চেষ্টা করেছি। কিন্তু তোবারক হোসেন যৌতুকের টাকার জন্য মেয়েটি ঘরে তুলেনি।

বরের পিতা তোবারক হোসেন বলেন, মেয়েকে আনতে ৪ জনকে পাঠাইছিলাম। আমি আনতে যাবনা। বাড়িতে উঠাবোনা। টাকা পয়সার কোনো ঘটনা নাই।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত) হাফিজুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি  ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়েছিল।তিনিআরও বলেন, বরপক্ষ বর্তমানে কনেকে নিবে বলে আমাদেরকে জানিয়েছে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত