অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মেট্রোরেলের কোচগুলো যাচ্ছে দিয়াবাড়ির ডিপোতে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০৫:০৮ পিএম, ২২ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার

মেট্রোরেলের চার সেট ট্রেনের কোচ ডিপোতে নেওয়ার কাজ চলছে

মেট্রোরেলের চার সেট ট্রেনের কোচ ডিপোতে নেওয়ার কাজ চলছে

ঢাকায় পৌঁছুনো মেট্রোরেলের চার সেট ট্রেনের কোচ ডিপোতে নেওয়ার কাজ চলছে। এই কোচ দিয়াবাড়ির ডিপোতে নিয়ে যাওয়া হবে। বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) এই কাজ শুরু হয়। দিনভর একই লরিতে করে মোট চারটি কোচ ডিপোতে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। জেটিতে অবস্থানরত বাকি দুটি কোচ নামিয়ে শুক্রবার  ডিপোতে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

**মেট্রোরেলের প্রথম সেট পৌঁছেছে ঢাকায়

২৩ এপ্রিল পৌঁছানোর কথা থাকলেও দুদিন আগে বুধবার (২১ এপ্রিল) বিকেল মোট ছয়টি কোচ ঢাকায় এসে পৌঁছায়। মোংলা থেকে নৌপথে বরিশাল, চাঁদপুর, মুন্সীগঞ্জ, সদরঘাট হয়ে উত্তরার তুরাগ পাড়ের জেটিতে ভিড়েছে মেট্রোরেল বহনকারী বার্জ। জাপান থেকে ট্রেনের কোচের পাশাপাশি তা বার্জ থেকে নামানোর যন্ত্রও আনা হয়েছে। গতকাল এসব যন্ত্র খালাস করা হয়।

মেট্রোরেল প্রকল্পের বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিকি জানান, ট্রেনের ছয়টি কোচের মধ্যে দুটি বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ও বাকি চারটি ৬টার দিকে ডিএমটিসিএলের নতুন জেটিতে পৌঁছেছে।

মেট্রোরেলের কোচ আনার জন্য উত্তরার দিয়াবাড়িতে বিশেষ জেটি তৈরি করেছে ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল)।

কোচগুলো জাপানের কাওয়াসাকি-মিতসুবিশি কনসোর্টিয়াম কোম্পানি লিমিটেড তৈরি করছে। বাংলাদেশে এই কোচ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)। 

৪ মার্চ বাংলাদেশ সময় বিকেল তিনটায় জাপানের কোবে বন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে কোচগুলো। ৩১ মার্চ বিকেলে মোংলা বন্দরে পৌঁছে। ওই দিন ও তার পরের দিন কোচগুলো সেখানে খালাস করা হয়।

সেখানে যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে ট্রেনের কোচ বহনকারী দুটি বার্জ ১৬ এপ্রিল ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। এমএএন সিদ্দিকি জানান, এখন কোচগুলো ডিপোতে থাকবে। তারপরে ট্রায়াল রান শুরুর আগে এগুলোর একটি সমন্বিত পরীক্ষা করা হবে।

গত বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরি হয়। দ্বিতীয় সেট ট্রেন আগামী ১৬ জুন ও তৃতীয়টি ১৩ আগস্ট ডিপোতে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ডিএমটিসিএল সূত্র বলছে, কোচগুলো ডিপোতে এনে আচ্ছাদন খোলা হবে। এরপর সেখানে প্রতিটি কোচের ১৯ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে লাইনে তোলা হবে। এ কাজে দেড় থেকে দুই মাস সময় লাগতে পারে। এ কাজের জন্য ইতালি থেকে একধরনের যন্ত্র আনা হয়েছে।

ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব এম এ এন সিদ্দিক  বলেন, কোচগুলো লাইনে তোলার পর একটা অনুষ্ঠান করা হবে। এতে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও জাপানের প্রতিনিধিরা থাকবেন। এরপর পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হবে। এ জন্য ডিপো থেকে পল্লবী পর্যন্ত মেট্রোরেলের লাইন, সংকেতব্যবস্থা ও স্টেশন অবকাঠামো প্রস্তুত করা হচ্ছে।

দেখতে কেমন হবে মেট্রোরেলের ট্রেন সেট
মেট্রোরেল ট্রেন সেট জাতীয় পতাকার লাল-সবুজ রঙে রঙ করা থাকবে। ট্রেন সেটের বডি এবং ভিতরের কাঠামোর সবকিছুই স্টেনলেস স্টিলে তৈরি করা হচ্ছে। কোচে ব্যবহৃত গ্লাসগুলো থাকবে বুলেটপ্রুফ। এই ট্রেনের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় এক শ কিলোমিটার।

ঢাকার যানজট নিরসনসহ নগরবাসীর যাতায়াত আরামদায়ক, দ্রুততর ও নির্বিঘ্ন করতে এই মেট্রোরেল প্রকল্পের মাধ্যমে সব কটি পয়েন্টে ২৪ সেট ট্রেন চলাচল করবে। প্রত্যেকটি ট্রেনে থাকবে ৬টি করে কার বা কামরা। একেকটি কোচে ১ হাজার ৭৩৮ জন যাত্রী যেতে পারবেন। চলাচল শুরু হলে উভয় দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী বহনে সক্ষমতা থাকবে মেট্রোরেলের।

যাত্রী যাতে দাঁড়িয়ে ভ্রমণ করতে পারেন সে ব্যবস্থও থাকবে। প্রতিটি কোচের দুদিকে চারটি দরজা থাকবে। ট্রেনে সিটগুলো লম্বালম্বি পাতা থাকবে, প্রতিটি কোচে প্রতিবন্ধী কিংবা বয়ঃবৃদ্ধদের যারা বসতে পারবেন না তাদের জন্য থাকবে দুটি করে হুইলচেয়ার।

প্রতিটি ট্রেনে ৬টি কোচের মধ্যে একটি কোচ শুধুমাত্র নারী যাত্রীদের জন্য সংরক্ষিত রাখা হবে। বাকিগুলোতে নারী পুরুষ উভয়ই একসঙ্গে যেতে পারবেন।