শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ || ৫ বৈশাখ ১৪৩১ || ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আমাদের দেশেই খেলোয়াড়রা বেশি অপমানিত হয়: মাশরাফি

স্পোর্টস ডেস্ক

১৬:৪৫, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

৪১১

আমাদের দেশেই খেলোয়াড়রা বেশি অপমানিত হয়: মাশরাফি

এর আগেও দলের ব্যবস্থাপনা নিয়ে মুখ খুলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। সম্প্রতি তামিম ইকবালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে সরে যাওয়া আর মুশফিকুর রহিমের টি-টোয়েন্টিতে উইকেটকিপিং না করার ঘোষণার পর আবারও মুখ খুলেছেন সাবেক অধিনায়ক। সে সঙ্গে প্রশ্ন তুলেছেন কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েও। 

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ডে দেয়া এক পোস্টে মাশরাফি লেখেন, “অফ ফর্ম সব খেলোয়াড়ের জীবনেই যায়। বাদও পড়ে। কিন্তু ম্যানেজমেন্ট থেকে অপমানিত শুধু আমাদের দেশেই বেশি হয়। পারফর্ম না করলে বাদ দিবেন স্বাভাবিক, আবার তাকে তো সহযোগিতা করতে হবে কিভাবে তাকে ফর্মে আনা যায় বা তাকে মেন্টালি কিভাবে সাপোর্ট করা যায় কোন ভাবেই আপনি বুঝতে দিতে পারেন না যে আপনি তাকে আর আপনার সময়কালে দেখতে চান না।”

এই বিষয়ে কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়াকেই বেশি প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন জাতীয় দলের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক। “এটার কারণ একটাই কোন কোচই আমাদের দেশে কাজ করার আগে আমাদের দেশের ক্রিকেট ফলোয়ার না। চাকরির জন্য আসে শেষ হলে চলে যায়।”

নিজের স্টেটাসে মাশরাফি লেখেন, 'একটা কোচ যখন নিয়োগ দেওয়া হয় তার প্রসেস আসলে কি থাকে সেটা জানার খুব ইচ্ছা আমার।

“এ যাবত কালে প্রায় ৯/১০ জন কোচের সাথে কাজ করেছি আমি যতটুকু দেখেছি প্রত্যেকটা কোচ তার নিজের মতো করে কাজ শুরু করে, যেটা করাটাও স্বাভাবিক। কারণ এক এক জনের কাজের ধরন এক এক রকম। কিন্তু সব সময় দেখেছি প্রত্যেকটি কোচ তার নিজস্ব একজন বা দুইজন প্রিয় খেলোয়াড় বানিয়ে নেয়, যা পরে সিলেক্টর, ক্যাপ্টেন বা অন্য কেউ তাকে আর কিছুই বুঝাতে পারেনা বরং সম্পর্ক গুলো জটিল হতে থাকে আর ঐ পছন্দের জন্য সে আবার দুইজনকে এমন অপছন্দ করা শুরু করে যে তাদের আর দেখতেই পারেনা। এক পর্যায়ে এমন জিদ শুরু করে যে প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দিব, এমন কথা প্রকাশ্যেও শুনেছি কয়েকবার কোচের মুখে।”

“আমার পয়েন্টটা হলো যে কোচের পছন্দ নির্দিষ্ট কিছু খেলোয়াড় হতেই পারে সেটা সব কোচেরই হয়, অন্যান্য দেশেও হয় এটাই স্বাভাবিক তবে কখন ও সেটা প্রকাশ্যে বুঝতে দেয়না, অনুমান করতে হয়। কারণ দলের সেরা ৩/৪ জন খেলোয়াড়ই শুধু ম্যাচ জেতায় না। আর জেতালেও আপনি একজনের জন্য আরেকজনকে ছোট করতে পারেন না। দর্শক বা সাংবাদিক অনেক কিছু লিখতেও পারে বলতেও পারে যেটা একদম নরমাল ব্যাপার। ”

“কোচকে বলা হয় (ফাদার অফ দ্যা সাইড) সে সবাইকে দেখে রাখবে, প্রয়োজনে কঠোর হবে আবার দলের স্বার্থে যাকে প্রয়োজন তাকে ব্যাবহার করবে। তার সব কিছুই হতে হবে পজিটিভ কারও প্রতি কঠোর কারও প্রতি নমনীয় এটা একরকমের বৈষম্যতে রূপ নেয় আমাদের দেশে। যা গোছানো দলকে অগোছালো করে ফেলে।” 

“এক পর্যায়ে তারা আবার নিজেদের দেশে, না হলে আইপিএল বা আরও ভালো কোন অফার পেয়ে চলে যাবে কারণ এতো দিনে সে আমাদের দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে অনেক এক্সপেরিমেন্ট করে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়েছে নিজের প্রোফাইলও ভারি করেছে মাঝখান দিয়ে। আর বেতন তো নিয়েছে মাসে ১২/১৫ লাখ টাকা। আর আমাদের কোচগুলো না খেয়ে মরে। গালিও দেখি আমাদের কোঁচরাই হজম করে। আর পরে ওনারা চলে গেলে আমরা পড়ি বিপদে আবার নতুন কোচ নতুন পরীক্ষা নতুন দাবি মেটানো। এভাবেই চলছে বাংলাদেশে কোচদের যাওয়া আসা।”

“এবার আবার আসি আমার প্রথম লাইনটায়, কোচ নিয়োগের সময় যে নতুন কোচের ইন্টার্ভিউ নেওয়া হয় সেখানে আসলে তাকে কি প্রশ্ন করা হয়? বা আদৌ কি করা হয় কোন প্রশ্ন? নাকি শুধু জানতে চাওয়া হয় তোমার কি করার ইচ্ছা -হয়তো তখন সে কিছু পয়েন্ট তুলে ধরে ওখান থেকে নতুনত্ব কিছু পেলে চিন্তা করে দারুণ কোচ কি সুন্দর প্লান এর মতো কোচই হয়না।”

“আমার তো মনে হয় ভুল ওখানেই হয়ে যায় কারণ আমরা মানুষকে বোঝাতে সব সময় হাই-প্রোফাইল কোচ খুঁজি যা পরে আর কোন কাজে আসেনা। আমাদের প্রয়োজন আমাদের ক্রিকেট যে ফলো করে বা আমাদের ম্যাক্সিমাম খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে স্টাডি করে এসে ইন্টার্ভিউ দিচ্ছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমাদের সংস্কৃতি সম্পর্কে নুন্যতম ধারনা নিয়ে আসা। তা না হলে -ও তো বুঝবেই না একজন সাকিব, তামিম, মুশফিক, রিয়াদ তৈরি করতে কতো দিন লেগেছে। বা অতীতে তাদের অবদান কি। একজন মুস্তাফিজ কিভাবে উঠে এসেছে। বার বার বলেছি আবারও বলছি দলের আগে কখনোই কোন খেলোয়াড় হতে পারে না। ভালো না করলে বাদ পড়তেই হবে।”

সমস্যার সমাধান হিসেবে মাশরাফি বলেন, আমার মনে হয় হাই প্রোফাইল নয়, আমাদের প্রয়োজন, আমাদের কোচ, বাংলাদেশের কোচ, একদম নিজস্ব মতামত আপনাকে মানতে হবে তা বলিনি।'

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)
Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank