বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ || ১২ বৈশাখ ১৪৩১ || ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মুজিববর্ষে দুই বাংলার আলাপন

বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেয়েছিলেন

নিউজ ডেস্ক

১৯:১৬, ১৬ জানুয়ারি ২০২১

৭৫৪

মুজিববর্ষে দুই বাংলার আলাপন

বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ চেয়েছিলেন

বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে অনন্য একটি দেশ, যে দেশ নিজের স্বাধীনতার জন্য এতটা রক্ত দিয়েছে। যে রক্তপ্লাবিত ভূমির ওপর দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এসে বাংলাদেশকে আজ  গন্তব্য ঠিক করতে হচ্ছে অসাম্প্রদায়িকতার। অথচ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্যই ছিলো অসাম্প্রদায়িকতা। জাতির বঙ্গবন্ধুর চাওয়া ছিলো বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি ভাবগতভাবে অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে। কিন্তু সেই রাষ্ট্র এখনো কায়েম হয়নি। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে ১৪ই জানুয়ারি রাতে দুই বাংলার আলোচকদের অংশগ্রহণে স্মরণাঞ্জলিতে বক্তাদের মুখে ঘুরেফিরে এসেছে এই বক্তব্য। 

‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ: এপার বাংলা ওপার বাংলা’ শীর্ষক এই আলাপনটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ সময় রাত নয়টায় এবং ভারতীয় স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে আটটায়। আন্তর্জাতিক অন্তর্জাল আলাপনটি ‘অপরাজেয় বাংলা’র ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভ সম্প্রচারিত হয়।

আলাপনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও সমকালীন রাজনীতি বিশ্লেষক অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমরা সময় দিইনি। একটি দেশকে স্বাধীন করার জন্য তাঁকে যোগ্য নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছি কিন্তু অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য তাঁকে আমরা সুযোগ দিইনি। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া স্বপ্নের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করছেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।

কলকাতা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের সিনিয়র মিডিয়া এডুকেটর্স স্নেহাশিস সুর বলেন, ‘বাংলাদেশ মানে আমাদের কাছে ভিনদেশ নয়, বাংলাদেশ ভাষাগতভাবে পশ্চিমবাংলার ঘনিষ্ট। মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় সাংবাদিকদের মধ্যে কলকাতার সাংবাদিকদের অবদান ব্যাপক। এমনকি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের দুই প্রাক্তনী রণাঙ্গণের সংবাদ লিখে পাঠাতে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধকালে নিঁখোজ হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রক্তঋণের অংশীদার ভারত ও বাংলাদেশ যৌথভাবে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ সাংবাদিকদের নামের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ওই দুই সাংবাদিকের নাম রাখারও আহ্বান জানান তিনি।

অন্যতম আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. কামরুল হুদা বলেন, মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে কেবল ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়নি, আমাদের সামগ্রিক অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষশক্তি দীর্ঘদিন পর ক্ষমতায় এলেও বাংলাদেশ পুরোপুরি রাহুমুক্ত হয়নি। এজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র অক্ষুন্ন রাখতে রাজনীতি ও সমাজে অসাম্প্রদায়িকতার চর্চার বিকল্প নেই। 

কলকাতার সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামনিস্ট সুমন ভট্টাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের নয়। ভারতের জাতীয় রাজনীতিতে কিংবা উপমহাদেশের রাজনীতিতেও আজ বঙ্গবন্ধুর প্রাসঙ্গিকতা টের পাওয়া যায়। আমরা কলকাতা থেকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষ্যে ‘এপারের চোখে মুজিব’ বই প্রকাশ করেছি, যে বইতে ভারতবর্ষের ৩৬ জন লেখক এবং ৫ জন প্রবাসী বাংলাদেশি বুদ্ধিজীবীর নিবন্ধ রয়েছে। মুজিব মানেই আমাদের কাছে আবেগ। আর এই আবেগকে শ্রদ্ধার্ঘ দিয়ে প্রতিবেশী রাজনীতিক, কূটনীতিক, সাংবাদিক, নাট্যকার, কবি বা অধ্যাপকরা মুজিবের অবদানকে মূল্যায়ন করেছেন আমাদের বইতে।

স্বাগত বক্তব্যে ‘অপরাজেয় বাংলা’র সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সারা দেশে নানামাত্রায় আলোচনা হচ্ছে এবং আরো হবে। তবে স্বাধীন বাংলা বা বঙ্গবন্ধু এই নামের সঙ্গে ভারত তথা কলকাতা প্রসঙ্গ এসেই যায়, আসতে হবে। বাংলাদেশ তা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করে। তিনি বলেন, এরকম আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে ‘অপরাজেয় বাংলা’ গৌরবান্বিত বোধ করে। দেশকে সঠিক পথে রাখতে গণমাধ্যমের বিকশিত রূপ দরকার। সেই প্রচেষ্টায় ‘অপরাজেয় বাংলা’র যাত্রা শুরু। 

দুই ঘণ্টাব্যাপী এই অন্তর্জাল আলাপনের সঞ্চালনা করেন ‘ইন্দো-বাংলা মিডিয়া এডুকেটর্স নেটওয়ার্ক’র সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজীব নন্দী। 

প্রসঙ্গত, দুই বাংলাতেই বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর কর্মসূচি উদযাপন করা হচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ,  জেলা  ও  ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত  বছরব্যাপী সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন নানান কর্মসূচি নিয়ে উদযাপন করছে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত (২০২০-২১ সাল) মুজিব বর্ষের এই অন্তর্জাল আলাপনের আয়োজক ‘ইন্দো-বাংলা মিডিয়া এডুকেটর্স নেটওয়ার্ক’। এই নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ-ভারত দু’দেশের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতার শিক্ষক, সাংবাদিক, গবেষক, মিডিয়া এডুকেটর্সদের (নিরীক্ষাধর্মী তৎপরতা) প্ল্যাটফর্ম।

Kabir Steel Re-Rolling Mills (KSRM)

আরও পড়ুন

Rocket New Cash Out
Rocket New Cash Out
bKash
Community Bank
বিশেষ সংবাদ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত