শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ || ৬ বৈশাখ ১৪৩১ || ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৬

১৭:৩০, ১২ নভেম্বর ২০২০

আপডেট: ১৮:২৮, ১২ নভেম্বর ২০২০

২৪৫০

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৬

শঙ্কিত পদযাত্রা

ধারাবাহিক আত্মকথা

। খ ম হারূন ।

খ্যাতিমান টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারূন। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্পৃক্ত রয়েছেন দেশের টেলিভিশন এবং মঞ্চের সাথে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্বর্ণময় সময়ে যে কয়েকজন নির্মাতা-প্রযোজকের নাম ছোট পর্দার কল্যাণে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে খ ম হারূন তাদের একজন। দীর্ঘ বর্ণিল ক্যারিয়ারে অসংখ্য উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তিনি। এখনো রয়েছেন সমান সক্রিয়। দেশের গণমাধ্যম জগতের বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের আত্মকথা ‘শংকিত পদযাত্রা’ ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশিত হচ্ছে অপরাজেয় বাংলা’য়।

[পর্ব-৬]

বাংলাদেশ টেলিভিশনে যোগদানের পর প্রথম যে দেশে প্রশিক্ষণের জন্য যাই সে দেশটি ভারত। আবার দিল্লি। যেখানে তিন বছর পড়াশুনা করে এসেছি। সুতরাং রাজধানী দিল্লি আমার অতি পরিচিত শহর। অনেক বন্ধু-বান্ধব তখনো রয়েছে এনএসডি ক্যাম্পাসে। কোর্সটি আইআইএমসি (ইন্ডিয়ান ইন্সটিউট অব মাস কম্যুনিকেশন), দুরদর্শন এবং অল ইন্ডিয়া রেডিও সম্মিলিত ভাবে আয়োজন করলেও এই কোর্সটি ছিলো এআইবিডি (এশিয়া-প্যাসিফিক ইনস্টিটিউট ফর ব্রডকাস্টিং ডেভেলপমেন্ট) এর নিজস্ব চার সপ্তাহের একটি রিজিওনাল কোর্স। বিষয়- অডিয়েন্স রিসার্চ এ্যান্ড প্রগ্রাম ইভাল্যুয়েশন। 

এআইবিডি তার সদস্য দেশগুলির সম্প্রচার মাধ্যমে কর্মরত প্রযোজক, বার্তা সম্পাদক, প্রকৌশলীদের জন্য সারাবছরই বিভিন্ন ধরনের কোর্সের আয়োজন করে। তার মধ্যে রিজিওনাল (সকল সদস্য দেশগুলির জন্য), সাব-রিজিওনাল (একটি অঞ্চলের কয়েকটি দেশের জন্য) এবং ইনকান্ট্রি (শুধুমাত্র একটি দেশের জন্য) কোর্স উল্লেখযোগ্য। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই কোর্সটি রিজিওনাল হওয়াতে সেখানে আমরা এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলি থেকে প্রায় চব্বিশ জন অংশগ্রহন করেছিলাম। 

আমি যেহেতু বিটিভিতে যোগদান করার পর থেকেই অডিয়েন্স রিসার্চের দায়িত্বে ছিলাম সুতরাং মহাপরিচালক এম এ সাঈদ এই কোর্সটির জন্য আমাকেই মনোনীত করে আমার নাম তথ্য মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেন অনুমোদনের জন্য। কিন্তু তখনকার সচিব চাচ্ছিলেন সিনিয়র কাউকে নমিনেশন দিতে। এটা নিয়ে সচিব ও মহাপরিচালকের মধ্যে চিঠি চালাচালি হতে থাকে। 

একদিন আমি বিটিভি ভবনে একটি অনুষ্ঠানের এডিটিং নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। সে সময়ে বিটিভির পরিচালক (প্রশাসন) ছিলেন এম এ মান্নান। একজন সিএসপি কর্মকর্তা। তিনি নিজে আমার রুমে আসেন, রুমে না পেয়ে সরাসরি এডিটিং প্যানেলে চলে আসেন। ভদ্রলোক তখন যথেষ্ট তরুণ। তবে তাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতাম। তিনি আমাকে তার রুমে নিয়ে আসেন তারপর মন্ত্রণালয়ের জিও, দিল্লি যাওয়া-আসার এয়ার টিকিট সহ কিছু কাগজপত্র ধরিয়ে দেন। একদিন পরেই দিল্লি যাবার ফ্লাইট। থাই এয়ারওয়েজ তখন ঢাকা থেকে দিল্লি যেতো সরাসরি।

