আর্থিক ক্ষতি আর হতাশায় শেষ হলো করোনাকালের বইমেলা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১২:২৬ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার আপডেট: ১২:৩৪ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার
আর্থিক ক্ষতি আর হতাশায় শেষ হলো করোনাকালের বইমেলা
কম বই প্রকাশ, আর বিপুল অঙ্কের ক্ষতি নিয়ে মেয়াদের দুদিন আগেই শেষ হলো অমর একুশে বইমেলা। সোমবার (১২ এপ্রিল) কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন ছাড়াই মেলা শেষ হয়েছে। অন্যান্য বছরের শেষ দিনের মতো এবারে হয়নি কোনো সমাপনী অনুষ্ঠান।
আগেই একাডেমির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল, করোনা পরিস্থিতির অবনতির কারণে ১৪ এপ্রিলের বদলে ১২ এপ্রিল শেষ হবে মেলা। শেষ দিনে নির্ধারিত সময়ের পরও মেলার মাঠে অনেক মানুষ দেখা গেছে। বেলা শেষে মেলার তথ্য কেন্দ্র থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হয় স্টল বন্ধ করার জন্য। তাই বিকেল চারটা থেকে রীতিমতো স্টল–প্যাভেলিয়ন ভাঙার কাজ শুরু হয়ে যায়।
মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, করোনা পরিস্থিতির কারণে সমাপনী অনুষ্ঠান করা হয়নি। বই বিক্রির কোনো হিসাবও জানায়নি বাংলা একাডেমি। এবার নতুন বই প্রকাশ হয়েছে ২৬৪০টি। গতবার নতুন বই প্রকাশের সংখ্যা ছিল ৪৯১৯টি।
প্রকাশক নেতারা বলেছেন, এবারের মেলায় ৪১৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে।স ব মিলিয়ে প্রকাশকেরা প্রায় ১০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করেছেন। মেলা থেকে তাদের এই বিনিয়োগের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ উঠে আসে এবং বাদবাকি টাকা সারা বছরের বিক্রি থেকে আসে।
এবার মেলায় বিক্রি একেবার তলানিতে ঠেকেছে। আর করোনার কারণে মেলার পরও বিক্রি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। গত বছরের মেলার পর থেকেই সৃজনশীল বইয়ের বিক্রি কমে গেছে। তারা আশা করছিলেন, এবারের মেলায় কিছুটা হলেও ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন। কিন্তু তা হয়নি।
প্রকাশকেরা তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছেন, নগদ আর্থিক সহায়তা তারা চান না। এর বদলে সরকার যদি ১০০ কোটি টাকার বই কেনার জন্য বিশেষ বাজেট করে এই ৪১৩টি প্রতিষ্ঠান থেকে মানসম্মত বই কেনে, তবে প্রত্যেকেই তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবেন। পাশাপাশি তারা সহজ শর্তে ঋণ প্রদানেরও আবেদন জানান।
এবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সেরা স্টলের পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। প্যাভেলিয়নে সেরা পুরস্কার পেয়েছে কথাপ্রকাশ, দুই ইউনিটের স্টলের জন্য সংবেদ এবং এক ইউনিটের স্টলের জন্য পুরস্কার পেয়েছে উড়কি।
এবারের মেলায় নতুন বই প্রকাশ হয়েছেন ২৬৪০টি। এর মধ্যে গল্প ৩৩৯টি, উপন্যাস ৪০৫, প্রবন্ধ ১৫৮, গবেষণা ৪৭, ছড়া ৫২, শিশুসাহিত্য ৪১, জীবনী ৮৩, রচনাবলি ১৬, মুক্তিযুদ্ধ ৮২, নাটক ১৩, বিজ্ঞান ৪২, ভ্রমণ ৩৪, ইতিহাস ৬০, রাজনীতি ১৬, স্বাস্থ্য ১২, বঙ্গবন্ধু ৫৫, রম্য/ধাঁধা ১৪, ধর্মীয় ৩৫, অনুবাদ ৩০, সায়েন্স ফিকশন ২১টি এবং অন্যান্য বই এসেছে ১৮৯টি।
অন্যান্য বছর মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা জানালেও, এবার সেটি করা হয়নি।