অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রের চেয়েও খাবার বেশি নষ্ট হয় বাংলাদেশে

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:৩৩ পিএম, ৩০ মার্চ ২০২৪ শনিবার  

সম্প্রতি ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট-২০২৪ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি)। যেখানে উঠে এসেছে, প্রতিদিন বিশ্বে ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার নষ্ট হচ্ছে। অন্যদিকে, দৈনিক ৮০ কোটি মানুষ খাবারের অভাবে না খেয়ে থাকছেন।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিবছর একজন ব্যক্তি গড়ে ৭৯ কেজি খাবার নষ্ট করেন। এছাড়া ২০২২ সালে যত খাবার নষ্ট হয়েছে, তার ২৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে রেস্তোরাঁ, ক্যান্টিন ও হোটেলের মতো খাদ্য পরিষেবা ব্যবস্থাগুলোতে। সেই সঙ্গে কসাই ও মুদি দোকানে নষ্ট হয়েছে ১২ শতাংশ খাবার। তবে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ, ৬০ শতাংশ খাবার নষ্ট হয়েছে বাসা-বাড়িতে। এর পরিমাণ ৬৩ কোটি ১০ লাখ টন।

প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, রাশিয়ার চেয়েও বাংলাদেশে খাদ্য অপচয়ের প্রবণতা বেশি ছিল। জাতিসংঘের হিসাবে, ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বছরে একজন ব্যক্তি ৭৩ কেজি খাবার অপচয় করেন। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যে ৭৬, ভারতে ৫৫ ও রাশিয়ায় ৩৩ কেজি খাবার বছরে একজন ব্যক্তি নষ্ট করেন। তবে এই দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে খাবার অপচয়ের প্রবণতা বেশি।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এবং বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আওতায় খাদ্য অপচয় নিয়ে ‘এস্টিমেশন অফ ওভারঅল ফুড লসেস অ্যান্ড ওয়েস্ট এট অল লেভেলস অফ দা ফুড চেইন’ শীর্ষক গবেষণা করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান। তার মতে, দেশে একেবারে উচ্চ আয়ের পরিবারগুলোতে বেশি খাদ্য অপচয় হয়। এছাড়াও কমিউনিটি সেন্টারের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৫-১৩ শতাংশ খাবার নষ্ট বা অপচয় হয়।

তিনি বলেন, ‘বাসাবাড়ি ও হোটেল রেস্টুরেন্টে অনেক খাবার নষ্ট হয়। আমরা গবেষণা পেয়েছি যে উচ্চ আয়ের বাসাগুলোতে সপ্তাহে একজন মানুষ ২ কেজির বেশি খাবার অপচয় করে থাকে।’

তবে দেশে ভোক্তা পর্যায়ে মানহীন বা নষ্ট খাবারের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ থাকলেও খাদ্য অপচয় দেখার জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। এ বিষয়ে বাংলাদেশের নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জাকারিয়া বলেন, ‘আমরা ভোক্তা পর্যায়ে কেউ নষ্ট বা মানোত্তীর্ণ খাবার দিলে ব্যবস্থা নিতে পারি। কিন্তু কেউ খাদ্য নষ্ট করলে বা অপচয় করলে আমাদের কিছু করার আছে বলে এখনো জানা নেই।’ এই অবস্থায় খাদ্য অপচয় রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।