অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শীতে হজমশক্তি উন্নত করার উপায়

লাইফস্টাইল ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ শনিবার  

শীত এলে অনেকেরই হজমের সমস্যা বেড়ে যায়। এ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেতে হয়। তবে কিছু খাবার আছে যা খেলে শীতকালের হজমের সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

শীতের সময়ে উষ্ণতা ধরে রাখার জন্য শীতের পোশাক, কম্বলের পাশাপাশি আমরা খাবারের ওপরেই নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। কারণ অনেক খাবার আছে যেগুলো আমাদের ভেতর থেকে শরীর উষ্ণ রাখতে কাজ করে। এসময় আমরা এমন অনেক মুখরোচক খাবারও খেয়ে ফেলি যা আসলে পেটের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নয়। এ ধরনের খাবার খাওয়ার ফলে পেট ফাঁপা, বদহজম এবং অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা দেখা দেয়। খাওয়ার অনিয়ম এবং শরীরচর্চায় আলসেমি-এই দুই মিলিয়ে শীতকালে হজমের সমস্যা দেখা দেয় অনেক ক্ষেত্রেই। কোনো কোনো খাবার ডায়েটে রাখলে হজমের সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।

শীতের মৌসুমে আপনার হজমক্ষমতা ভালো রাখার কিছু উপায় রয়েছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক-

দানাশস্য: পুষ্টিগুণে ভরা গোটা দানাশস্য ডায়েটে রাখুন সব মৌসুমেই। মেইজ, বার্লি, ওটসের মতো দানাশস্য শরীরকে উষ্ণ রাখে সব মৌসুমেই। আয়ুর্বেদশাস্ত্র অনুযায়ী, এই দানাশস্য পরিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে।

মসলা: বিভিন্ন মসলার যাদু খাবারের স্বাদ আর গন্ধ বাড়িয়ে দেয়। এগুলো আমাদের পেটের স্বাস্থ্যের জন্যও বিস্ময়করভাবে কাজ করতে পারে। আপনার শীতকালীন খাবারে মসলার ব্যবহার বাড়িয়ে দিন। সঠিক মসলার ব্যবহার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে, এমনটাই বলছেন বিশেষজ্ঞরা। আদা, হলুদ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, গোলমরিচ এবং জিরা হলো আপনার হজমক্ষমতার জন্য সেরা মসলা। এছাড়া এগুলো হরমোন স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো। তাই আপনার শীতকালীন খাবারে এ ধরনের মসলা যোগ করুন।

আখের গুড়: শীতকালীন ডায়েটে আদর্শ বলে ধরা হয় গুড়কে। আখ থেকে তৈরি গুড় পরিপাক কাজে সাহায্য করে। পাশাপাশি, আরও অসংখ্য শারীরিক সুস্থতার পিছনে সক্রিয় গুড়ের অবদান। পরিপাক সংক্রান্ত উৎসেচক উৎপন্ন করে হজমে সাহায্য করে গুড়।

গ্রীন/ ব্ল্যাক টি: হজমক্ষমতা ভালো রাখার জন্য চায়ের কাপে চুমুক দিন। এতে শীত মোকাবিলা করাও আপনার জন্য সহজ হবে। তবে দুধ চায়ের বদলে ব্ল্যাক টি বা গ্রিন টি বেছে নিন। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এই ধরনের চা পলিফেনল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা আপনার পেটের স্বাস্থ্যের জন্য দ্বিগুণ সুবিধা দেয়।

তিলের বীজ: তিলের বীজ এখন পরিচিত ‘সিসেম সিড’ নামে। শরীরকে উষ্ণ রাখার পাশাপাশি তিলবীজ মৌসুমি অসুস্থতা থেকে শরীরকে সুস্থ রাখে। তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। শীতে বিভিন্নভাবে ডায়েটে রাখুন তিল।

মৌসুমি খাবার: মৌসুমি খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই শীতকালিন সবজি ও ফল পাওয়া যায়, সেগুলো নিয়মিত খাওয়ার চেষ্টা করুন। কমলা এবং আঙ্গুরের মতো সাইট্রাস ফল ভিটামিন সি-এর দুর্দান্ত উৎস। গাজর এবং মিষ্টি আলুর মতো সবজি পুষ্টিতে ভরপুর। ব্রোকলি, মেথি, পালং শাক এবং ব্রাসেলস স্প্রাউটের মতো ক্রুসিফেরাস সবজি অন্ত্র এবং হরমোন স্বাস্থ্যে অবদান রাখে।

স্যুপ: শীতে বিভিন্ন পুষ্টিকর স্যুপ আপনার পেটের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কাজ করে। স্যুপে এসময়ের বিভিন্ন শাকসবজি এবং প্রোটিন যোগ করুন। এটি আরও সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর হবে। এই সহজে হজমযোগ্য খাবার আপনার শরীরকে উষ্ণতা দেবে, সেইসঙ্গে সঠিক পুষ্টি তো পৌঁছে দেবেই। স্যুপ কেবল পেটের জন্যই হালকা নয় বরং এটি রান্না করাও বেশ সহজ। তাই শীতের সময়ে আপনার হজমক্ষমতার জন্য সহায়ক এই খাবার খেতে হবে নিয়মিত।

আদা: ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করতে আদার ব্যবহার দীর্ঘ দিন ধরে। রান্নায় তো বটেই। হারবাল চা, খিচুড়ি আদা দিয়ে খান। শীতে প্রয়োজনীয় উষ্ণতা পাওয়া যায় আদা থেকেই। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে প্রতিদিন চুমুক দিন উষ্ণ আদা-চা বা জিঞ্জার টি-এর পেয়ালায়। বদহজম, সাইনাসের সমস্যা, মৌসুমী সর্দি-কাশি, গাঁটে যন্ত্রণার মতো সমস্যাকে দূরে রাখে আদার গুণাগুণ।