দেশে পৌঁছেছে তিউনিশিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ
দেশে পৌঁছেছে তিউনিশিয়া উপকূলে নিহত ৮ বাংলাদেশির মরদেহ
ইউরোপ যাওয়ার লক্ষ্যে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে তিউনিশিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে মারা যাওয়া ৮ বাংলাদেশির মরদেহ দেশে পৌঁছেছে।
বিমানবন্দরের ৮নং হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে বের করে মরদেহগুলো একে একে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় বিমানবন্দর থানা পুলিশ, এপিবিএন পুলিশ, স্বজনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মরদেহবাহী সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের (এসভি-৮০৮) ফ্লাইটটি ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়।
বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) এএসপি মো. মিজানুর রহমান জানান, স্বজনরা মরদেহগুলো বুঝে পেয়ে যার যার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
এর আগে গত ৩০ এপ্রিল লিবিয়ায় নিযুক্ত ও তিউনিশিয়ার অনাবাসিক দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল (অব.) আবুল হাসনাত মুহাম্মাদ খায়রুল বাশারের উপস্থিতিতে মিশনের কর্মকর্তারা মরদেহগুলো তিউশিস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করেন। এ ঘটনায় ঢাকার বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়।
পুলিশ, ঘটনার বিবরণ, মামলা ও নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একটি অভিবাসী দল নৌকায় করে স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ১১টায় লিবিয়ার জোয়ারা উপকূল থেকে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। নৌকাটি তিউনিশিয়ার উপকূলে গেলে রাত সাড়ে ৪টার দিকে নৌকাটি ডুবে যায়। নৌকাটিতে মোট ৫৩ জনের মধ্যে ৫২ জন যাত্রী এবং একজন চালক ছিলেন। দুর্ঘটনার পর তাদের মধ্যে ৪৪ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে ২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিক। বাকিদের মধ্যে পাকিস্তানের ৮ জন, সিরিয়ার ৫ জন, মিসরের ৩ জন ও নৌকাচালক রয়েছেন। ওই ঘটনায় নৌকায় থাকা ৯ যাত্রী মারা গেছেন। এরমধ্যে ৮ জনই বাংলাদেশি নাগরিক। নিহত অপর ব্যক্তি পাকিস্তানের নাগরিক।
সূত্র আরও জানায়, নিহত বাংলাদেশিরা হলেন মামুন শেখ, সজল বৈরাগী, নয়ন বিশ্বাস, রিফাত শেখ, সজীব কাজী, ইমরুল কায়েস আপন, মো. কায়সার ও রাসেল শেখ। তাদের ৫ জনের বাড়ি মাদারীপুরে ও ৩ জনের গোপালগঞ্জে।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় ঢাকার বিমানবন্দর থানায় গত ১৯ এপ্রিল নিহত সজল বৈরাগীর বাবা সুনীল বৈরাগী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের দুদিন পর আসামিদের গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহারে সুনীল বৈরাগী অভিযোগ করেন, তার ছেলে সজল বৈরাগী উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যেতে ইচ্ছুক ছিলেন। পূর্ব পরিচিত যুবরাজ কাজী এবং লিবিয়ায় অবস্থানরত মোশারফ কাজী ১৪ লাখ টাকার বিনিময়ে সজলকে বৈধপথে ইতালি পাঠানোর প্রস্তাব দেন। সজল ও তার পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি হন। গত বছর ১৭ নভেম্বর গোপালগঞ্জের বাসায় যুবরাজ কাজীর হাতে আড়াই লাখ টাকা এবং পাসপোর্ট দেন সজল। ৩০ ডিসেম্বর সজলকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নেওয়া হয়। বিমানবন্দরে প্রবেশের আগেই আরও ৫ লাখ টাকা নেন যুবরাজ কাজী। ৩১ ডিসেম্বর সকাল ৬টায় দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন সজল। এরপর ৮ জানুয়ারি গোপালগঞ্জের বাসায় গিয়ে যুবরাজ কাজীর হাতে আরও সাড়ে ৬ লাখ টাকা দেন সুনীল বৈরাগী। এরপর থেকে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি। পরে গণমাধ্যমে জানতে পারেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে ১১টা থেকে ভোর ৪টার মধ্যে লিবিয়া থেকে ইতালি অভিমুখে যাত্রা করা একটি ট্রলারে যে আট বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন তার মধ্যে সজল রয়েছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, ২০ জনের একটা চক্র পারস্পরিক যোগসাজশে উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অবৈধভাবে ওই ৮ জনকে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে পাচার করে।
আরও পড়ুন
জনপ্রিয়
- ঋণখেলাপীর মিথ্যা মামলায় ডিএমডিকে হয়রানি, এবি ব্যাংকের প্রতিবাদ
- পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ কাইয়ুম ক্লিনিক্যালি ডেড, লাইফসাপোর্ট খোলার সিদ্ধান্ত
- সরকার ই-কমার্স ফ্রেন্ডলি, এখনই ২০০০ কোটি টাকার মার্কেট এক্সপ্লোর করা সম্ভব
- জাতিসংঘ ৭৭-তম অধিবেশনে যোগ দিচ্ছেন শেখ হাসিনা, কি থাকছে?
- আরজে কিবরিয়ার অনুষ্ঠানে এসে ২৫ বছর পর বাবা-মাকে খুঁজে পেলেন মেয়ে
- বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মদিন আজ
- ঢাকায় বসবে ২৫৮কি.মি. পাতাল রেল, কোথা থেকে কোথায়?
- করোনা পরীক্ষায় প্রতারণাকে নির্মম বাণিজ্য বললেন ওবায়দুল কাদের
- মেট্রোরেলের আদ্যোপান্ত, ডেডলাইন জয়ে ছুটছে কর্তৃপক্ষ
- বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস
`বঙ্গবন্ধু ফিরে এলে তোমার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলায়`