অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

৩২ বছর একাকী কাটানোর পর দ্বীপ ছাড়ছেন ইতালির ‘রবিনসন ক্রুসো’

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ২ মে ২০২১ রোববার   আপডেট: ০৫:৪৫ পিএম, ২ মে ২০২১ রোববার

ইতালির সার্ডিনিয়ার উপকূলের একটি দ্বীপে দীর্ঘ ৩২ বছর একমাত্র বাসিন্দা হিসেবে বসবাস করেন মুরো মোরান্দি। কিন্তু কর্তৃপক্ষের চাপের মুখে এখন বুদেল্লি নামক দ্বীপটি ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন ইতালির রবিনসন ক্রুসো হিসেবে পরিচিতি পাওয়া এই ৮১ বছর বয়সি বৃদ্ধ।

১৯৮৯ সাল থেকে এই দ্বীপে একাকী বসবাস করছেন অবসারপ্রাপ্ত শিক্ষক মুরো মোরান্দি। বিদায়ের খবর ফেসবুকে জানিয়ে রবিবার (২ মে) তিনি লেখেন, আশা করছি বুদেল্লি রক্ষা পাবে যেমনটা ৩২ বছর ধরে আমি করেছি। 

ইতালি থেকে পলিনেশিয়ায় যেতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে বুদেল্লি দ্বীপের সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে তিনি এখানেই থেকে যান। দ্বীপে আসার কিছুদিন পরই তিনি প্রাক্তন তত্ত্বাবধায়কের কাছ থেকে এর দায়িত্ব বুঝে নেন। 

পরবর্তীতে ২০১৫ সালে এই দ্বীপের মালিকানা নেয় লা মাদাডালেনা পার্ক কর্তৃপক্ষ। তখন থেকেই মালিক পক্ষের সাথে জোরাজোরি করে কয়েকবছর দ্বীপটিতে কাটান মোরান্দি। কর্তৃপক্ষ জানায়, এই দ্বীপে থাকার তার কোন আইনত অধিকার নেই আর তার বাড়িটি দ্বীপের সৌন্দর্য বর্ধনে বাধা সৃষ্টি করে। 

এর আড়ে গতবছর তাকে দ্বীপ ছেড়ে দেয়ার কথা হলে সিএনএন ট্রাভেলের কাছে মোরান্দি জানান, আমি এখানে থাকতে যা করা দরকার করবো। আমি অন্য কোথাও থাকার বিষয়ে চিন্তাও করি না। কখনই আমি ইতালি ফিরে যাব না। বাকি জীবন কার্ড খেলে কাটিয়ে দিতে চাইনা। 

তিনি আরও বলেন, আমি এখানের সব জঞ্জাল পরিস্কার করেছি এবং রাতে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের বাধা দিয়েছি। সত্য কথা হলো আমি একমাত্র ব্যক্তি যে বুদেল্লির যত্ন নিয়েছি। 
এ ঘটনায় তার শুভাকাঙ্খিদের কাছে থেকে প্রচুর সমর্থন পান মোরান্দি। তাকে দ্বীপে রাখার জন্য একটা অনলাইন আবেদন রাখা হয় যেখানে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ সাক্ষর করে। 

এবার তাকে দ্বীপ ছাড়তে হচ্ছে। তবে কোন শহরে ফিরে যাবেন না বলে ইতালির রবিনসন ক্রুসো তার পোস্টে লেখেন, আমাকে সার্ডিনিয়ার অন্য কোন দ্বীপ থেকে ছবি আপলোড দিতে দেখা যাবে। 

২০২০ সালের জানুয়ারিতে লা মাদালেনা পার্কের সভাপতি ফ্যাবরিজিও ফোনেসু জানান,  মুরোর কুঁড়েঘরসহ দ্বীপের অভ্যন্তরে থাকা সব স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। কেউ তাকে তাড়িয়ে দিতে চায় না। তবে দ্বীপটি ব্যক্তিগত না থাকায় তাকে কীভাবে তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে রাখা যায়? ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয় তাকে আমরা বিবেচনা করা হবে।