শনিবার   ২৭ এপ্রিল ২০২৪ || ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

হত্যায় মিন্নির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয়েছে

রিফাত হত্যা: স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

১৪:০২, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

আপডেট: ১৮:০৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০

২৯৫২

হত্যায় মিন্নির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ হয়েছে

রিফাত হত্যা: স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ে স্ত্রী মিন্নিসহ ৬ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায়ে ৪ আসামি খালাস পেয়েছেন। বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রায় ঘোষণা করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামান। রায়ে বলা হয়েছে, মিন্নিও যে তার স্বামীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন, প্রসিকিউশন তা প্রমাণ করতে পেরেছে।

এই মামলার আসামি রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১০ জন। আসামিদের প্রতি আদালতের রায় কি হতে যাচ্ছে তা জানার অপেক্ষা ছিল সবার। সেই অপেক্ষার অবসান হলো।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাকি পাঁচ আসামি হলেন-
 রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি 
আল কাইউম ওরফে রাব্বি আঁকন 
মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে সিফাত 
রেজওয়ান আলী খান ওরফে টিকটক হৃদয় 
ও মো. হাসান

খালাস পেয়েছেন 
রাফিউল ইসলাম
মোঃ সাগর
কামরুল ইসলাম সাইমুন
মোঃ মুসা (মুসা পলাতক আছেন)।

রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হক কিশোর বলেন, ‘আমরা ন্যায়বিচার পাইনি, আমরা আপিল করব।’
অন্যদিকে মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বলেন, ‘মিন্নিসহ ছয় আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। আমরা এই রায়ে সন্তুষ্ট।’

এদিকে কড়া নিরাপত্তায় সকালেই আদালতে আসেন বিচারক মোঃ আছাদুজ্জামান। এছাড়া এই রায়কে কেন্দ্র করে জজ আদালত চত্বরে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র‌্যাব। আদালত পাড়ায় যানবাহন চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের তল্লাশি করে আদালত চত্বরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। 

সকাল ৯টার আগ দিয়ে মামলার অন্যতম আসামি রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি, তার বাবা মোজাম্মেল হক কিশোরের মোটরসাইকেলে করে আদালতে উপস্থিত হন। মামলার আসামিদের মধ্যে কেবল তিনিই জামিনে ছিলেন। প্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামিকে প্রিজন ভ্যানে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

মামলার বাদী রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফসহ তার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও রায়ের জন্য উপস্থিত হন আদালতে।

এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনানি শেষ হয়। ওই দিনই বিচারক মামলার রায়ের জন্য ৩০ সেপ্টেম্বর দিন ঠিক করেন।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে। ওই বছরের ১ সেপ্টেম্বর ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্ক দুভাগে বিভক্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ জন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার এক আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে (নিহত রিফাতের স্ত্রী) নিয়েও চলে নানা নাটকীয়তা।

পরে এ বছরের ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি থেকে আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। মোট ৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে এই মামলায়। বাকি ১৪ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বরগুনার শিশু আদালতে আলাদাভাবে তাদের বিচার চলছে।

এ মামলার ১ নম্বর আসামি রাকিবুল হাসান ওরফে রিফাত ফরাজী (২৩)। আর নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নি (১৯) অভিযোগপত্রের ৭ নম্বর আসামি, যার নাম এ মামলার এজাহারে ছিল এক নম্বর সাক্ষী হিসেবে।

প্রাপ্তবয়স্ক বাকি আট আসামি হলেন- আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজোয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), হাসান (১৯), মুসা (২২), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), সাগর (১৯) ও কামরুল হাসান সায়মুন (২১)। এদের মধ্যে মুসা পলাতক,মিন্নি আছেন জামিনে। বাকিরা কারাগারে।

কি ঘটেছিল ?
গত বছর ২৬ জুন বরগুনা জেলা শহরের কলেজ রোডে ভরদুপুরে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাতকে। ওই ঘটনার ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। সেই ভিডিওতে দেখা যায়, দুই যুবক ধারালো অস্ত্র হাতে রিফাতকে একের পর এক আঘাত করে চলেছে।

এরপরে বরগুনার সরকারি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের ছাত্রী মিন্নি হামলাকারী সবাইকে চিনতে না পারার কথা জানালেও নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর নাম বলেন।

ওই ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মিন্নিকে মামলায় ১ নম্বর সাক্ষী করা হলে মামলা মোড় নেয় অন্যদিকে। ১৬ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর সেই রাতে তাকে রিফাত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। আদালতে হাজির করার পর মিন্নিকে রিমান্ডেও পাঠান আদালত।

পুলিশের পক্ষ থেকে সে সময়ে বলা হয়, মিন্নি হত্যাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং হত্যা পরিকল্পনাকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে মিন্নির যুক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। পরে কিছু শর্তসাপেক্ষে ২৯ অগাস্ট হাইকোর্ট মিন্নির জামিন মঞ্জুর করেন।


 

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত