শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ || ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কচুয়ায় বিভক্ত বিএনপি, চরম পর্যায়ে দুই পক্ষের কোন্দল

তারেক মাহমুদ সুজন, চাঁদপুর

২১:৫৫, ৫ জুলাই ২০২১

আপডেট: ২১:৫৯, ৫ জুলাই ২০২১

১০৭৭

কচুয়ায় বিভক্ত বিএনপি, চরম পর্যায়ে দুই পক্ষের কোন্দল

ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন (বাঁয়ে) ও মো. মোশারফ হোসেন।
ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলন (বাঁয়ে) ও মো. মোশারফ হোসেন।

নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা বিএনপি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি এক পক্ষ ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলনকে দলের পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানানোর পর থেকে  অভ্যন্তরীণ কোন্দল আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে।

পক্ষ দুইটির একটি সাবেক সংসদ সদস্য ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহছানুল হক মিলনের অনুসারী। অপরটি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া মালয়েশিয়া শাখা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। যদিও তাদের দাবি কোন ব্যক্তির হয়ে নয় কেন্দ্রের নিয়মানুযায়ী রাজনীতি করছেন তারা। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ জুন  জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘শিক্ষায় প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলে ছাত্রদলের নেতারা তার প্রতিবাদ জানান। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এহছানুল হক মিলন।কিন্তু তিনি জাফরুল্লাহর বক্তব্যের কোন প্রতিবাদ জানান নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির সকল পদ থেকে এহছানুল হক মিলনকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়ে উপজেলা শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মোঃ কামরুজ্জামান কামরুল ও সদস্য সচিব মোঃ মোশারফ হোসেন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। 

এর প্রেক্ষিতে গত ২৯জুন মিলনের অনুসারীরা শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মোস্তফা কামাল প্রধান ও ছাত্রনেতা তানভীর তালহারকে কচুয়া সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে আটক করে  মারধর করেন।সে সময় মোঃ কামরুজ্জামান কামরুলকে জবাই করে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

এরপর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে কোন্দল চরমরূপ ধারণ করেন। এর প্রতিবাদে গতকাল ৪জুলাই  উপজেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদল এক আলোচনা সভায় উপস্থিত হয়ে উক্ত ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়।

তৃণমূলের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, এখানে দলটির প্রতিটি ফরমেটেই দুইটি করে কমিটি। উভয়েই পৃথকভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। ফলে তৃণমূল নেতা-কর্মীরাও বিভক্ত হয়ে পড়েছেন।কোন পক্ষে ভিড়বেন তা নিয়েও অনেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন।  

এ সম্পর্কে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হুমায়ন কবির অপারেজয় বাংলাকে বলেন, দলের নিয়ম অনুযায়ী কেন্দ্র ও জেলা বিএনপি অনুমোদনে আমাদের কমিটি গঠন হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, জামাত,আওয়ামীলীগ ও জাতীয় পার্টি থেকে আসা কিছু লোককে সুযোগ সুবিধা দিয়ে মিলন সাহেব পকেট কমিটি গঠন করেছেন। তবে সেসব কমিটি কেন্দ্র থেকে অনুমোদিত নয়। এহছানুল হক মিলনের বহিষ্কার দাবির বিষয়ে তিনি বলেন,  নিন্দা জানিয়েছি এতে করে অনেকের গাত্রদাহ হয়েছে। 

মারধরের বিষয়টি জানা নেই উল্লেখ করে বিএনপির অপর অংশের সভাপতি খাইরুল আবেদীন স্বপন অপরাজেয় বাংলাকে বলেন, যে নেতার ইউনিয়নের সভাপতি হবার যোগ্যতা নাই সে যদি মিলন সাহেবের মতো ব্যক্তির বহিষ্কার চেয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দেয় তখন তো পাবলিক সেন্টিমেন্ট তৈরি হবেই। কেন্দ্রের কোন ছাত্রদলের নেতা তো মিলন সাহেবের বহিষ্কার চায় নি। সে ওয়ার্ডের নেতা হয়ে যদি এসব বলে তখন মানুষ তো ক্ষুব্ধ হবেই। তারা মিলন সাহেবের বহিষ্কার চাইবে আর কচুয়ার জনগণ তা মানবে তা কী কোন ভাবে হয়?। জনরোষে পড়বে তাই স্বাভাবিক। 

দুই কমিটির বিষয়ে তিনি বলেন,  বাংলাদেশের অনেক জায়গায়ই  দুইটি করে কমিটি রয়েছে। এটার অনুমোদন মিলন সাহেব দেয়ার কিছু নাই। তিনি দুই বারের এমপি,সাবেক সফল মন্ত্রী , রাজনীতিতে সক্রিয়,তার স্ত্রী মহিলা দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট।তাকে যখন রাজনীতি থেকে বাদ দেয়ার চেষ্টা করা হয় তখন সেটা কারো মেনে নেওয়ার কথা নয়। 

একটা সময় আমরা একসাথেই রাজনীতি করেছি পরবর্তীতে আমাদের না জানিয়ে তারা হঠাৎ কমিটি দিয়ে দেয়। পরে আমরা জেলার নেতৃবৃন্দদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন সমাধান পাই নি। তারা বলেন এটাই ঠিক আছে। আমাদের বাদ দিয়ে যে কমিটি গঠন হয়েছে তা আমরা স্বাভাবিকভাবেই মানতে পারি না।তাই আমাদের রাজনীতি করার জন্য কমিটি গঠন করি। 

কর্মসূচি পৃথকভাবে পালন হয় স্বীকার করে তিনি বলেন,জাতীয় কর্মসূচিগুলো আলাদাভাবেই করা হয় । 

দলের ঐক্যের প্রশ্নে তিনি বলেন, আমি মনে করি দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ দলের ভালোর জন্য, ঐক্যের ও শক্তির জন্য এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে এই সমস্যা সমাধানে কী করণীয় তদন্তের মাধ্যমে তা খুঁজে বের করে সমাধান করা উচিত। আশা করি সেটাই করবে। 

উল্লেখ্য,২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে (চাদঁপুর-০১) বিএনপি তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড.আ ন ম এহছানুল হক মিলনকে মনোনয়ন না দিয়ে মো. মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দিয়েছে। সে থেকে নেতৃত্ব ও নেতাকর্মী  দুইভাগ বিভক্ত হয়ে পড়ে। তার আগ পর্যন্ত নেতৃত্ব একজনের হাতেই ছিল।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত