অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কিছুটা সমারসেট মম...

   মালেকা পারভীন 

প্রকাশিত: ১১:৫৮ এএম, ৬ মার্চ ২০২১ শনিবার   আপডেট: ১২:২৭ পিএম, ৬ মার্চ ২০২১ শনিবার

ইন্টারমিডিয়েট এর ইংরেজি সিলেবাসে যে কয়টি গদ্য-পদ্য ছিল, পাঁচটি গদ্য আর দশ-পনেরটি পদ্য (সঠিক সংখ্যাটা ভুলে গেছি), বলতে গেলে দুয়েকটা ছাড়া সবগুলিই আমার প্রায়/হুবহু মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল। এর একটি কারণ হতে পারে সংখ্যার স্বল্পতা আর অন্যটি নব-তারুণ্যের প্রাণশক্তিতে ভরপুর উর্বর মস্তিষ্কের ভীষণ চালু, একটিভ অর্থে, ফটোগ্রাফিক মেমোরি।  

এই ফটোগ্রাফিক মেমোরি শব্দগুচ্ছটি আমি প্রথম শুনি কলেজ পাশ করে অনার্সে পড়ার সময় তখনকার এক বান্ধবীর বাবার কাছে। বলা নিষ্প্রয়োজন, মোটামুটি যেকোন কিছু, বিশেষ করে পড়ালেখার বিষয়বস্তু, আমি খুব ভালোভাবে মনে রাখতে পারি বা অনেক পুরনো কোন ঘটনা দিন-তারিখ-ক্ষণসহ উল্লেখ করতে পারি এরকম এক আলোচনায় তিনি এটি ব্যবহার করেছিলেন। তখন পর্যন্ত অপরিচিত শব্দটি স্বাভাবিকভাবে আমার মগজে গেঁথে গিয়েছিল।

যেকোন নতুন মনকাড়া বা হৃদয়নাড়া শব্দ শোনার সাথে সাথে আমার ভেতরে এক অপার্থিব, ব্যাখ্যাতীত তীব্র আনন্দের অনুভব হয়। আবশ্যিকভাবে সেই ঝকঝকে আনকোরা শব্দের সাথে পরিচয়-পর্বের ইতিহাস বা পটভূমি আমার মনের সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ গাছের মতো শিকড় গজিয়ে স্থায়ী আসন বা আবাসন গড়ে নেয়। নদীতে লবণ পানির জোয়ারের সময় ম্যানগ্রোভ শ্রেণির বৃক্ষের শিকড় যেমন, যাদের শ্বাসমূল নামে দারুণ সুন্দর একটি নাম আছে, শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার জন্য মাটি ফুঁড়ে উপরে ওঠে, আমার ভালো লাগার শব্দগুলির ইতিহাস-পর্বও তেমনি উপযুক্ত প্রেক্ষাপটে উল্লেখের অপেক্ষায় থাকে মাত্র। আমি তাদের ভুলে যেতে পারিনা বা যাইনা। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্মৃতি-হারানির প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে তার শারীরিক কার্যক্রম শুরু করে দিলেও অন্তত এ বিষয়ে এখনো আমার ফটোগ্রাফিক মেমোরির পুরোটাই কার্যকর থেকে কিছু আনন্দ বোধের উপলক্ষ হবার ব্যবস্থা করে রেখেছে। 

যা বলছিলাম, কলেজে ইন্টারমিডিয়েটের ক্লাসে ইংরেজি সিলেবাসের কথা। সেই সময়ের খুলনায় ইংরেজির বিখ্যাত শিক্ষক অধ্যাপক শামীম খান স্যারের কাছে তাঁর বাসায় গ্রুপে প্রাইভেট পড়তে গেলাম। স্যারের পড়ার ধরন ছিল, তিনি প্রথমবার প্রতিটি গদ্য পড়ার সময় আমাদের হাতে ধরা পেন্সিল দিয়ে ভারব এর পরে ব্যবহৃত প্রিপজিশনগুলো দাগিয়ে রাখতে হতো, যাকে বলে আন্ডারলাইন করা। একটা কারণ ছিল, ইংরেজি পরীক্ষার ব্যাকরণ অংশে এ ধরণের একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। কিছুদিন পর দেখা গেলো, স্যার যখন পড়াচ্ছেন, আমি তাঁর আগেআগেই সেই অংশটুকু বলে ফেলছি। অন্যদের মধ্যে তেমন কোন স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া দৃশ্যমান না হলেও স্যারের চোখেমুখে স্মিত হাসির ছটা পরিষ্কার, কারো নির্দোষ আচরণে মজা পেয়ে প্রকাশিত অভিব্যক্তি যাকে ইংরেজিতে বলে অ্যামিউজড হওয়া বা অনুভব করা। এতে আমি আশ্বস্ত হই যে, যাক, গুরু-গম্ভীর স্যার অন্ততপক্ষে বিরক্ত হচ্ছেন না। 

পরে আমার এক স্কুলের ম্যাডামের কাছে শুনেছি, যিনি স্যারের এলাকায় থাকতেন, স্যার আমার এই বিষয়টা নিয়ে ম্যাডামকে বলেছেন, ‘ওর তো সব মুখস্থ। আমি পড়াবার আগেই সব বলে ফেলে।’ ম্যাডামের কাছ থেকে এটা জানতে পেরে খুব ভালো লেগেছিল। আজ স্যার আর ম্যাডাম কেউই পৃথিবীতে নেই। আমার সোনালি অতীতের অংশ হয়ে তাঁরা বেঁচে আছেন স্মৃতির অ্যালবামের অনেকটা জায়গা জুড়ে।

আসলে কথা হচ্ছে নদীর প্রবহমান ঢেউয়ের মতো। অনুকূল পরিবেশ পেলে পূবালী বাতাসের স্রোতে ভেসে চলে যেতে যায় দিক-বিদিক। আর সেই কথার কেন্দ্রবিন্দু যদি ব্যক্তির স্মৃতিকে ঘিরে হয়, তাহলে তাকে আর একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে ধরে বেঁধে রাখা যায়না। খুব কম মানুষই পাওয়া যাবে যে তার স্মৃতি রোমন্থনের সুযোগ পেলে প্রগলভ হয়ে ওঠেনা, ক্ষেত্র বিশেষে সেই স্মৃতির প্রকার যতই বেদনার বা কষ্টের হোক না কেন।

আমার ক্ষেত্রেও তাই এর ব্যতিক্রম হচ্ছেনা। বসেছিলাম, আমার সবচেয়ে প্রিয় বিষয় বই বা পাঠাভ্যাস নিয়ে কিছু কথা লিখবো বলে। বিশেষ করে বিভিন্ন সময় বিখ্যাত লেখকদের নানা লেখা পড়তে গিয়ে পাঠের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তাঁদের করা প্রাজ্ঞ মন্তব্যগুলো পড়ে পাঠক হিসেবে আমার ভেতরে কী ধরণের প্রতিক্রিয়া হয়েছিল সেটাই এই লেখায় সংক্ষেপে লিখতে চেয়েছি। এ প্রসঙ্গে প্রথমেই এবং সবসময় আমি যার কথা বলতে ভালোবাসি তিনি ব্রিটিশ লেখক উইলিয়াম সমারসেট মম। আর দূর অতীতের যে পর্যায়ে মমের সাথে প্রথম পরিচয় ঘটে সেটি হলো কলেজের প্রথম বর্ষে ইংরেজি ক্লাসে তাঁর বিখ্যাত ‘ দ্য লাঞ্চন’ গল্পটি পড়তে গিয়ে। 

কলেজের এক সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় গদ্য-পঠন বলে একটি পর্ব ছিল যেখানে গল্পটি থেকে নির্ধারিত কিছু অংশ সুন্দর উচ্চারণ এবং ভঙ্গিতে পাঠ করতে হয়েছিল। এর জন্য অল্প কয়েকদিনের চর্চা করতে গিয়ে শুধু পুরো গল্পটিই মুখস্থ হয়ে যায় তা নয়, একই সাথে গল্পের বিশেষ করে প্রধান চরিত্র লোভী ও চতুর মহিলাটির মুখে বলা কথাগুলো উচ্চারণ করার সময় তাতে এক ধরণের নাটকীয়তা আরোপের ঘটনাও ঘটে। অবশ্য চমৎকার বাক-শৈলী প্রদর্শনের জন্য তা দরকার ছিল বৈকি। ফলত এ পর্বের প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কারটি আমার ভাগ্যেই জুটে যায়। এ কারণেও মম এর গল্পটির প্রতি আর বেচারা গরীব লেখকটির জন্য এক বিশেষ মমতা তৈরি হয় যা আজ অবধি বিদ্যমান।   

