অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

হাসি ওজন কমায়

শেখ আনোয়ার

প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শুক্রবার   আপডেট: ০৪:৩৯ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ শুক্রবার

যারা নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস অনুশীলন করেন তাদের জন্য সুখবর। বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, সেন্স অব হিউমার নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি ক্যালোরি অনেকখানিই কমানো সম্ভব। তবে জিমে গেলে আপনার কোমরের মাপ যতোটা কমে আসবে হাসির কারণে তা হয়তো হবে না। কিন্তু আমেরিকান গবেষকরা দেখেছেন, নিয়মিত দশ থেকে পনেরো মিনিট হাসার পর একটি মাঝারি ধরনের চকোলেট শরীরে যতোটা বাড়তি ক্যালরি জোগায়, তা কমিয়ে দেয় হাসি। 

গবেষকরা ৪৫ জোড়া বন্ধুকে একটি ঘরে নিয়ে বন্ধ করে রাখেন। ঘরটিকে সাজানো হয় একটি সস্তা হোটেলের আকারে। বিজ্ঞানীরা এর নাম দেন মেটাবলিক চেম্বার। ওই বন্ধুদের তখন টিভিতে একটি কমেডি দেখানো হয়। পরে মেপে দেখা হয়, কমেডি দেখে হাসার পর তাদের কতটুকু ক্যালরি কমেছে? গবেষকরা তখন আলাদাভাবে সতের জোড়া ছেলেবন্ধু, সতের জোড়া মেয়ে বন্ধু অর্থাৎ চৌত্রিশজন ছেলেমেয়ে নিয়ে তাদের ওপর গবেষণা চালান। কিন্তু তাদের বলা হয়নি যে গবেষণার লক্ষ্য হচ্ছে হাসি পরিমাপ করে দেখা। কারণ এতে করে তারা জোর করে হাসার চেষ্টা করতে পারতো। আর জোর করে হাসির কাজটা নিয়ন্ত্রিত করে মস্তিষ্কের  অপর একটি অংশ। অংশগ্রহণকারীদের তখন বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপিংস দেখিয়ে তাদের আবেগের প্রতিক্রিয়া মাপা হয়। রুমটি এমনভাবে করা হয় যাতে বিজ্ঞানীরা সহজেই মাপতে পারেন, কতটুকু অক্সিজেন নিয়েছে আর কতটুকু কার্বন ডাই অক্সাইড ছেড়েছে। গবেষণাকালে এগুলোর তারতম্য মেপে দেখা হয় যে, কতটুকু শক্তি ব্যবহার হয়েছে। হাসির সময় এর আগের ও পরের সময়ের মধ্যে পার্থক্যটা কতটুকু। হৃদস্পন্দন  মেপে দেখা হয়। কেননা শ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে সঙ্গে হার্টিবিটেরও পরিবর্তন ঘটে। 

পরে হৃদস্পন্দন, হাসি ও শ্বাস প্রশ্বাস সব একসঙ্গে নিয়ে এসে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, প্রায় ২০ শতাংশ ক্যালরি কমেছে সবার। এরপরই গবেষকরা সিদ্বান্তে আসন, প্রতিদিন যদি কেউ দশ থেকে পনের মিনিট হাসেন তবে তা পঞ্চাশ এর ওপরে উঠতে পারে। তবে এটা অনেকটাই নির্ভর করে শারীরিক গঠন ও হাসির ঘনত্বের ওপর। এর মানে হচ্ছে, কেউ যদি দশ থেকে পনের মিনিট হাসে তবে বছরে তার দুই কিলোগ্রাম ওজন কমতে পারে। তবে অনেক বিশেষজ্ঞই এর বিরোধিতা করে বলেছেন, অতিরিক্ত ওজন কমার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ কোনো পদ্ধতি নাও হতে পারে। হাসির অন্য গুণও রয়েছে। যা অস্বীকার করা যায় না।

শেখ আনোয়ার: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক।