অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পাবনায় চলছে কোচিং সেন্টার

রিজভী রাইসুল ইসলাম, পাবনা

প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২১ রোববার  

করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি ও উপসর্গ নিয়ে পাবনায় একাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও কোন ভাবেই সচেতন হচ্ছেন না পাবনাবাসী। শপিং মল, চায়ের দোকানের অযথা ভীড় বাড়ানোর পাশাপশি  গোপনে খোলা রয়েছে কোচিং সেন্টার গুলোও। এসব কোচিং সেন্টারে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি। এ ধরণের অবহেলার করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ মাত্রায় বাড়তে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

সরেজমিনে রবিবার (১০ এপ্রিল) সকালে পাবনা জেলা স্কুল এলাকায় গিয়ে দেখা যায় খোলা রয়েছে ওয়াজেদ গণিত কোচিং, শরিফ ইংলিশ টিচিং হোম, ইছামতী কোচিং সেন্টারসহ বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার। 

স্থানীয়রা জানালেন, গত প্রায় এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এসব কোচিংয়ে পড়াচ্ছেন কোচিং সেন্টারের মালিকেরা। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যাচ করে পড়ানো হচ্ছে। প্রতি বেঞ্চে সাত আট জন করে ঘেঁষাঘষি করে বসে পড়ছে শিক্ষার্থীরা । স্বাস্থ্যবিধি তো দূরের কথা অনেকে পরেনি মাস্কও।

গণমাধ্যম কর্মীদের দেখে কোচিং সেন্টার খোলা রাখার কথা অস্বীকার করলেও একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের কথার গরমিলে তা স্বীকার করেন কোচিং সেন্টার মালিকরা। এ সময় অভিভাবকদের চাপে কোচিং খোলা রেখেছেন, লক ডাউন শিথিল এমন নানা ধরণের উত্তরও দেন তারা।

ওয়াজেদ কোচিং সেন্টারের পরিচালক ওয়াজেদ বলেন, নিষেধাজ্ঞা চললেও শিথিল থাকায় বাচ্চাদের পড়াচ্ছিলাম। কঠোর লকডাউন হলে পড়াবো না। বাচ্চারা সংক্রমিত হলে তার দায় নেবেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ভুল হয়েছে।

শরিফ ইংলিশ কোচিং সেন্টারের পরিচালক শরিফ বলেন, আমাদের বিকল্প আয়ের উৎস নেই। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাধ্য হয়েই বাচ্চাদের পড়াচ্ছিলাম। তবে, কঠোর লকডাউনে কোচিং খোলা থাকবে না।

এদিকে, শিক্ষকরা পড়াচ্ছেন বলেই বাচ্চাদের কোচিংয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক। তিনি বলেন, কিছু অসচেতন অভিভাবককে ডেকে তাদের বাচ্চাদের নিয়ে পড়ানো শুরু করেছেন স্যারেরা। বাচ্চা পিছিয়ে পড়বে ভেবে পড়াতে এনেছি। বিষয়টি ঠিক হয়নি।

পাবনার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডাঃ আবু জাফর বলেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ের করোনায় কিশোর তরুণরা বেশী আক্রান্ত হচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এমন পরিস্থিতিতে যেকোন মূল্যে জন সমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। বাচ্চারা যেহেতু দুরন্ত প্রকৃতির, তাদের প্রতি বাড়তি নজর দেয়া প্রয়োজন।

সরকারী নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কোচিং সেন্টার ও বেসরকারী স্কুল খোলা রাখলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ।  তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল ও কোচিংয়ে পাঠদানের সুযোগ নেই, প্রশাসন বিষয়টি মনিটরিং করছে। এরপরেও গোপনে অনেকে কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। ধরা পড়লে ভ্রাম্যমান আদালতে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।