তবে অল্প বয়সে গল্পটির মর্মার্থ হয়তো অতোটা গভীরভাবে উপলব্ধি করতে সক্ষম হইনি। পরবর্তীতে ইংরেজি বিষয় নিয়ে অনার্স পড়তে গিয়ে যে কয়েকজন লেখকের লেখার সাথে আমি নিজেকে মেলাতে বা রিলেট করতে পেরেছি, মম তাঁদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর আত্মজীবনীমূলক ধ্রুপদী উপন্যাস ‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ পড়তে শুরু করে আমি এমন এক অলৌকিক জগত বা ঘোরের ভেতরে প্রবেশ করি যে এরপর সেখান থেকে আর বের হয়ে আসা সম্ভব হয়নি। এখনও আমার নিয়মিত পাঠের আবশ্যিক অংশ হিসেবে মম কোন না কোনভাবে থেকে যান। একই সাথে ব্যক্তি মানুষটিকে জানার কৌতূহলও কোন মাত্রায় কম নয়। 
কিছুদিন আগে হঠাৎ করে মম সংক্রান্ত এক বইয়ের গ্রুপের আলোচনায় ‘আর্থলি পাওয়ারস’ শিরোনামে একটি বইয়ের কথা জানতে পারি। ১৯৮০ সালে প্রকাশিত বইটির রচয়িতা আরেক ব্রিটিশ লেখক অ্যান্থনি বারজেস। বইটির প্রধান চরিত্র লেখক মম স্বয়ং জানতে পেরে এটি সংগ্রহ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠি এবং শেষ পর্যন্ত সফল হই। বলাবাহুল্য, অ্যান্থনি বারজেস এর লেখার সাথে পরিচয় থাকলেও বিশেষ করে এই বইয়ের ব্যাপারে ওয়াকিবহাল ছিলাম না। 

যা না বললেই নয়, এ ধরণের কয়েকটি বইয়ের গ্রুপের সাথে সংযুক্ত থাকার ফলে দুনিয়ার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আমার মতো আরও অনেক বইপ্রেমিদের সাথে যোগাযোগের সুযোগ ঘটে এবং পছন্দের বই ও লেখকদের নিয়ে বিবিধ মতামত বিনিময়ের মাধ্যমে পরস্পরের জানাশোনার দিগন্ত প্রসারিত হয়। বিষয়টি আমি ভীষণ উপভোগ করি।     

তো বারজেস এর ‘আর্থলি পাওয়ারস’ বইটি নিজের সংগ্রহভুক্ত করে প্রশান্তি পাওয়ার পাশাপাশি গত কিছুদিন থেকে পড়তে শুরু করেছি বিশিষ্ট জীবনীকার সেলিনা হেস্টিংস এর লেখা মম এর জীবনীগাঁথা ‘দ্য সিক্রেট লাইভস অফ সমার সেট মমঃ এ বায়োগ্রাফি’। বইটি কিনেছি তাও কয়েক বছর হয়ে গেলো। লেখকের প্রায় দীর্ঘ একানব্বই বছরের জীবনের নানা খুঁটিনাটি তথ্যে ঠাসা সমালোচকদের প্রশংসাধন্য বইটি পড়তে গিয়ে প্রথমেই চমকে উঠতে হয় এটি জেনে যে ঔপন্যাসিক বা গল্পকার হিসেবে সফলতার আগে জনপ্রিয়তায় এবংআর্থিক দিক থেকে নাট্যকার হিসেবে মম দারুণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন। এরপরই তিনি ফিকশন অর্থাৎ কথা সাহিত্যের দিকে মনোযোগ দেন।  

‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ পড়া থাকার কল্যাণে লেখকের জীবনের প্রধান কিছু ঘটনার সাথে ইতিপূর্বে পরিচিত ছিলাম। এরপর ‘থিয়েটার’ নামে তাঁর একটি উপন্যাস পড়েও থিয়েটার এবং নাটকের সাথে লেখকের সংশ্লিষ্টতা বিষয়ে সামান্য জ্ঞান লাভ হয়েছিল। তবে সেলিনার বইটি পড়তে গিয়ে একেবারে অন্দরমহল বা গ্রিনরুম পর্যন্ত চলে যাবার সুযোগে প্রিয় লেখক সমারসেট মম সম্পর্কে এতো বিস্তারিত জানতে পারছি যে তা আমার উৎসুক পাঠক মনের তৃষ্ণা মেটাতে বেশ ভালোই কাজে লাগছে। আশা করছি, ছয়শ পৃষ্ঠার বেশি পাতার আত্মজীবনীটি পড়া শেষে আমার অনুভূতি বা পাঠ-প্রতিক্রিয়ার কথা গুটিকয়েক বাক্য-বিন্যাসের ফ্রেমে ধরে রাখার চেষ্টা করবো। 