সে সময়ে আমি যাতে এই কোর্সটি করতে পারি সেজন্য মহাপরিচালক এম এ সাঈদ মন্ত্রণালয়ে অনেকগুলি চিঠি দিয়েছিলেন। তার ভেতর আমার সম্পর্কে একটি প্রশংসাপত্র ছিলো। এম এ সাঈদ বিটিভি থেকে চলে যাবার পর তার পিএ বশীর সাহেব একদিন আমাকে মন্ত্রণালয়ে আমার সম্পর্কে লেখা একটা চিঠির কপি দিয়ে বলেন, ‘হারূন সাব এই চিঠিটা যত্ন করে রাখবেন ভবিষ্যতে কিন্তু কাজে লাগবে।’

সত্যিই চিঠিটা কিন্তু আমার কাজে লেগেছিলো। পিএসসি ও তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে গ্রেডেসন লিস্ট করার সময় ঐ চিঠির ভিত্তিতে আমি সিনয়রিটি পেয়েছিলাম। অথচ সাঈদ সাহেব চলে যাবার আগ পর্যন্ত ঐ চিঠি সম্পর্কে আমি কিছু জানতে পারিনি। অন্যদিকে পরিচালক (প্রশাসন) এমএ মান্নান মন্ত্রণালয় থেকে জিও এনে আমাকে নিজে তা ধরিয়ে দেন, যা আজকাল কল্পনাই করা যায় না। এই মান্নান সাহেবের সাথে আমার আরো কিছু স্মৃতি আছে, যখন তিনি ছিলেন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব, যে সময়ে এম এ সাঈদ ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সে কথা পরবর্তিতে বলা যাবে। এম এ মান্নান বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী। 

আমার বাসা তখন সিদ্ধেশ্বরীতে, বাসার নাম তরুতল। তিনতলায় দুটি ঘর নিয়ে বাসা। একদিক খোলা ছাদ। মাঝে মাঝে মাঝরাতে চোরদের চলাফেরার শব্দ শোনা যায়। বাসায় আমরা দুটি মাত্র মানুষ। এই বাসায় থাকার সময় আমার প্রথম কন্যা কিযীর জন্ম। কিযী সে সময় কয়েক মাসের। আমি দিল্লি চলে গেলে এই বাসায় আমার স্ত্রী ও ছোট্ট শিশুর থাকাটা নিরাপদ নয়। তাই যেদিন দুপুরে আমার দিল্লির ফ্লাইট তার কাছাকাছি সময়ে ওরা ঢাকা-যশোর ফ্লাইটে যশোর হয়ে খুলনা চলে যায়। যাবার আগে জেবু তার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস তার বড় বোনের কাছে রেখে যায়। টিভি সেটটি আরেক বাসায় রাখি। তবে জেবুর বিয়ের সময়ে পাওয়া প্রাইজবন্ড, দামি কাপড়, শাড়ি, অলঙ্কার সব কিছু আলমারিতে রাখা ছিলো। আমার বাসার একটা চাবি আমার সহকর্মী প্রযোজক ফরিদুর রহমানের কাছে দিয়ে যাই। তিনি এই এক মাস এই বাসায় থাকবেন। তাই নিশ্চিত মনে চলে যাই।

