অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৪

প্রকাশিত: ০৩:৪৪ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০৪:৪৩ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২১ বৃহস্পতিবার

শঙ্কিত পদযাত্রা

ধারাবাহিক আত্মকথা

। খ ম হারূন ।

খ্যাতিমান টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব খ ম হারূন। দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সম্পৃক্ত রয়েছেন দেশের টেলিভিশন এবং মঞ্চের সাথে। বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্বর্ণময় সময়ে যে কয়েকজন নির্মাতা-প্রযোজকের নাম ছোট পর্দার কল্যাণে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে খ ম হারূন তাদের একজন। দীর্ঘ বর্ণিল ক্যারিয়ারে অসংখ্য উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন তিনি। এখনো রয়েছেন সমান সক্রিয়। দেশের গণমাধ্যম জগতের বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের আত্মকথা ‘শংকিত পদযাত্রা’ ধারাবাহিকভাবে
প্রকাশিত হচ্ছে অপরাজেয় বাংলা’য়।

[পর্ব-১৪]

আমার পিতা যে বছর মেট্রিকুলেশন পরীক্ষা দেন সেটা ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর বছর। ১৮৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত সেনহাটি হাইস্কুলের ছাত্র ছিলেন তিনি। খুলনা শহর থেকে প্রায় পাঁচ মাইল দূরে দৌলতপুরের অপর পারে ভৈরব নদীর কূলঘেঁষে সেনহাটি ছিলো অত্যন্ত সমৃদ্ধ একটি গ্রাম। হিন্দুপ্রধান এ অঞ্চলের পুরুষেরা ছিলেন প্রায় শতভাগ শিক্ষিত। এখানকার বহুজন কলকাতায় অনেক উঁচু পদে সরকারি চাকুরী করতেন। আর মুসলমানেরা তখন কেবল শিক্ষার দিকে মনোযোগী হতে শুরু করেছে।

১৯৪১ সালে আমার আব্বা ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে ২য় স্থান অর্জন করেন। ইন্টারমিডিয়েট থেকে বিএ (১৯৩৯ থেকে ১৯৪৩) এই চার বছর তিনি দৌলতপুর হিন্দু একাডেমির ছাত্র ছিলেন। একাডেমিটি সে সময়ে কলকাতা হিন্দু কলেজের একটি শাখা ছিলো, প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯০২ সালে যা পরবর্তি সময়ে আলাদা হয়ে ১৯৪৩ সালে ব্রজলাল হিন্দু একাডেমি, তারপর ব্রজলাল কলেজ এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর সরকারি বি এল কলেজে রূপান্তরিত হয়। এই কলেজটি খুলনার সব থেকে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। 

এই তথ্যগুলি আমি জানতে পারি খুলনার বাড়িতে আব্বার সার্টিফিকেটগুলো খুঁজতে গিয়ে। তিনি খুব যত্ন করে তাঁর সব সার্টিফিকেট, এ্যাডমিট কার্ড একটা ফাইলে গুছিয়ে রেখেছিলেন। ১৯৩৯ সালে তিনি যখন মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তখন তাঁর বয়স ছিলো সার্টিফিকেট অনুসারে ১৬ বছর ৩ মাস। সার্টিফিকেটে সে সময় জন্মতারিখ লেখা হতো না, বয়স উল্লেখ করা থাকতো। তখন মেট্রিক, ইন্টারমিডিয়েট, বিএ সব পরীক্ষাই তিনি দিয়েছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বিএ পরীক্ষায় আমার পিতা আলী আহমেদ খান চৌধুরী ডিস্টিঙ্কসন লাভ করেছিলেন। ফলে তাকে আর চাকুরী খুঁজতে হয়নি, বলা যায় চাকুরীই তাকে খুঁজে নিয়েছিলো যখন তিনি মাত্র ২১ বছরের যুবক।

দীর্ঘ ৩৬ বছর চাকুরী জীবনে তিনি তিনটি রাষ্ট্র - বৃটিশ ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করে ১৯৭৯ সালে ৫৭ বছর বয়সে সরকারি চাকুরী হতে অবসর নেন।

