অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

হাসান হাফিজের দুটি কবিতা

হাসান হাফিজ

প্রকাশিত: ০১:৩৫ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার   আপডেট: ০৩:৩০ পিএম, ২ জানুয়ারি ২০২১ শনিবার

মানুষের অধঃপাত!

বিচ্ছেদ মিলন দোঁহে এক লপ্তে লেপটালেপটি করে থাকে
আমরা জানি, দু’জনার ভালো সখ্য, একই মুদ্রা এপিঠ ওপিঠ
একে ওরা অপরের সম্পূরক, কেন তবে পৃথগান্ন করা?
বিচ্ছেদকে কাছে পেলে সাধ্যমতো সমাদর কোরো
আখেরে সুমিষ্ট ফল মিলতে পারে সেইমতো সম্ভাবনা আছে।
সে তো নয় মিলনের মতো অন্ধ স্বার্থপর, সংকীর্ণ ও নিচু
তবে যে মানুষ ছোটে দিবারাত্রি দিগ্ভ্রান্ত তার পিছু পিছু?
জানে না বলেই ছোটে, মানুষের ক্ষমতা ও আকাঙ্খা  সীমিত
মানুষের ত্রাণকল্পে অতএব কিছুমিছু করুণা বরাদ্দ করা আছে, 
যৌনলাঞ্ছনার পাপ, শিশুহত্যা, নীতিলঙ্ঘনের পুঁজ, পরাস্ত কলুষ
‘মানুষ’ নামের মধ্যে চিরস্থায়ী কলঙ্কের গাঢ়ছাপ বসিয়ে দিয়েছে
‘মানুষ’ নামের যোগ্য নাই আর, তারা ঘৃণ্য পশুরও অধম!


অতৃপ্ত গন্ধম

বানকুড়ালির তোড়ে উড়ে যাক ক্লেশ দুঃখ অভিমান
কিন্তু কই বানকুড়ালির কোনো আলামত দৃশ্যপটে নাই
অভিমান জড়িয়েমড়িয়ে রাখে, চুপিসারে চিনচিনে ব্যথা দেয়
এই তীক্ষ্ন সুড়সুড়ি সহ্য করা ইদানীং অসহ্য ও মরণশামিল।
বুকের গোপনে কষ্ট অজান্তেই মেলে দেয় শিকড়ের ডালপালা
বড় হয় শত্রু চারা আলগোছ, পুষ্ট ওমে মৃদু ঘুমে অন্তরাল
সে আমারই মৃত্যুপরোয়ানা, ওগো ঝঞ্ঝা দ্রুত ছুটে আসো
রক্ষা করো এই দীনে কাঙালেরে,করজোড়ে মিনতি রহিল
নাহয় আমাকে তুমি গুম করো, নিরুদ্দেশে গহিনে লুকাও
এই ভবগ্লানি থেকে তুমি অভাগায় চিরমুক্তি দয়া করে দাও, 
নাহয় উচ্ছন্নে যাবে পুণ্যপাপ, সবই হবে বেপথু অসার.. 
চাই ঝড় উন্মাতাল, উড়িয়ে পুড়িয়ে নিঃস্ব তছনছ করে দিক
অভিমান যে বিরহেরও চেয়ে দগ্ধ অনুভূতি, দুঃসহ অধিক
স্বৈরিণীরে ছলনার সে গন্ধম খাওয়ানোর সুযোগই হলো না...