মোটিভেশনাল স্পিচের জয় হোক!
মোটিভেশনাল স্পিচের জয় হোক!
![]() |
মোটিভেশনাল স্পিচের রয়েছে বিশাল এক ক্ষমতা। কয়েকটি উদাহরণ দেই-
১. আপনি লেখাপড়ায় খারাপ, লেখাপড়ায় মন বসে না, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন, সারা দিন-রাত পড়ার টেবিলে বসে থাকতে পারবেন।
২. আপনি অনেকদিন ধরে চেষ্টা করছেন, চাকরি পাচ্ছেন না, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার নিয়ে ডাক পিয়ন আপনার দরজায় অপেক্ষা করবেন।
৩. মোটিভেশনাল স্পিচ শুনে আপনি চাকরি পেয়েছেন কিন্তু প্রমোশন পাচ্ছেন না। আবার নতুন করে শুনুন, দেখবেন বস আপনাকে ৫০ ভাগ স্যালারি ইনক্রিমেন্ট করে প্রমোশন দিয়ে দিয়েছেন। আর ভালোভাবে যদি স্পিচ শুনে থাকেন, তাহলে গাড়ির সুবিধাও পেয়ে যেতে পারেন।
৪. আপনি ইন্ট্রোভার্ট টাইপের মানুষ, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন, এক্সট্রোভার্ট হয়ে যাবেন।
৫. আপনি সবার সামনে কথা বলতে পারেন না, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন, ভালো বক্তা হয়ে যাবেন।
৬. আপনি নানাবিধ হতাশায় ভুগছেন, কিচ্ছু করতে হবে না। শুধুমাত্র মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন। দিনের বেলায় শুনলে, রাতের মধ্যে সকল হতাশা কেটে যাবে।
৭. আপনি প্রেমে ব্যর্থ, অনেক শত্রু, অর্থকষ্টে আছেন, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনুন।
এখন বলতে গেলে সব সমস্যার সমাধান মোটিভেশনাল স্পিচ এর মধ্যেই পাওয়া যায়। আমার এক বন্ধু বলছিল, কয়েকদিন তার ভালো ঘুম হচ্ছে না। আমি বললাম, ডাক্তার দেখা। সে একটু মজা করেই বললো, মোটিভেশনাল স্পিচ শুনলে কি ঘুমের ঘুমের ব্যাপারে উপকার পাওয়া যাবে? বললাম, চেষ্টা করে দেখ, সবই যখন পাওয়া যায়, এটাও পেতে পারিস।
কয়েক বছর আগে আমেরিকার দুজন বিখ্যাত মোটিভেশনাল স্পিকার জন লিটিং (৪৮) এবং লিন (৪৬), যারা Happiness Gurus হিসেবেও কাজ করতেন, তারাও আত্মহত্যা করেছিলেন। ভাবা যায়! যারা অগনিত মানুষকে উৎসাহ, উদ্দীপনা, সমস্যা সমাধানের পথ দেখিয়েছেন, তারাই নিজেরা নিজেদেরকে শেষ করে দিয়েছেন।
ডেল কার্নেগীর কথাই ধরুন। এত বড় আত্ম-উন্নয়নমূলক লেখক, পাবলিক স্পিকার, তার মৃত্যু নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। অনেকেই মনে করেন, তিনিও আত্মহত্যা করেছিলেন।
গুগল করেন, উইকিপিডিয়া দেখেন, দেখতে পাবেন প্রতি বছর কত নামকরা মানুষ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করছে। যারা নিজেরাই অন্যদের বিভিন্ন বিষয়ের সমাধান দিতেন, যাদেরকে মানুষ আইডল মনে করতেন, তারাই অনেকে নিজেদের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
কথা শুনেই যদি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যেত, তাহলে যারা কথা বলেন, তারা কখনো সমস্যায় পরতেন না। আর বক্তা এবং শ্রোতার সমস্যা সমাধানের পথ যে একই রকম হবে, এটা ভাবার কোন কারণ নাই। কারণ প্রতিটা মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি, সক্ষমতা ভিন্নতর হয়ে থাকে।
আসলে যে কাজটা সহজ, আমরা তার পেছনেই সব সময় ছুটে থাকি। মোটিভেশনাল স্পিচ শুনতে কিছু করা লাগে না। এই জন্য এর প্রতি আমাদের আগ্রহ বেশি। কিন্তু কিছু করতে গেলে, পেতে গেলে, পরিশ্রম করতে হয়। আমরা আবার পরিশ্রমের পক্ষে না। সেখানেই যত অনীহা। সে কারণে, মোটিভেশনাল স্পিচের জয় হোক।
লেখক: যুগ্ম পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংক।
আরও পড়ুন
- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
- ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১: জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী বাংলাদেশ’
- সুনীল অর্থনীতি ও রূপকল্প-২০৪১
- শিক্ষার ধরন ও বেকারত্ব: দেশে অশিক্ষিতদের চেয়ে শিক্ষিত বেকার ৩ গুন
- ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশনস-১৯৬১ ও দ্বিপক্ষিয় কূটনীতিক সম্পর্ক
- ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়
- মিডিয়ার শক্তি বা আসক্তি: ম্যাজিক বুলেটের বাকের ভাই ও বদি
- কেন পড়া উচিত ‘সাতকাহন’
- গণমাধ্যমে গণরুচির বিকার
- জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট ডেভেলপমেন্ট সূচক ও বাংলাদেশে ই-গভার্নেন্স বাস্তবায়ন
















