এভিয়েশনের খবর, সাথে জাতীয় বিমান সংস্থার ছবি কি বাধ্যতামূলক?
এভিয়েশনের খবর, সাথে জাতীয় বিমান সংস্থার ছবি কি বাধ্যতামূলক?
![]() |
মোঃ কামরুল ইসলাম |
যুগ যুগ ধরে একটা বিষয় চলে আসছে, বাংলাদেশের যেকোনো সংবাদ মাধ্যমে এভিয়েশন বিষয়ক কোনো সংবাদ পরিবেশিত হলেই সাথে যে এয়ারক্রাফটের ছবি থাকে তা হচ্ছে জাতীয় বিমান সংস্থার। এটা কি বাংলাদেশ মিডিয়ার পক্ষপাতিত্ব নাকি অনিচ্ছাকৃত ভুল নাকি কোনো নিয়মের শিকলে ব্র্যাকেট বন্দী?
বাংলাদেশের প্রাইভেট এয়ারলাইন্স দু’যুগ অতিক্রম করেছে। এই সময়ের মধ্যে অনেকগুলো প্রাইভেট এয়ারলাইন্স ব্যবসা গুটিয়ে চলেও গেছে। বর্তমানে দু’টি এয়ারলাইন্স টিকে থাকার জন্য লড়াই করছে। কিছুদিন আগেও জিএমজি এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজের মতো বিমান সংস্থাগুলো সারাবিশ্বে বাংলাদেশ বিমান সহ নামীদামী সকল এয়ারলাইন্স এর সাথে প্রতিযোগিতা করে দাপিয়ে বেড়িয়েছে।
নিজেদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, এয়ারক্রাফট চয়েস, আর্থিক সংকট কিংবা এভিয়েশন পলিসির সাথে লড়াই করে শেষ অবধি টিকে থাকতে পারেনি বাংলাদেশের প্রায় ৮ থেকে ৯ টি বেসরকারী এয়ারলাইন্স। বর্তমানে দু’টি বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ও নভো এয়ার ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
সংবাদমাধ্যমের সহায়তায় বিভিন্ন এয়ালাইন্সের পজিটিভ নেগেটিভ সব খবরই সব সময় জানতে পারছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যারপর নাই চেষ্টা করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ বিমানকে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে। লাভজনক করার জন্য গত কয়েক বছরে অত্যাধুনিক অনেকগুলো এয়ারক্রাফট বিমান বহরে যুক্ত করার ব্যবস্থা করেছেন। এখন এয়ারক্রাফট স্বল্পতা নেই বললেই চলে। কিন্তু রুটের চেয়ে এয়ারক্রাফট বেশীই মনে হচ্ছে। এর জন্য অতিরিক্ত খরচও বহন করতে হচ্ছে। বহরে এয়ারক্রাফট আছে কিন্তু পর্যাপ্ত রুটের অভাবে এয়ারক্রাফটগুলো ব্যবহার করা যাচ্ছে না, বর্তমানে সাথে আছে করোনা মহামারির থাবা।
বর্তমান বিশ্ব পুরোপরি সংবাদমাধ্যম নির্ভর। সেই নির্ভরতা যেমন প্রিন্ট মিডিয়ার উপর তেমনি ইলেকট্রনিক মিডিয়া আবার অনলাইন মিডিয়া তো আছেই। বর্তমানে প্রিন্ট, অনলাইন কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে পুরোপুরি প্রতিযোগিতায় নামতে হয়েছে ডিজিটাল মিডিয়া তথা সোস্যাল মিডিয়ার সাথে। প্রত্যেকটি মিডিয়ায় বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রতিনিয়ত সংবাদ পরিবেশন করে থাকে।
এভিয়েশন ভিত্তিক কোনো বিশেষ সংবাদ যদি বাংলাদেশের কোনো মিডিয়াতে পরিবেশন করা হয়, অবধারিতভাবেই নিউজ সংশ্লিষ্ট কোনো এয়ারক্রাফটের ছবির প্রয়োজন পড়ে তখন দেখা যায় জাতীয় বিমান সংস্থার ছবিই স্থান করে নিচ্ছে। যার ফলে বিমান বাংলাদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভাবে একটি সুবিধা পেয়ে আসছে প্রতিনিয়ত।
বেসরকারি বিমানসংস্থার যাত্রা শুরু হওয়ার পরও দু’যুগের বেশী সময় ধরে বাংলাদেশ মিডিয়ায় একই নিয়ম মেনে চলায় বেসরকারী বিমান পরিবহন সংস্থাগুলো বাণিজ্যিক কিংবা প্রচারের ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে পড়ছে। ইচ্ছাকৃত কিংবা অনিচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ মিডিয়ায় শুধুমাত্র জাতীয় বিমান সংস্থার ছবি ব্যবহারে বেসরকারী বিমান সংস্খাগুলো বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। এই বিষয়টার প্রতি বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো দৃষ্টিপাত করলে বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলোও উপকৃত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
বেসরকারি বিমানসংস্থাগুলো জাতীয় বিমান সংস্থার পাশাপাশি দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে। দেশের ইমেজকে ছড়িয়ে দিচ্ছে, দেশের হয়ে ব্র্যান্ডিং করছে সরকারী ও বেসরকারী উভয় এয়ারলাইন্স-ই। জাতীয় বিমান সংস্থা অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় রুটে প্রায় ২৪ থেকে ২৫ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে, তেমনি বেসরকারী এয়ারলাইন্সও ১৭ থেকে ১৮ টি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। সামনের দিনগুলোতে আরো বেশ কয়েকটি নতুন রুট চালুর পরিকল্পনা করছে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো।
দেশের প্রচলিত সংবাদমাধ্যমগুলো জাতীয় বিমান সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলোর পাশে সমভাবে থাকলে এভিয়েশন সেক্টর অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
মোঃ কামরুল ইসলাম: মহাব্যবস্থাপক-জনসংযোগ, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স
![](https://www.aparajeobangla.com/media/common/Sign.png)
আরও পড়ুন
![](https://www.aparajeobangla.com/media/common/Sign.png)
জনপ্রিয়
- সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি: প্রেক্ষিত বাংলাদেশ
- ‘স্মার্ট বাংলাদেশ-২০৪১: জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী বাংলাদেশ’
- সুনীল অর্থনীতি ও রূপকল্প-২০৪১
- শিক্ষার ধরন ও বেকারত্ব: দেশে অশিক্ষিতদের চেয়ে শিক্ষিত বেকার ৩ গুন
- ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায়
- ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশনস-১৯৬১ ও দ্বিপক্ষিয় কূটনীতিক সম্পর্ক
- মিডিয়ার শক্তি বা আসক্তি: ম্যাজিক বুলেটের বাকের ভাই ও বদি
- গণমাধ্যমে গণরুচির বিকার
- কেন পড়া উচিত ‘সাতকাহন’
- হালকা বিনোদনের প্রাধান্যে সংস্কৃতির অবনতি