সোমবার   ১০ নভেম্বর ২০২৫ || ২৬ কার্তিক ১৪৩২ || ১৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ইইউ’র প্রতিবেদন

গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

২১:০৯, ৮ মার্চ ২০২৪

ইইউ’র প্রতিবেদন

গণতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন গণতন্ত্রের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি বলে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ফলাফল সংক্রান্ত প্রতিবেদনে এমনটি জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিশেষজ্ঞ দল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশে ২০২৪ সালের সংসদ নির্বাচন আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিক নির্বাচনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড পূরণ করতে পারেনি। প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের জন্য অপরিহার্য নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সীমাবদ্ধ ছিল। যার মধ্যে রয়েছে- সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন, এবং বক্তৃতা। বিচারিক কার্যক্রম ও গণগ্রেপ্তারের মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তৎপরতা মারাত্মকভাবে সীমিত হয়ে পড়ে।

ভোটাররা ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি উল্লেখ এতে বলা হয়, রাজনৈতিক দলগুলোর আসন ভাগাভাগি চুক্তি এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী ও দলের ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীদের’ মধ্যে প্রতিযোগিতা ভোটারদের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি। গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজও বাকস্বাধীনতা নিশ্চিতের অনুকূল পরিবেশ ছিল না, এমনকি সমালোচনামূলক বক্তব্য ও স্বচ্ছতার বিষয়টিও সীমিত ছিল।

এতে আরও বলা হয়, সাংবিধানিক নিয়ম মেনে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় ১২ তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচন ছিল একটি অত্যন্ত মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে পরিচালিত। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তার শরিকরা নির্বাচন বয়কট করায় আসল প্রতিদ্বন্দ্বিতার অভাব ছিল। বিরোধীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্বাচন পরিচালনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়েছিলো, যা প্রত্যাখ্যান করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে বিরোধী দলের ধারাবাহিক বিক্ষোভ ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর গুরুতর রূপ নেয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপি নেতাদের গণগ্রেপ্তারের ফলে দেশের নাগরিক ও রাজনৈতিক পরিবেশের উল্লেখযোগ্য অবনতি হয়।

নির্বাচনকালীন সময়ে বিরোধী দলগুলোর সমাবেশ, সমিতি, আন্দোলন এবং বক্তৃতার স্বাধীনতা কঠোরভাবে সীমিত করা হয়। বিএনপির প্রায় সব সিনিয়র নেতাকে কারাবন্দি করায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা বিএনপির পক্ষে অসম্ভব ছিল, বলে উল্লেখ করা হয়।

নির্বাচনের দিন অনিয়ম ও বিচ্ছিন্ন সহিংসতার কথা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সাধারণভাবে সুসংগঠিত ও সুশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে নির্বাচনের দিন ব্যালট বাক্স ভর্তি এবং জালিয়াতির প্রচেষ্টাসহ নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীরা ভোটে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে কয়েকটির তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলা করা হয়েছিল। ২৫টি ভোট কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। তবে অন্যান্য ঘটনার যথেষ্ট তদন্ত করা হয়নি।

নির্বাচনে ভোটের হারকে ব্যাপক বৈষম্যের চিত্র উল্লেখ করে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটের হার ছিল ৪১.৮ শতাংশ। এটাই সারা দেশে ব্যাপক বৈষম্যের চিত্র প্রদর্শন করে। চূড়ান্ত আনুষ্ঠানিক ফলাফল অনুযায়ী- আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল প্রার্থীরা ২২৩টি আসন, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২টি, জাতীয় পার্টি পায় ১১টি আসন। আসন ভাগাভাগির চুক্তিতে আরও দুটি দল একটি করে আসন পেয়েছে। কল্যাণ পার্টি জিতেছে একটিতে।

প্রতিবেদনে কিছু নির্বাচনী এলাকায় উন্নতির জন্য কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়-

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ সহ সংসদীয় সম্পর্কিত সমস্ত আইন, প্রবিধান এবং বিধিগুলোর একটি ব্যাপক পর্যালোচনা আন্তর্জাতিকমানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আইনি নিশ্চয়তা বাড়াতে পারে।  

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনার বোর্ড নিয়োগের ব্যবস্থা যোগ্যতাভিত্তিক ও স্বাধীন নিয়োগের মাধ্যমে হওয়া উচিত। যা জনস্বার্থে কাজ করার লক্ষ্যে কমিশনের হাত শক্তিশালী করবে। সর্বোত্তম অনুশীলনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি স্বাধীন প্যানেল বিষয়টি তত্ত্বাবধান করতে পারে।

বাকস্বাধীনতার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের বিধান মেনে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০২৩-এর বিধানগুলির পর্যালোচনা করতে হবে। অস্পষ্ট এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিধিনিষেধগুলি সরানো যেতে পারে।

সুশীল সমাজ যাতে নিষেধাজ্ঞা ছাড়াই কাজ করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য বিদেশি অনুদান (স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রম) আইনের বিধান, ২০১৬ এর সীমাসহ সুশীল সমাজের  কার্যক্রম এবং অতিমাত্রায় এর ওপর আমলাতান্ত্রিক নিবন্ধনের বিষয়টি  পর্যালোচনা করা যেতে পারে।

ভোট ও গণনার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য বর্ধিত সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা যেতে পারে। তার জন্য ভোট কেন্দ্রের আশেপাশে রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমের উপর সম্পূর্ণ স্থগিতাদেশ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)

আরও পড়ুন

Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank