অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মাল্টা চাষে ভাগ্য ফেরানোর আশা নুরুল হকের

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ০১:৩৩ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০১:৩৬ পিএম, ১৫ এপ্রিল ২০২১ বৃহস্পতিবার

ঢাকায় থাই পেয়ারার চড়া দাম দেখে নিজেও বাগান করেন লালমিনরহাটের কালীগঞ্জের চাষী নুরুল হক। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে নষ্ট হয়ে যায় তার পুরো বাগান। ক্ষতি হয় ৪০ লাখ টাকা। তবে থেমে থাকেননি তিনি। ভাগ্য ফেরাতে মাল্টা ও কমলা চাষে স্বপ্ন বুনেন নুরুল হক। 

অথচ তার কর্মজীবন শুরু অন্যের বাগান করিয়ে। কাজীরহাট বানীননগর এলাকায় ১৯৯৪ সালে বাড়ির সামনে নার্সারী গড়েন নুরল হক। তার নার্সারীর চারা নিয়ে অনেকের ভাগ্য ফিরলেও নিজের অবস্থা ছিল একই। 

২০১২ সালে ঢাকায় গিয়ে নুরুল হক দেখতে পান থাই পেয়ারার কেজি ২০০ টাকা। প্রথমে এক নার্সারী থেকে বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন নিজের নার্সারীতে। সেখানে সফল হয়ে বাণিজ্যিক চাষে যান তিনি। স্থানীয় ধান চাষিদের জমি বছরে বিঘা প্রতি ১২ মণ ধানের বিনিময়ে লিজ নিয়ে থাই পেয়ারার বাগান তৈরী করেন। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগে সব হারান নুরুল হক। 

কিন্তু থেমে থাকেননি তিনি। ২০১৭ সালে আবারও লিজকৃত ১১ একর জমিতে মাল্টা ও কমলার ৩ হাজার ৫ শত চারা লাগান। এখন সে বাগান দিয়েই নিজের উজ্জল ভবিষ্যত দেখছেন তিনি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে সবুজ রঙের কাঁচা মাল্টা। ছোট-বড় মিলে পুরো বাগানেই মাল্টার ছড়াছড়ি। প্রতি গাছে ৫০-৬০টি করে মাল্টা ধরেছে। আগামী আশ্বিন মাসের শুরুতেই মাল্টাগুলো পাকতে শুরু করবে। 

নুরুল হকের আশা, একবছরেই উঠে আসতে পারে তার বিনিয়োগের অর্থ। সে সাথে তার বাগানে কাজ করা শ্রমিকদের কর্মসংস্থান হচ্ছে বলেও খুশি তিনি। নুরুল হকের বাগানের শ্রমিক রাধা রানী, ননিবালা, জোহরা বেগম, জোবেদা বেগম জানান, সারা বছর কাজের নিশ্চয়তা থাকায় কয়েক বছর ধরে নুরল হকের বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন তারা।

কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ রবিউল হাসান বলেন, নুরুল হক এতো সুন্দর মাল্টা বাগান করে উপজেলাবাসীকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। আমি শুনেছি তার বাগানে কোন প্রকার ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। এমন সুন্দর বাগান এ অঞ্চলে মাল্টা উৎপাদনে অনেককেই উৎসাহিত করবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’