অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সিনেমায় বছরের শেষ চমক!

বিনোদন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার   আপডেট: ০৪:৫৩ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২০ বুধবার

দর্শকদের জন্য বছরের শেষ চমক হিসেবে একই দিনে হলিউডের দু’টি কাঙ্খিত ছবি মুক্তি দিচ্ছে স্টার সিনেপ্লেক্স। ২৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুক্তি পাচ্ছে এ বছরের অন্যতম আকর্ষণীয় সিনেমা ‘ওয়ান্ডার ওম্যান ১৯৮৪’। একই দিনে ঢাকার স্টার সিনেপ্লেক্সের সব শাখায় মুক্তি পাবে ছবিটি। 

সাড়া জাগানো ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’ এর এ সিক্যুয়েল শুভমুক্তির কথা ছিল চলতি বছরের শুরুতেই। মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে একাধিকবার মুক্তি পিছিয়ে অবশেষে ২৫ ডিসেম্বর চূড়ান্ত করা হয়েছে। 

পিক্সারের অ্যানিমেশন ছবি ‘সৌল’ আন্তর্জাতিকভাবে মুক্তি পাচ্ছে ওই দিন। এ ছবিও একই দিন থেকে স্টার সিনেপ্লেক্সে দেখতে পারবেন বাংলাদেশের দর্শকরা। 

ওয়ান্ডার ওম্যান ১৯৮৪
ছবির ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ ছড়িয়ে যায়। প্রথম কিস্তির পর দ্বিতীয়টিও জনপ্রিয় হতে পারে, এমনটাই আশা ভক্তদের। এর জন্য কম ঘাম ঝরাতে হয়নি অভিনেত্রী গ্যাল গ্যাদতকে। 

এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, শুটিংয়ের সময় শারীরিক সক্ষমতা খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ, বেশ বাস্তবসম্মতভাবে সবকিছু শুটিং করার চেষ্টা করা হয়। মেরুদণ্ডে বেশ আঘাত পেয়েছিলেন। তবু শুটিং বন্ধ করেননি। 

ডিসি কমিকসের নারী সুপারহিরো কেন্দ্রিক প্রথম ছবি ছিল ওয়ান্ডার ওম্যান। ট্রেলার দেখার পর ক্রমেই বাড়ছে দ্বিতীয় কিস্তি ওয়ান্ডার ওম্যান ১৯৮৪ দেখার কৌতূহল। ডিসি কমিকসের চরিত্র ওয়ান্ডার ওম্যানকে প্রথম দেখা গিয়েছিল ব্যাটম্যান ভার্সেস সুপারম্যান: ডন অব জাস্টিস ছবিতে ২০১৬ সালে। 
এ সুপারহিরোকে নিয়ে আলাদা করে প্রথম ছবি আসে ২০১৭ সালে। ছবিতে এবারও ক্রিস পাইনকে দেখা যাবে ওয়ান্ডার ওম্যানরূপী গ্যাল গ্যাদতের প্রেমিক হিসেবে। এটিও পরিচালনা করেছেন আগের ছবির পরিচালক প্যাটি জেনকিন্স। 

ট্রেলারে দেখা যায়, ডায়নার কাছে ফিরে এসেছে স্টিভ। তবে এটা ভিলেন লর্ডের কারসাজি। এখানে অ্যান্টি হিরো হিসেবে থাকছেন ম্যাক্সওয়েল লর্ড, যে মানুষের স্বপ্ন দেখতে পায়। পাশাপাশি ওয়ান্ডার ওম্যান ছাড়া এবারে রয়েছে চিতা। যদিও তাকে সেই রূপে ট্রেলারে দেখা যায়নি। 

ওয়ান্ডার ওম্যান ডায়নার চরিত্রে দেখা যাবে বিউটি কুইন গ্যাদতকে। স্টিভের চরিত্রে দেখা যাবে ক্রিসকে। এছাড়া চিতা অবতারে দেখা যাবে ক্রিস্টেন উইগকে। এ সিরিজের ভিলেন ম্যাক্সওয়েলের ভূমিকায় দেখা যাবে পেদ্রো পাসকেলকে। আরও রয়েছেন রবিন রাইট এবং কোনি নিয়েলসনের মতো অভিনেতারা।

প্রথম নারী সুপারহিরো হিসেবে পর্দায় এসেই বাজিমাত করেন হলিউড অভিনেত্রী গ্যাদত। ‘ওয়ান্ডার ওম্যান’ দিয়ে দর্শকের হৃদয় জয় করেছিলেন। সেই সিনেমার শুটিং ছিল তার কাছে অনন্য। এবার সিক্যুয়েলে অভিনয় করে আরও রোমাঞ্চকর অনুভূতি হয়েছে। তা জানালেন টুইটারে। 

গ্যাদত লেখেন, আমরা আবার একটি অসাধারণ কাজ শেষ করলাম। প্রথমবারের ওয়ান্ডার ওম্যান-এর শুটিং ছিল অসাধারণ। এবারের অভিজ্ঞতা আরও সুন্দর ও রোমাঞ্চকর। আমরা ৩টি দেশের ৪টি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় শুটিং করেছি। আমি খুবই ভাগ্যবান ও গর্বিত যে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার কলাকুশলী ছবির সেটে হাজির হতেন। সিনেমার জন্য তাদের সবটুকু দেয়ার চেষ্টা করতেন তারা।

গ্যাদত ছবির পরিচালক প্যাটি জেনকিন্সকেও ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এত অসাধারণ ছবি তৈরি করতে পারেন। আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে, তার মতো একজন পরিচালকের ছবিতে কাজ করছি। উনি সবসময় আমাদের ভরসার জায়গা। কঠিন জায়গাগুলো পার করতে আমাদের সাহায্য করেছেন। আর প্রতিদিন অসাধারণ সব সৃজনশীল ভাবনা নিয়ে হাজির হতেন। আমি তাকে বন্ধু হিসেবে ভাবতে পেরে খুবই আনন্দিত।

সৌল
অ্যানিমেটেড ছবি নির্মাণে অলিখিতভাবেই প্রথম হয়ে আছে পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিও। তাদের ঝুলিতে আছে ২৭টি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড, সাতটি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড, ১১টি গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডসহ আরও অসংখ্য পুরস্কার। 

অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডে ২০০১ সাল থেকে শুরু হওয়া শ্রেষ্ঠ অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র বিভাগে পিক্সারের প্রায় সব ছবিই মনোনয়ন পেয়ে আসছে। তাদের ছবিতে কণ্ঠ দিয়েছেন টম হ্যাঙ্কস, রবার্ট ডি নিরো, টিম অ্যালেন, জনর্যাডটজেনবারজার, ওয়েন উইলসনের মতো তারকারা।

পিক্সারের ছবি মানেই একদম অন্য ধরনের, অন্য রকম মজাদার কিছু আনন্দ। নিজেদের প্রায় প্রতিটি ছবিতেই পরবর্তী ফিল্মের চরিত্রগুলোর আগাম একটি সংকেত রাখে। যেমন-মনস্টার ইঙ্ক সিনেমার শেষদিকে বু-এর হাতে খেলনা পুতুল হিসেবে দেখা যায় ফাইন্ডিং নিমোর নিমোকে, ফাইন্ডিং নিমো বের হয়েছিল এরও দুই বছর পর।

টয় স্টোরি, মনস্টার ইঙ্ক, ফাইন্ডিং নিমো, দ্য ইনক্রেডিবলস, কারস, ওয়ালি, রাটাটুলি, আপ, ব্রেভ, দ্য গুড ডাইনোসর, ইনসাইড আউট, ফাইন্ডিং ডোরি ছবিগুলো বলে দেয় সাফল্যের কথা। গেল বছর তারা সাড়া জাগিয়েছিলো ‘টয় স্টোরি ৪’ দিয়ে। এ বছরের অ্যানিমেশন চলচ্চিত্রের যাত্রা শুরু হয় তাদের ছবি দিয়ে। 

বছরের প্রথম অ্যানিমেশন ছবি ‘অনওয়ার্ড’ মুক্তি পায় মার্চে। বছরের শেষটাও হচ্ছে তাদের ছবির মধ্য দিয়ে। ২৫ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে তাদের নতুন ছবি ‘সৌল’। এটিই এ বছরের শেষ অ্যানিমেশন ছবি। ‘ইনসাইড আউট’ সিনেমায় আবেগের রূপক কিছু চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন পিট ডক্টর। এবার ‘সৌল’ নিয়ে আসছেন আমেরিকার এ নির্মাতা। এটি পরিবেশনা করবে পিক্সার। 

উঠতি সংগীতশিল্পী জো’কে (জেমি ফক্স) ঘিরেই এর গল্প। একদিন গর্তে পড়ার পর আত্মা থেকে আলাদা হয়ে যায় সে। এরপর আত্মাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নিজেকে আবিষ্কার করে। সেখানে আরেক আত্মার (টিন ফে) সঙ্গে মিলে মানুষের মধ্যে ফেরার চেষ্টা করতে থাকে ও। ছবির বিভিন্ন চরিত্রে কন্ঠ দিয়েছেন জেমি ফক্স, টিনা ফে, ড্যাভিড ডিগস, অ্যাঞ্জেলা ব্যাসেটসহ আরও অনেকে।