অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কবি-গীতিকার জাহিদুল হক মারা গেছেন

প্রকাশিত: ০৩:২২ পিএম, ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ সোমবার  

'আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়, তবু কেন ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায়?- কালজয়ী এই গানের লেখক ও কবি জাহিদুল হক ইন্তেকাল করেছেন।

সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

জাহিদুল হকের ভগ্নিপতি কাজী জাহিদ হাসান মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ১ জানুয়ারি শরীর খারাপ হলে জাহিদুল হককে প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। পরীক্ষা করে ডাক্তার জানান তিনি স্ট্রোক করেছেন। সেখানে দুইদিন থাকার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ বেলা পৌনে একটার দিকে মারা যান তিনি।

১৯৪৯ সালের ১১ আগস্ট ভারতের আসামের বদরপুর রেলওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসক পিতার কর্মস্থলে জন্ম নেন জাহিদুল হক। তার পৈত্রিক নিবাস কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের আকদিয়া গ্রামে। বর্তমানে বসবাস করছেন ঢাকার বনশ্রীতে। তার বাবা নূরুল হক ভূঞা ছিলেন সরকারি চাকুরে একজন চিকিৎসক। মাতা-জাহানারা খাতুন চৌধুরী।

চট্টগ্রামের নগেন্দ্রচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৩ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ১৯৬৬ সালে ফেনী সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।

জাহিদুল হক লেখালেখি শুরু করেন স্কুলজীবন থেকে। প্রথম কবিতার প্রকাশ হয় ১৯৬৫ সালে দৈনিক সংবাদ এর ঈদ সংখায়। তিনি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো ও রেডিও ডয়েচে-ভেলের সিনিয়র এডিটর ও ব্রডকাস্টার হিসেবে কাজ করেছেন।

দৈনিক সংবাদের সিনিয়র সহকারী সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশ বেতারে তিনি উপমহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭৮ সালে রেডিওতে রেকর্ডকৃত তার প্রথম গানটি পরে ‘মহানায়ক’ছবিতে যুক্ত হয়। গানটির সুর করেছেন শেখ সাদী খান। ছিলেন ‘বেতার বাংলা’পত্রিকার সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ম সেন্সর বোর্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিল্প বাড়ি নামের একটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করেন।

জাহিদুল হকের কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প গান মিলিয়ে প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৮টি। তার প্রথম কবিতার বই প্রকাশ হয় ১৯৮২ সালে ‘পকেট ভর্তি মেঘ’শিরোনামে। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে পকেট ভর্তি মেঘ (১৯৮১), তোমার হোমার (১৯৮৪), নীল দুতাবাস (১৯৮৫), সেই নিঃশ্বাসগুচ্ছ (১৯৮৯), পারীগুচ্ছ ও অন্যান্য কবিতা (১৯৯৪), এই ট্রেনটির নাম গার্সিয়া লোরকা (১৯৯৬), এ উৎসবে আমি একা (১৯৯৭)।

বাংলা কবিতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ২০০২ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগ থেকে ২০১৭ সালে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার এবং জসীমউদ্দীন সাহিত্য পুরস্কার (২০০০) পান তিনি।