এখন মূল কথায় ফিরে আসি। আজ থেকে কুড়ি-একুশ বছর আগে তেমন কিছু না ভেবেই শুধু পড়ার নেশায় আমি মম এর ‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ উপন্যাসটি হাতে তুলে নিই। কিন্তু তারপরই ঘটে যায় আমার তরুণ জীবনে এপিফ্যানির মতো বিশেষ এক তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা পড়া আর উল্টানোর সাথে সাথে আমার মানস-মণ্ডলে সুতীব্র এক অদ্ভুত ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে। বোধগম্য কোন ভাষার আদলে তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। কেবল এটুকু বলতে পারি, বইটি পড়া শেষ করে ওই অতি অল্প বয়সের বুঝ-বিবেচনাতেই অনুধাবন করতে পেরেছিলাম যে, এটি আমার জন্যই লেখা হয়েছে। আর তাই বইটির প্রতি বিশেষ ভালোবাসা বা মুগ্ধতার কথা আমার বিভিন্ন লেখায় ঘুরে-ফিরে চলে আসে।    
‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ উপন্যাসটি গড়ে উঠেছে ফিলিপ কেরি নামের এক সংবেদনশীল যুবককে ঘিরে যে তার জীবনে প্রতিদানহীন আর আত্ম-বিধ্বংসী প্রেমের কারণে বারবার কেবল হোঁচট খায়। খোঁড়া পা নিয়ে জন্মগ্রহণ করা আর শৈশবকাল থেকে এতিম ফিলিপ দয়া-মায়াহীন আত্মীয়দের ঘরে বড় হতে থাকে। একসময় তাকে একটি বোর্ডিং স্কুলে পাঠানো হলেও সেখানে সে ঠিক মানিয়ে উঠতে পারেনা। এভাবে ভালোবাসা, শিল্প আর জীবনের অভিজ্ঞতার জন্য তীব্র এক আকুলতা নিয়ে বেড়ে উঠতে থাকে সে। প্যারিসে শিল্পী হয়ে উঠতে না পেরে লন্ডনে এসে ফিলিপ মেডিক্যাল পড়াশোনা শুরু করে এবং মিল্ড্রেড নামে অনুভূতিশূন্য এক ওয়েট্রেস এর সাথে জীবন এলোমেলো করে দেওয়া এক তুমুল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। মম এর সমগ্র সাহিত্যকর্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে আত্মজৈবনিক উপাদানে ভরা উপন্যাসটি প্রকৃতপক্ষে ব্যক্তির আবেগের মূল্য এবং পারস্পরিক যোগাযোগের উদ্দেশ্যে সর্বজনীন আকাঙ্ক্ষার এক উজ্জ্বল, স্বতঃস্ফূর্ত এবং মানবিক চিত্রায়ন। ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম সফল উপন্যাস হিসেবে ‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ আজও স্বমহিমায় দেদীপ্যমান। বইটি সঠিক সময়ে পড়বার সুযোগ ঘটেছিল বলে নিজেকে বিশ্বসাহিত্যের পাঠক হিসেবে ভাগ্যবান মনে করি।

বর্তমান লেখাটিতে আমি বই-পড়া বা পাঠাভ্যাস সম্পর্কে ‘অফ হিউম্যান বন্ডেজ’ উপন্যাসে পাওয়া কিছু অসাধারণ উক্তির সন্নিবেশ করতে চেয়েছিলাম। কেন্দ্রীয় চরিত্র ফিলিপ কেরির মুখে উচ্চারিত এসব মূল্যবান কথা আসলে লেখক মম এর নিজস্ব অভিজ্ঞতাজাত মতামত যার সবগুলোর সাথেই আমি আত্মিক একাত্মতা অনুভব করি। উপন্যাসটি পড়তে পড়তে এরকম অনেক মন ছুঁয়ে যাওয়া বাণী আমি আমার ব্যক্তিগত ডায়েরিতে লিখে রেখেছিলাম। এখন পরিসর বড় হয়ে যাচ্ছে বলে উপন্যাসটি থেকে আপাতত শুধু একটি স্মরণীয় উদ্ধৃতি উল্লেখ করে লেখাটি শেষ করতে চাই। উদ্ধৃতিটি আগামী বইমেলায় প্রকাশিতব্য অধমের ‘আমার আছে বই’ শীর্ষক নন-ফিকশন বইয়ের উৎসর্গপত্রে ব্যবহার করা হয়েছে।

নায়ক ফিলিপ কেরি সম্পর্কে বলতে গিয়ে লেখক বলছেন, “অজান্তেই দুনিয়ার সবচেয়ে আনন্দময় অভ্যাসটি সে নিজের জন্য রপ্ত করে নিয়েছিল, পাঠের অভ্যাসঃ তার জানা ছিল না যে এভাবে সে নিজের জন্য জীবনের যাবতীয় যন্ত্রণা থেকে দূরে সরে থাকবার একটি আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে নিচ্ছে; তার এও জানা ছিল না যে এভাবে সে নিজের জন্য এমন একটি কল্পনার জগত বানিয়ে ফেলছে যেটি প্রতিদিনের বাস্তব পৃথিবীটিকে একটি তিক্ত হতাশার  উৎসে পরিণত করবে...” 

ফিলিপ কেরির বিষয়ে উল্লিখিত এই বর্ণনা কি আমার জন্য প্রযোজ্য নয়? অথবা, কে জানে, হয়তো আপনার জন্যও।