৫ সেপ্টেম্বর ১৯৮১, দিল্লি যখন পৌঁছাই তখন প্রায় সন্ধ্যা। সে সময় ফ্যাক্স বা ইমেইল না থাকায় বিদেশের সাথে সব যোগাযোগ হতো টেলেক্সের মাধ্যমে। টেলেক্সে আমার দিল্লী যাবার কনফার্মেশন এআইবিডি কুয়ালালামপুর অফিসে জানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু সে ইনফরমেশন তখনো দিল্লিতে এআইবিডি টিমের কাছে পোঁছেনি। যার ফলে এয়ারপোর্টে আমাকে কেউ রিসিভ করতে আসেনি। আমি দেরি না করে একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে যাই আমার সেই পুরোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এনএসডিতে। হেইলি রোডে অবস্থিত এনএসডি হোস্টেলে আমার ব্যাগ রেখে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে বের হলাম। তখনো আমার সহপাঠিরা প্রায় সবাই দিল্লিতে। সন্ধ্যায় জমজমাট আড্ডা চলে ক্যাম্পাসে অথবা নাটকের মহড়া বা প্রদর্শনীতে উপস্থিত থাকে তারা। অনেকের সাথেই দেখা হলো। দারুন জমজমাট আড্ডা। রাতে বন্ধুদের সাথে খেতে হলো তারপর রাজপুত বন্ধু ওয়াগিস আমাকে নিয়ে গেলো তার বাসায়। সে তখনো অবিবাহিত।

এনএসডি ক্যাম্পাসের কাছেই ভারতীয় টেলিভিশন ‘দূরদর্শন’ এর প্রধান অফিস। সকালে ওয়াগিস সহ দূরদর্শন কেন্দ্রে এসে আমার পরিচয় দিলাম। একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা একটা গাড়িতে আমাকে তুলে বিজ্ঞান ভবনে নিয়ে গেলেন। ওয়াগিস সাথে ছিলো। বিজ্ঞান ভবনে স্থাপিত হয়েছে প্রশিক্ষন কেন্দ্রের অফিস ও ক্লাসরূম। সেখানে এআইবিডি’র উপপরিচালক ব্রজেস ভাটিয়ার নেতৃত্বে অনেকেই এসেছেন আমাদের রিসোর্স পার্সন হিসেবে। ফ্রান্স টেলিভিশন থেকে মিশেল ডিমাইসন, অস্ট্রেলিয়ার এবিসি টেলিভিশন থেকে মার্গারেট ম্যাকডোনাল্ড, ভারতের এআইএমসি থেকে জে কে দোশী- এদের নাম এখনো মনে আছে। মিশেলের সাথে যোগাযোগ এখনো আছে। ১৯৮৩ সালে মিসেল ও মার্গারেট ব্রজেস ভাটিয়ার সাথে ঢাকায় এসেছিলো আরেকটা কোর্স পরিচালনা করতে। একদিন মিশেল হোটেল পূর্বাণী থেকে হাঁটতে হাঁটতে টিকাটুলির ইলিসিয়াম রেস্ট হাউজে এসেছিলো আমার আমন্ত্রণে। 

সেদিন বিজ্ঞান ভবনে ব্রজেস ভাটিয়া কাগজপত্র দেখে আমাকে একটা খামে এক সপ্তাহের ডেইলি এলাউন্স তুলে দিলেন। এক মাসের কর্মসূচি, ওয়ার্কশপ ব্যাগসহ আমাকে পাঠিয়ে দিলেন জনপথ হোটেলে। ছাত্রজীবনে এই হোটেলের সামনে দিয়ে কতো চলাফেরা করেছি আর আজ সেখানে আমি এক মাসের অতিথি।

ওয়াগিস হোটেলে আমাকে রেখে চলে গেলো, তবে এনএসডি’র বন্ধুরা প্রায় প্রতিদিন বিকেলে আমার কাছে চলে আসতো। ওয়াগিস সিং ছাড়াও আসতো অমিতাভ শ্রিবাস্তব ববি, যুবরাজ শর্মা, ভিকে শর্মা, নূতন মাথুর, ডলি আলুওয়ালিয়া, আন্নু কাপুর সহ অনেকেই। এদের অনেকেই এনএসডি রিপেরটারি থিয়েটারে তখন (১৯৮১) কর্মরত ছিলো। ডলি ও আন্নু তখন নাটক ছাড়াও বোম্বের বেশ কিছু ছবিতে কাজ করছে। যতদূর মনে পরে আন্নু কাপুর তখন মৃনাল সেনের একটা ছবিতে অভিনয় করছে। আর ডলি অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের জন্য কস্টিউম ডিজাইন করা শুরু করেছে। পরবর্তি সময়ে সে রেঙ্গুন, হায়দার- এর মতো অসামান্য ছবির কস্টিউম ডিজাইন করেছে, এবং হায়দার এর জন্য বেস্ট কসটিউম ডিজাইনার হিসেবে ন্যাশানাল এওয়ার্ডও পেয়েছে।  

