অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পুরুষের সমান কাজ করেও মজুরি বৈষম্যের শিকার নারীরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লালমনিরহাট 

প্রকাশিত: ১১:২৪ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ১১:৩৩ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার

একসময় নারীদের বাইরে কাজ করার রেওয়াজ ছিল না লালমনিরহাটে। বর্তমানে সে চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। পুরুষদের পাশাপশি নারীরাও সমানভাবে কাজ করেছেন ক্ষেতে কিংবা চাতালে। তবে নারীরা সমপরিমাণ পরিশ্রম করলেও হচ্ছেন বৈষম্যের শিকার।

কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা গ্রামে ধান ক্ষেত নিড়ানি কাজের পাশা পাশি তামাকের কাজ করছেন জহিরন বেগম ও শান্তি বালা। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বাহে দলবেঁধে গ্রামের ক্ষেত-খামারে কাজ করি। এ অঞ্চলের নিয়ম অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গৃহস্থের (জমি মালিক) জমিতে নানা ধরনের কৃষি কাজ করতে হয়। গৃহস্থরা আমাদের মজুরি দেয় মাত্র ২০০ টাকা। অথচ একই কাজে পুরুষ শ্রমিকদের দেয়া হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা।

 পাটগ্রাম উপজেলায়ও সহস্রাধিক নারী শ্রমিক রয়েছেন। তারা পাথর ভাঙার মতো কঠিন কাজে নিয়োজিত। কিন্তু পুরুষের তুলনায় প্রতিনিয়ত মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন তারা। কথা হয় পাথর শ্রমিক মফিজন বেওয়া ও মরিয়ম বেওয়ার সঙ্গে। তারা বলেন, পুরুষের পাশে বসে সমান কাজ করি। কিন্তু সমপরিমাণ কাজ করেও পুরুষের সমান মজুরি পাই না। নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নারী-পুরুষের মধ্যে মজুরি বৈষম্যের কথা স্বীকার করে কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের কৃষক মনছুর মিয়া বলেন, ‘নারীরা পুরুষের সমান কাজ করে সেটি সঠিক। কিন্তু পূর্ব থেকে বাজার যেভাবে চলে আসছে ঠিক সেভাবে দেওয়া হচ্ছে মজুরি। হঠাৎ করে তো বাড়ানো যাবে না’।
কালীগঞ্জ উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজনীন রহমান জানান, নারীরা প্রতিটি ক্ষেত্রে মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। বন্ধ হোক নারীর প্রতি অবিচার এবং সমাজের প্রত্যেকটি নারী পাক তার যথার্থ সম্মান, অর্জিত হোক নারী অধিকার। কর্মক্ষেত্রে কিংবা নিজ ঘরে রয়েছে তাদের অবদান। নারীরা পুরুষের সমান কাজ করেও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও কাজের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করতে পারলে পুরুষের মতো তারাও কৃষিক্ষেত্রসহ সমাজের নানা কাজে ব্যাপক ভূমিকা রাখেতে পারবে। তাতে একদিকে বেকার সমস্যার সমাধান হবে অপরদিকে নারী পুরুষ মিলে দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নেয়া সহজ হবে।