আমার ছোটোবেলা তাই কেটেছে বিভিন্ন মফস্বল শহরে। সর্বমোট আটটি স্কুলে যাবার সুযোগ হয়েছিলো। ১৯৫৮ সাল। আইয়ুব খান পাকিস্তানে ক্ষমতায় এসেছেন সামরিক আইন জারি করে। ঐ সময় আমিও স্কুলে ভর্তি হই, এর আগের স্মৃতি আমার এখন আর মনে পরে না। তখন আব্বা বাসায় দৈনিক ইত্তেফাক রাখতেন। পত্রিকা পড়তে পড়তে আমি বাংলা ভাষা রপ্ত করে ফেলি। আমার আম্মা ছিলেন খুলনা করোনেশন হাইস্কুলের ছাত্রী। তিনি নিয়মিত আমাকে কবিতা আবৃত্তি শেখাতেন। ছবি আঁকা, মাটি দিয়ে পুতুল বানানো দেখাতেন, হাতের লেখা কতোটা সুন্দর করা যায় শেখাতেন। আরেকটু বড় হলে আব্বা সাইকেল কিনে দিলেন। সেই সাইকেল নিয়ে দূরে দূরে চলে যেতাম। কোনো সুন্দর লোকেশন দেখলে তা কাগজে ধারন করার চেষ্টা করতাম। এইভাবে ভোলা, মাদারিপুর, ফরিদপুর ও মাগুরার বিভিন্ন স্কুলে পড়েছি। এক এক  অঞ্চলে আলাদা আলাদাভাবে শিক্ষাগ্রহণের ফলে নানান অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হই। কখনো ভালো, কখনো না। তবে পড়াশুনা যে আনন্দের বিষয় সেটা বুঝতে পারি আরো পরে। ছোটোবেলা থেকে কবিতা, ছবি আঁকা, শিখলেও রাজনীতি নামে যে একটা গুরুত্বপূর্ণ  বিষয় আছে তা জানতে পারি পিরোজপুর কলেজে ভর্তি হবার পর ১৯৬৮ সালে।

পিরোজপুর থেকেই ছাত্র রাজনীতি, একইসাথে নাট্যচর্চার সাথে যুক্ত হই। এজন্য আলাদা পড়াশুনা করতে হতো। পিরোজপুর কলেজে পড়ার সময় সিদ্ধান্ত নেই এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো। এবং সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে থাকি এবং ১৯৭০ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সুযোগ পাই। তবে মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় পিরোজপুর এবং তার আশেপাশের বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থানের কারনে সে সময়ে পিরোজপুরের অনেকেই মনে করতেন আমি পিরোজপুরের সন্তান।

মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আমি এর মাঝে সুন্দরবন থেকে খুলনা শহরে চলে এসেছি টুটপাড়া নানাবাড়িতে। কয়েক একর জায়গার মাঝে গাছপালা দিয়ে ঘেরা একতলা বাড়ি। বৃটিশ আমলে নানার তৈরী করা এই বাড়ি ছিলো আমাদের জন্য একটি আনন্দ আশ্রম। প্রতিবছর স্কুল ফাইনাল দেবার পর নানাবাড়ি বেড়াতে আসতাম। এবার এসে দেখি থমথমে অবস্থা। খুলনা টুটপাড়া সংলগ্ন খানজাহান আলী রোড়ের পাশে যে আনসার ক্যাম্প, তখন সেই ক্যাম্পে জামাতে ইসলামীর মওলানা ইউসুফের নেতৃত্বে রাজাকার রিক্রুটমেন্ট চলছে। সবার মাঝেই আতংক। মুক্তাঞ্চল থেকে খুলনা যাওয়া আসা তখন অনেক সহজ এবং একইসাথে বিপদজনক  ছিলো। 

নানাবাড়িতে এসে দেখি সবাই আমার নানির জন্য চিন্তিত। কারণ তিনি তখন আমার বোন রোজী ও ভগ্নিপতি রেজাউল করিমের সাথে পশ্চিমবাংলায় চলে গেছেন। একাত্তরের মার্চ মাসের মাঝামাঝি আমি নানিকে নিয়ে মেহেরপুরে গিয়েছিলাম আমার বোনের বাসায়। তাকে রেখে আমি আবার পিরোজপুর চলে আসি। রেজাউল করিম তখন মেহেরপুর বিদুৎ বিভাগের আবাসিক ইঞ্জিনিয়ার। দুবছর আগে পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে পড়াশুনা শেষ করে মেহেরপুরে পোস্টিং নিয়ে এসেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হবার পর তিনি এখানকার চৌকস সিএসপি অফিসার তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ইপিসিএস অফিসার মাহফুজ সোবহান এবং আরো অনেক কর্মকর্তা পরিবারসহ পার্শ্ববর্তী নদীয়া জেলায় চলে যান নিরাপদ আশ্রয়ে। 

