অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জানালেন কৃষিমন্ত্রী

শতকরা ৬৪ ভাগ বোরো কাটা শেষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:৫২ পিএম, ১১ মে ২০২১ মঙ্গলবার  

এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা

করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলমান লকডাউনের মধ্যেও এ পর্যন্ত সারা দেশের ৬৪ ভাগ বোরো ধান কাটা শেষ করা গেছে। বাকি ধান কাটা শেষ হবে চলতি মাসেই।

মঙ্গলবার (১১ মে) সচিবালয়ে বোরো ধানের উৎপাদন নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, ‘গতকাল পর্যন্ত ৬৪ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। এ মাসের মধ্যেই অবশিষ্ট ৩৬ ভাগ বোরো ধান কর্তন সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়।’

মন্ত্রী জানান, গত বছর এই সময় পর্যন্ত সারা দেশের মাত্র ৩৩ ভাগ ধান কর্তন সম্ভব হয়েছিল৷ ধানকাটা মেশিন দ্রুত মাঠে দেয়া এবং সরকারি তত্ত্বাবধানে শ্রমিকের সময়মত যাতায়াত সুগম করার ফলেই এ বছর দ্রুততার সঙ্গে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে।

হাওরের সাতটি জেলায় এবার ধান কাটার জন্য ৪৯ হাজার ১০৮ জন বহিরাগত শ্রমিক নেয়া হয়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘হাওরভুক্ত সাতটি জেলায় এ বছর বোরো আবাদ হয়েছে ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে, যা দেশের মোট আবাদের প্রায় ২০ শতাংশ।’

কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এবার শুধু হাওরে বোরো আবাদ হয়েছে ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে, যা দেশের মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় ৯.২৫ শতাংশ। সারা দেশে এ বছর ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

গত বছরের মতো এ বছরও করোনাকালে কৃষকেরা হাওরের ধান সফলভাবে ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও স্বস্তির বিষয়।’

গতবারের তুলনায় এ বছর ১ লাখ ২৯ হাজার ৩১৩ হেক্টর বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে জানান কৃষিমন্ত্রী। গত বছর আবাদ হয়েছিল ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ৪৪৭ হেক্টর জমিতে; এ বছর আবাদ হয়েছে ৪৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে।

উৎপাদনশীলতার জন্য হাইব্রিড জাতের ধানের চাষ বাড়ানোয় এ বছর জোর দেয়া হয়েছিল বলেও জানান মন্ত্রী। আর তাই গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩ লাখ ২৭ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রিডের আবাদ বেড়েছে বলে দাবি তার।

কৃষিমন্ত্রী জানান, হাইব্রিড ধানের আবাদ বাড়াতে ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭০ জন কৃষককে ২ লাখ হেক্টর জমি আবাদের জন্য ৭৬ কোটি টাকার হাইব্রিড ধানের বীজ বিনামূল্যে দেয়া হয়।

উচ্চফলনশীল ধানের প্রচলন ও সম্প্রসারণে উৎপাদন বেড়েছে জানিয়ে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘জনপ্রিয় জাত ব্রি-২৮ বা ব্রি-২৯ এর চেয়ে কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এবং বাংলাদেশের মাটিতে পরিক্ষীত জাত যেমন ব্রি-৮১, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২ জাতের সম্প্রসারণ এ বছর বেশি হয়েছে।

‘এ বছর বোরোতে ২ কোটি ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আমাদের। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১ কোটি ৯৬ লাখ টন। এখন কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আঘাত না আসলে বোরো ধান উৎপাদনে আর কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশা করা যায়।’

গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ১০ লাখ টন ধান উৎপাদন বেশি হবে জানিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘দেশের কৃষক, মানুষ সবাই খাদ্য উৎপাদন নিয়ে স্বস্তিতে আনন্দে ঈদ করতে পারবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ বছর হিট শকের মত আকস্মিক দুর্যোগে (৪-১১ এপ্রিল পর্যন্ত) মূলত ছয়টি জেলার (কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ এবং গোপাললগঞ্জ) বোরো ফসল আক্রান্ত হয়।

সরেজমিনে পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে মোট ক্ষতিগ্রস্ত জমি পাওয়া য়ায় ২১ হাজার ২৯২ হেক্টর, যা মোট ফসলের ০.৪৪ শতাংশ। এতে চালের উৎপাদন ৯৫ হাজার ৯৩৪ মেট্রিক টন কম হতে পারে বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১ লাখ ২ হাজার ১০৫ জন কৃষককে জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা হারে নগদ সহায়তা প্রদান শুরু হয়েছে। এতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।’