অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

খালেদার দণ্ড স্থগিতের আবেদন আইন মন্ত্রণালয়ে 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৬:০২ পিএম, ৪ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০৬:৫২ পিএম, ৪ মার্চ ২০২১ বৃহস্পতিবার

দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছে পরিবার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

সচিবালয়ে (৪ মার্চ) বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা জানান।

**খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফের সিদ্ধান্ত আলোচনার পর

এর আগে, মঙ্গলবার (২ মার্চ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইসকান্দার সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত থাকা খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো ও তাকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর এই আবেদন করা হয়। আবেদনের পর স্বরাস্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করে সেটি পাঠিয়ে দেন সচিবের দপ্তরে। এখন সেই স্বরাষ্ট্র থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এটি বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে তার পরিবারের তৃতীয় দফা আবেদন।

আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘তাকে ছয় মাসের জন্য প্রথম দফায় দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। দ্বিতীয় দফায় আরও ছয় মাস তাদের আবেদনের ভিত্তিতে। শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার মুক্তির সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা আগামী ২৪ মার্চ। 

আবেদনে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘করোনাকালীন তিনি চিকিৎসা নিতে পারেননি সেটা জানিয়েছেন এবং তার দণ্ডাদেশ মওকুফ করা যায় কি না সে সম্বন্ধেও বলেছেন।’

পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয় থেকে মতামত আসলে আমাদের যথাযোগ্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে তারপর ব্যবস্থা নেব।’

খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে দেয়ার কারণ ব্যাখ্যায় মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি যেহেতু আর্থ্রাইটিস রোগে ভুগছেন এবং চলাফেরা করতে খুব অসুবিধা হয়, সবসময় কারও সহযোগিতায় রাখতে হয় আগে থেকেই, কারাগারে গিয়েছেন বলে নয়। সে জন্যেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে বাসায় থেকে আরেকটু ভালো সেবা যাতে পায় সে জন্য ব্যবস্থা করেছিলেন।’

প্রতিবারই আবেদনে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন তার মনোনীত চিকিৎসকরা তাকে সেবা দিয়েছেন। বাসাতেও তার মনোনীত চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন।’

খালেদা জিয়া যে বাড়িতে থাকছেন, সেটা কারাগার কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সেই শর্ত দিয়েছি বাসায় তিনি অবস্থান করবেন। বাসার বাইরে তিনি যাবেন না।’

খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুর্নীতির মামলায় সাজা ভোগ করছিলেন। শারীরিক নানা সমস্যা নিয়ে তিনি প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে সরকারের নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫শে মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পান। পরে সেপ্টেম্বরে এই মুক্তির মেয়াদকাল আরও বাড়ানো হয়।

শর্তে বলা হয়, মুক্তিতে থাকার সময় খালেদা জিয়া নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন। এ সময় তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এছাড়া, তিনি কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে পারবেন না বলে শর্তে উল্লেখ আছে। এজন্য গত একবছর ধরে চেয়ারপারসনের কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য বা বিবৃতি নেই।

কারামুক্তির পর থেকে তিনি তার গুলশানের বাসা ফিরোজাতেই আছেন। মাঝেমধ্যে খালেদা জিয়ার ছোট ভাই, বোন, কিংবা ভাইয়ের স্ত্রী আসেন দেখা করতে। এ ছাড়া আসেন চিকিৎসকেরা। এছাড়া দলীয় নেতারাও তার সঙ্গে দেখা করেন।
চিকিৎসকেরা বলছেন, ৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, চোখের প্রদাহ, হৃদ্‌রোগ সমস্যাসহ নানা রকম শারীরিক জটিলতা রয়েছে।