আমি খুলনায় দুদিন থেকে সিদ্ধান্ত নেই ঢাকা যাবো। যুদ্ধের মাঝে বাসে করে ঢাকা যাওয়া নিরাপদ নয়। ঢাকা মিরপুরের কাছাকাছি প্রায় প্রতিদিন বাস থামিয়ে মানুষ নামিয়ে তাদের হত্যা করতো বিহারীরা। ট্রেনও অনিরাপদ। এর মাঝে আমার এক আত্মীয়কে ট্রেন থেকে নামিয়ে হত্যা করা হয়েছে কুষ্টিয়ার কাছাকাছি একটি এলাকায়। অবশেষে সিদ্ধান্ত নেই প্লেনে করে ঢাকা যাবো। বিমান ভাড়া ২৮ টাকা। যশোর ক্যান্টনমেন্টে বিমানবন্দর। খুলনা থেকে পিআইএর ডমেস্টিক ফ্লাইটের বাস সরাসরি যশোর বিমানবন্দর নিয়ে এলো।  তারপর ঢাকা। কয়েকদিন ঢাকা ছিলাম আমার এক পরিচিত ইঞ্জিনিয়ার মুখলেসুর রহমান চাচার টিকাটুলির বাসায়। বাধ্য হয়েই ছিলাম। অন্য কোথাও থাকা নিরাপদ ছিলো না। ইচ্ছা ছিলো ত্রিপুরা চলে যাবো, ছাত্র ইউনিয়নের নেতাদের সাথে কথা বলে এসেছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কলা ভবন এলাকায় আমার দুজন বন্ধুর উপস্থিত থাকার কথা, যাদের  সাথে মিলে সীমান্ত পার হবো। নির্দিষ্ট দিনে যখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এলাম তখন কলা ভবনে বোমা আতঙ্ক। বেশ কয়েকটি বোমা ফাটানোর পর সবাই যার যার মতো নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। আমি আর বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করতে পারলাম না।

সিদ্ধান্ত নিলাম পিরোজপুর ফিরে যাবো। সদরঘাট থেকে রকেট স্টিমারে করে চাঁদপুর, বরিশাল, ঝালকাঠি হয়ে হুলারহাট। স্টিমারে নিয়াজ ভাইকে পেলাম। পেলাম আরো দুজন বন্ধুকে, তারা বরিশাল পেয়ারাবাগানের দুধর্ষ যোদ্ধা। ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরের অধীনে যুদ্ধ করে বীরত্ব দেখিয়েছে, পরে যাদের আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। হয়তো যুদ্ধে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছে। নিয়াজ ভাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার দুবছরের সিনিয়র। ইকোনমিক্সে পড়তেন। পরবর্তি সময়ে আইবিএ’র প্রফেসর হয়েছিলেন। 

রাত তখন প্রায় আটটা। স্টিমার ঝালকাঠি বন্দরে ভিড়েছে। আমরা চারজন জাহাজের তিনতলার সেলুনে বসে আছি। রাতের খাবার এখানেই খাবো। এমন সময় চোখ গেলো ঘাটের দিকে। খাঁকি পোশাকে আর্মির কয়েকজনের সাথে কালো পোষাকের কয়েকজন মিলিশিয়া উঠছে জাহাজে। বিভিন্ন তলার যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে করতে তারা যে কোন সময়ে সেলুনে এসে দাঁড়িয়েছে তা লক্ষ্য করিনি।

তাঁকিয়ে দেখি আমার দিকেই তাঁদের চোখ। সামনে এসে আমার চুল ধরে দাড় করালো। অনেক দিন চুল কাটা হয়নি। পকেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড। পকেট থেকে সেটি বের করে ভালো করে দেখে। লম্বা চুল আর আইডি কার্ড দেখে তারা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করে ‘ইয়ে মুক্তি হায়’। অতএব আমাকে ধরে নিয়ে যায়। নিয়াজ ভাই এবং আমার অন্য দুজন বন্ধু চুপ করে বসে থাকে যে যার মতো। যেনো আমাকে চেনে না। 

নীচে স্টিমার ঘাটে নিয়ে আমাকে একটি সংরক্ষিত জায়গায় বসানো হয়। একজন মিলিশিয়া সারাক্ষণ আমার দিকে বেয়নেট লাগানো রাইফেল তাক করে রাখে। নিজেদের মধ্যে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেয় স্টিমার ছেড়ে দেবার পর তারা আমার মৃত্যুদন্ড কার্যকর করবে। অর্থাৎ গুলি করে নদীতে ফেলে দেবে একটু রাত হলে, অন্যান্য রাতের মতো। কথায় কথায় বুঝলাম প্রতি রাতেই বিভিন্ন সন্দেহভাজনকে এখানে এনে গুলি করে। আমি তাদের যতোই বোঝানোর চেষ্টা করি লাভ হয়না। এক পর্যায়ে আমি বলি তোমাদের ক্যাপ্টেনের সাথে আমাকে কথা বলার সুযোগ করে দাও। রাজী হয়না। দুজন সৈনিক স্টিমারের সারেংকে জাহাজ ছাড়ার নির্দেশ দেয়, কিন্তু জাহাজ চলে না। জাহাজ থেকে জানানো হয় প্রপেলারে সমস্যা হয়েছে। মেরামতের কাজ চলছে। আমি শুধু ভাবি ‘আাসছে সকালটাতো আর আমি দেখবো না। নিশ্চয়ই নিয়াজ ভাই আমার এই দুঃসংবাদটা পিরোজপুরে আমার বাসায় পৌঁছে দিতে পারবেন। তারপর কি হবে?’ আমার মা, বাবা, তিন বোন সবার কথা মনে হয়। কিন্তু নিজের মাঝে এক বিন্দু ভয়ও কাজ করে না। মনে মনে বলি, দেশতো স্বাধীন হবে। ঝালকাঠির এই স্টিমার ঘাট, এই সুগন্ধা আর ধাঁনসিঁড়ি নদী তীরে আমার শেষ রাতটার কথা হয়তো কেউ মনেও রাখবে না।

একজন সৈনিক আমাকে বেয়েনেট দিয়ে খোঁচা দিচ্ছে। আরেকজন রাইফেলের বাট দিয়ে পিঠে মৃদু আঘাত করে নানা কথা জানতে চাইছে। তারা যথেষ্ট বিরক্ত। আমার একই কথা তোমাদের ক্যাপ্টেনের কাছে নিয়ে চলো সেখানেই সব বলবো।

কখন যে রাত অনেক গভীর হয়ে গেছে। এমন সময় পাজামা পান্জাবী পরা এক ভদ্রলোক জাহাজ থেকে নেমে এলেন। তিনি এসেই সৈনিকদের কাছে নিজের পরিচয় দিলো। আমি দেখেই চিনলাম লোকটা পারেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। তিনি তাদের বোঝানের চেষ্টা করছে। বলছে- ছেলেটি নিরীহ। তার পরিচিত। পারেরহাটের ঐ চেয়ারম্যান তখন পিরোজপুর মহাকুমা শান্তি কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান। সে তার পরিচয়পত্র বের করে সৈনিকদের  হাতে দিলো। তারা নিজেদের মধ্যে কি সব বলাবলি করে আমাকে রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে ঠেলে জাহাজে তুলে দিলো। সাথে সাথে স্টিমার ছেড়ে দিলো। 

জাহাজে নিয়াজ ভাই ও অন্য দুই বন্ধু আমাকে জড়িয়ে ধরলো। জানতে পারলাম আমাকে ধরে নিয়ে যাবার পর বন্ধুরা প্রথমে যায় জাহাজের সারেং এর কাছে। তারা বলে আমাদের বন্ধুকে ফিরিয়ে না আনা পর্যন্ত যেকোনো অজুহাতে জাহাজ যেনো না ছাড়া হয়।  সারেং সেভাবেই কাজ করে। এরপর তারা স্টিমারে পারেরহাটের চেয়ারম্যানকে খুঁজে পায়। তাদের কথা, যেভাবেই হোক হারূনকে ছাড়িয়ে আনতে হবে। তিনি প্রথমে রাজী হন না, পরে হয়তো প্রাণের ভয়ে তাদের কথায় সারা দেন। এই চেয়ারম্যান সাহেবকে আর কখনো খুঁজে পাইনি। সেই দুই বন্ধুকেও না। তবে নিয়াজ ভাই এর সাথে মাঝে মধ্যে হঠাৎ কোথাও দেখা হয়ে যায়। যখনই দেখা হয়, তখনই সেই ভয়াবহ রাতের স্মৃতিচারণ করি। 
 

চলবে...

আগের পর্ব পড়ুন:

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১৩

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১২

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১১

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১০

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৯

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৮

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৭

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৬

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৫

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৪

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ৩

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ২

ধারাবাহিক আত্মকথা । শংকিত পদযাত্রা । খ ম হারূন । পর্ব ১