আমার প্রথম একটি আন্তর্জাতিক টেলিভিশন ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ যার অনেক স্মৃতিই এখনো চোখে ভাসে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে অনেকেই এসেছিলো। তার মধ্যে মনে পড়ে ফিলিপাইনের ইভানজেলিন, থাইল্যান্ডের থিয়ানথাই, দক্ষিন কোরিয়ার কিম, মালয়েশিয়ার রহিম, ইন্দোনেশিয়ার আহমেদ সহ অনেকের কথা। তবে থিয়ানথা0ই, ইভানজেলিন এবং আমি তিনজন একটা গ্রুপে চলাফেরা করি। থিয়েটার, সিনেমা দেখা এবং কনাটপ্লেসে ঘোরাঘুরি আমরা একসাথেই করতাম। মনে আছে আমরা একসাথে ‘চক্র’ ছবিটা দেখতে গিয়েছিলাম। নাসিরুদ্দিন শাহ আর স্মিতা পাতিলের অভিনয় দেখে মুগ্ধ আমার এই দুই বন্ধু। এনএসডির ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী তখন রত্না পাঠক। নাসিরুদ্দিন শাহ প্রায়ই চলে আসতো এনএসডি ক্যাম্পাসে। রত্না পাঠক অন্যতম আকর্ষণ। ‘চক্র’ দেখার পর ইভানজেলিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলাম নাসিরুদ্দিন ও রত্না পাঠকের। সুতরাং ছবিটা তারা আরেকবার দেখতে চায়। ছবি চলাকালীন আমি ছিলাম তাই অনুবাদকের ভূমিকায়।

প্রথম ওয়ার্কশপের স্মৃতি এখনো গেঁথে আছে মনে। যদিও তারপরে আরো প্রায় বারোটা আন্তর্জাতিক ট্রেনিং ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণ করেছি। আরো অনেক দেশে যেতে হয়েছে সেমিনারে বা সভায় অংশগ্রহন করতে। 

দিল্লি থেকে ফিরে আসার পর থিয়ানথাই ব্যাংকক থেকে এবং ইভানজেলিন ম্যানিলা থেকে আমার প্রতি জন্মদিনে গিফট পাঠাতো পার্সেল করে। তারপর দীর্ঘদিন যোগাযোগ ছিলোনা ইভানজেলিনের সাথে। দু-তিনবার থিয়ানথাই এর সাথে দেখা হয়েছে ব্যাংককে, আর সম্প্রতি ফেসবুকের মাধ্যমে ইভানজেলিনের সাথে। সে এখন মার্কিন নাগরিক। ইভানজেলিনের বাবা ফিলিপিনো হলেও মা ছিলেন আমেরিকান। ইভানজেলিন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের একজন বন্ধুও বটে। দুজনই ক্যালিফোর্নিয়ার অধিবাসী।

দেখতে দেখতে ঢাকা ফেরার দিন চলে আসে। সারারাত আমাদের পার্টি চলে জনপথ হোটেলে। একমাসে গড়ে ওঠা একটা পরিবার ভেঙে যাবে পরদিন। অন্যদিকে দেশে ফেরার আনন্দ। 

কিন্তু দেশে ফেরার আনন্দ নিরানন্দে রূপ নেয় যখন ঢাকার বাসা তরুতলে ফিরে দেখি পুরো বাসা লন্ডভন্ড, আলমারী ভেঙে চোরেরা চুরি করে নিয়ে গেছে জেবুর সব শাড়ি কাপড়, অলঙ্কার, প্রাইজবন্ড সহ সবকিছু শুধু আমার দু চারটা শার্টপ্যান্ট ছাড়া। 

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৫

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৪

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৩

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২

ধারাবাহিক আত্মকথা ।। শংকিত পদযাত্রা ।। খ ম হারূন । পর্ব-১

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank