অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

কর্মজীবী নারীর “ক্ষমতায়ন” ও নীতি নির্ধারণে বাংলাদেশের তেপ্পান্ন বছর

ড. শাওলী মাহবুব

প্রকাশিত: ১১:৫৬ এএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার   আপডেট: ১২:২০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার

কর্মজীবী নারী ও ক্ষমতায়ন
বাংলাদেশে কর্মজীবী নারী কি ‘ক্ষমতাবান’? কর্মক্ষেত্রে তাদের সুবিধা অসুবিধাগুলো কী? রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণের সাথে কর্মজীবী নারীর সম্পৃক্ততাই বা কতটুকু? বাংলাদেশের তেপ্পান্নতম মহান বিজয় দিবসে পিছু ফিরে দেখা যাক নারীর ক্ষমতায়ন প্রসঙ্গটি।  ‘পাবলিক’ এবং ‘প্রাইভেট’ দুটো পরিসরেই নারীকে পদচারণা করতে হয় বলে নারী আসলে “Doubly Burdended”  বা নারীকে দ্বিগুণ বোঝা বহন করতে হয়। সুদীর্ঘকাল নারীর কাজকে ‘গতানুগতিক গৃহস্থালীর’ কাজ হিসেবে ধরে নেয়া হয়েছে। তাদের কাজকে বৃহত্তর অর্থনৈতিক কাঠামোর পরিসরে ‘কাজ’  হিসেবে মূল্যায়িত করা হয়নি। অন্যরা তাদের কাজের অবমূল্যায়ন করেছে তো বটেই, নারীরা নিজেরাও এসম্পর্কে খুব সজাগ ছিলেন না। ‘কাজ’ এর সংজ্ঞা হলো অংশগ্রহণ করা বিশেষত অর্থনৈতিক উদ্দেশে শারীরিক, মানসিক যুক্ততা বা অংশগ্রহণ যেখানে থাকে। সেটা বৈতনিক বা অবৈতনিক দুটোই হতে পারে। পরিবার, বা কৃষি খামারে কাজ, গর্ভধারণ, সেলাই এবং খাবার প্রস্তুত করা অথবা পানি বা জ্বালানি সংগ্রহ সবই ঐতিহাসিকভাবে অবৈতনিক কাজ হিসেবে বিবেচ্য ছিলো। নীতিনির্ধারক বা অর্থনৈতিক বিশ্লেষকের কাছে এই কাজগুলো উৎপাদনশীল বলে গ্রহণযোগ্য নয়। এমন কি “পিংক কালার ওয়ার্ক”গুলো নারীর কাজ হিসেবে বিশেষভাবে বিবেচ্য। ১৯৭০ সালে ইসটার বোসেরাপ Woman's role in economic development  গ্রন্থে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীর যুক্ততা নিয়ে আলোচনা করেছেন। বর্তমানে পাবলিক/প্রাইভেট উভয় পরিসরেই নারীর পদচারণা দৃশ্যমান, অর্থনৈতিকভাবেও তারা স্বাবলম্বী। কিন্তু সত্যিকার অর্থেই কি তাদের ক্ষমতায়ন ঘটেছে বা তারা তাদের সমস্যাগুলোর উত্তোরণ ঘটিয়ে ক্ষমতায়িত হতে পেরেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে সহজ অথের্  ক্ষমতায়ন শব্দটি নিয়ে আলোচনা করা যাক।

জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা ইকোনোমিক এবং স্যোশাল কমিশন ফর ওয়েস্টার্ণ এশিয়ায় (ঊঝঈডঅ) নারীর ক্ষমতায়ন সম্পর্কে বলা হয়েছে এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে নারীরা লিঙ্গ-ভিত্তিক অসম ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন হয় এবং একটি শক্তিশালী কণ্ঠস্বর অর্জন করে যা পরিবারে, কর্মক্ষেত্রে এবং সমাজের অসমতার বিরুদ্ধে কথা বলতে তাকে সহায়তা করে। এটি নারীদের তাদের জীবনের নিয়ন্ত্রণ করতে, তাদের নিজস্ব এজেন্ডা গঠন করতে, দক্ষতা অর্জন করতে, সমস্যা সমাধান করতে এবং আত্মনির্ভরশীলতা বিকাশ করতে সহায়তা করে। আইএলও তে নারীর ক্ষমতায়নের দৃষ্টিভঙ্গি হল, কাজের জগতে নারীদের সমান অবস্থানকে উন্নীত করা, এবং সেই লক্ষ্যকে আরও এক বা একাধিক স্তরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া: (ক) সমস্ত স্তরে সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম করার এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার জন্য নারীদের সক্ষমতা বৃদ্ধির স্তরকে উন্নীত করতে হবে ; (খ) ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পদের সমান অধিগম্যতা এবং নিয়ন্ত্রণ এবং উৎপাদনশীল, প্রজনন এবং সমাজের কার্যক্রমের সুবিধাগুলোর অধিকার নারীদের জন্য উন্মুক্ত করা; (গ) সমতা, নিরাপদ এবং সম্মানজনক কাজের পরিবেশ অর্জনের জন্য কাজ করা; (ঘ) নারীর ক্ষমতায়ন এবং লিঙ্গ সমতার পক্ষে কাজ করার জন্য নারী/উন্নয়ন সংস্থাগুলির সক্ষমতা প্রচার ও শক্তিশালী করা; (ঙ) সমাজে আর্থ-সামাজিক অবস্থা যেমন আইন, শিক্ষা ব্যবস্থা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং নারীর মানবাধিকার ইত্যাদিতে পরিবর্তন আনা কেননা এগুলো প্রায়ই নারীকে পুরুষের অধীন করে দেয়; (চ) লিঙ্গ সমতার তাৎপর্য সম্পর্কে পুরুষদের সচেতন করা। সংক্ষেপে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা পরিহার করা, লিঙ্গীয় বৈষম্যদূরীকরণ, সিদ্ধান্তগ্রহণের সক্ষমতা অর্জন, কর্মক্ষেত্র এবং উৎপাদনে নারীর অংশগ্রহণ, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া এবং নারীর জন্য সুষ্ঠু কর্মপরিবেশ তৈরি করা নারী ক্ষমতায়নকে তরান্বিত করে।

বৈশ্বিক ও দেশীয় নীতি নির্ধারণে বাংলাদেশী নারীর অবস্থান
১৯৭৫ সালে মেক্সিকোতে প্রথম নারী বিশ্ব কংগ্রেসে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। দেশের বাইরের সেই নারী আন্দোলন বাংলাদেশের নারী আন্দোলনের মূলধারায় পরিণত হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালকে ক্ষমতায়নের জন্য "নারী বছর" হিসাবে ঘোষণা করেছিল যা বাংলাদেশের নারী উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে পরিগণিত হয়। ১৯৭৫ সালে প্রথম বিশ্ব নারী সম্মেলনে ১৯৭৬-১৯৮৫ দশককে নারীর দশক হিসেবে ঘোষণা করা হয় সমতা, উন্নয়ন ও শাšিত প্রতিষ্ঠার লক্ষে। ১৯৮০ সালে দ্বিতীয় বিশ্ব নারী সম্মেলন ছিল কোপেনহেগেনে। যেখানে (১৯৭৬-১৯৮৫) প্রথম ধাপের (৫ বছরের) অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে এবং এর সাথে তিনটি অতিরিক্ত উদ্দেশ্য - নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং কর্মসংস্থাকে উন্নয়নের পরিসর বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৮৫ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হয় তৃতীয় বিশ্ব নারী সম্মেলন। এছাড়াও ১৯৯৫ সালে বেইজিং চতুর্থ  নারী সম্মেলনে নারী উন্নয়নের লক্ষে দারিদ্র্য, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ; স্বাস্থ্য, সহিংসতা, সশস্ত্র সংঘর্ষ, অর্থনীতি ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ, মানবাধিকার; মিডিয়া, পরিবেশ এবং মেয়ে শিশু ইত্যাদি নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা করে। প্রায় সব আন্তর্জাতিক কনভেনশনে বাংলাদেশের চুক্তি স্বাক্ষর উল্লেখ করার মতো। ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক নারী-বিরুদ্ধ সকল প্রকার বৈষম্য দূর করার কনভেনশন (CEDAW) এ স্বাক্ষর তার মধ্যে অন্যতম। পাশাপাশি, বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময় নারী এবং শিশু উন্নয়নের লক্ষে বেশ অনেকগুলো পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের রিপোর্টে দেখা যায়, ২০১৬ সালে জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্সে ১৪৪ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ৭২ তম স্থান লাভ করেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো শীর্ষ স্থান লাভ করেছে বাংলাদেশ। ইতিহাস ফিরে দেখা যায়, বাংলাদেশের  প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৭৩-৭৮) ছিলো যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্থ নারীদের পুনর্বাসনের জন্য একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয় । প্রথমবারের জন্য এখানে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবারে নারী উন্নয়নের বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। ১৯৭২ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মা-বোনের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকি¯তান সেনাবাহিনীর হাতে সম্মান হারান তাদের শিরোনাম দেন: বীরাঙ্গনা। বিশ্ব ব্যাংক কর্তৃক গৃহীত "গ্রামীণ মহিলাদের জন্য কৃষিভিত্তিক কর্মসূচি" বা¯তবায়ন কর্মসূচী ১৯৭৩ সালে সাভারে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ৩৩ বিঘা জমিতে শুরু হয়। এছাড়াও দুই বছরব্যাপী (১৯৭৮-১৯৮০)  নারীদের কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। তৃতীয় পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় (১৯৮৫-৯০) একই কর্মসূচি নেয়া হয়েছিল। নারীদের মূলধারায় আনার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছিল চতুর্থ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (১৯৯০-৯৫)।  আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্য, সেবা এবং অন্যান্য খাত, দারিদ্র্য দূরীকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, স্ব-কর্মসংস্থান, ঋণ সম্প্রসারণ সুবিধা, লিঙ্গ সচেতনতা বৃদ্ধি এবং হোস্টেলের মতো সহায়ক সুবিধার সম্প্রসারণ, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এবং আইনি সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রগুলো নিয়ে এসময় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বর্তমান সরকারও বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে যেমন - সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, টেকসই উন্নয়নে নারী উন্নয়ন এবং জাতীয় নারী নীতি, ২০১১। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১১ সালে গঠন করেন জাতীয় নারী নীতি। জাতীয় নারী নীতিতে ২২টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।  নারী ও শিশু মন্ত্রনালয়ের বরাত দিয়ে বলা যায়, বর্তমান সরকার ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭,২৮,২৯, ৬৫ (৩) এর লক্ষে কাজ করে যা্েচছ।  বিশেষত, সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদে নারীমুক্তির জন্য সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সার্বিক কার্যক্রম (গড়ডঈঅ) এই লক্ষ্যগুলো বা¯তবায়নের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১ তে প্রতিবন্ধী মেয়েদের প্রতি বৈষম্য দূরীকরণ এবং তাদের সুরক্ষা, মহিলা ও শিশুর জন্য নিরাপদ এবং মানসম্মত বিনোদনমূলক, সাংস্কৃতিক এবং ক্রীড়া সুবিধা, এবং নারীর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ এবং অ্যাসিড নিক্ষেপ অপসারণের ক্ষেত্রে জোর দেয়া হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় শিশু নীতি ২০১১-তে মেয়ে শিশুকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে, কিশোরীদের জন্য কাউন্সেলিং এবং স্যানিটেশন সুবিধার ব্যবস্থার ওপর জোর দেয়া হয়েছে । শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের জন্য এবং দুর্যোগের সময় নারীদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জনজীবন ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে  সব ধরনের বৈষম্য প্রতিরোধ করতে আইন ২০১০ (সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ) বিধিমালা, পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইন, ২০১০, অ্যাসিড ক্রাইম প্রিভেনশন (সংশোধিত) আইন, ২০১০; নারী উদ্যোক্তাদের শিল্প উন্নয়নের জন্য শিল্প নীতি ২০১০; ২০১৩ এর অধীনে পারিবারিক সহিংসতা (সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ) নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়াও নারী ও শিশুদের সার্বিক উন্নয়নে সরকার প্রণয়ন করেছে ‘জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতি, ২০১১; জাতীয় শিশু নীতি, ২০১১; প্রারম্ভিক শৈশব যতœ এবং উন্নয়ন নীতি, ২০১৩; মানব পাচার (প্রতিরোধ ও দমন) আইন, ২০১২; ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৪ এবং বাল্য বিবাহ সুরক্ষা আইন, ২০১৭, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ ইত্যাদি। 
  
নারী উন্নয়নের প্রতিফলন
বর্তমানে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্রের সরকারপ্রধান, একজন নারী। জাতীয় সংসদের স্পিকার হিসেবে একজন নারীকে আমরা পেয়েছি। বিভিন্ন সময় বিরোাধীদলীয় নেতা, সংসদ উপনেতা, মন্ত্রিসভায় নারীরা দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নারীরা দায়িত্ব নিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার পদও নারীরা অলঙ্করণ করেছেন। বিভিন্ন প্রশাসনিক ক্ষমতায় সচিব এবং অতিরিক্ত সচিব পদে নারীরা দায়িত্ব পালন করছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-এসডিজির (২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫-এ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তৃক গৃহীত) একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ হলো লিঙ্গীয় সমতা স্থাপন করা। আমরা জানি এসডিজির এর ১৭ টি গোল আছে যার পঞ্চমটি হলো লিঙ্গীয় সমতা এবং সকল নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়ন। বাংলাদেশে সাধারণ নারীগোষ্ঠীর জন্যও নেয়া হয়েছে বিভিন্ন কর্মসূচী। দুর্বল গোষ্ঠী উন্নয়ন (ভিজিডি) ভিজিডি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি।  বাংলাদেশের সরকার পীড়িত ও নিঃস্ব গ্রামীণ নারী দারিদ্র্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা লক্ষে ভিজিডি কর্মসূচী হাতে নিয়েছে। দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার প্রচলন করা হয়েছে।  পাঁচজন দরিদ্র গর্ভবতীকে মাসে ৫০০ টাকা দেওয়া হচ্ছে, মা ও তাদের সšতানদের পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে চব্বিশ মাসের জন্য কর্মসূচী নেয়া হয়েছে এবং ২৫১টি নির্বাচিত এনজিও/সিবিও তাদের স্বাস্থ্য, পুষ্টি এবং আয় উৎপাদন কার্যক্রম বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করছে । ২০১০-২০১১ সাল থেকে ¯তন্যদানকারী কর্মজীবী মাকে সহায়তা করার জন্য তহবিল (ওয়ার্কিং ল্যাক্টেটিং মাদার ফান্ড কার্যক্রম) পরিচালনা করা হচ্ছে । শহরাঞ্চলে গর্ভাবস্থায় নারীদের অনাগত শিশুদের বিকাশ এবং সম্পূর্ণরূপে তাদের স্বাস্থ্যের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রামের গার্মেন্টস এলাকার মায়েরা এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মোট ১.৮০ লক্ষ মা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে ২৪ মাসে টাকা পাচ্ছেন। জয়িতা ফাউন্ডেশন গঠন করা হয়েছে যা হলো উইমেন এন্টারপ্রেনারশিপ এন্ডেভার প্রোগ্রাম। সরকার নারীর জন্য বিশেষ ঋণের ব্যবস্থা করেছে। নারীর প্রতি সহিংসতা নিয়ে বহু-ক্ষেত্রভিত্তিক (মাল্টি-সেক্টরাল প্রোগ্রামের) কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বাংলাদেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ও সুরক্ষার দিক এঙ-ঘএঙ এর সহায়তায় নিশ্চিত করা হয়েছে। এই কর্মসূচির অধীনে, ৬০টি ওয়ান-স্টপ-ক্রাইসিস সেল (৪০ জেলা শহরের হাসপাতাল ও ২০টি উপজেলা হাসপাতাল) স্থাপিত হয়েছে । ঢাকায় চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওয়ান-স্টপ-ক্রাইসিস সেন্টারগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ।  ফেব্রুয়ারী ২০১৭ পর্যন্ত ওয়ান স্টপ-ক্রাইসিস সেলের মাধ্যমে মোট ৫৭,১৪৮ জন নারী ও শিশু সেবা গ্রহণ করেছে। 

নারীকে স্বনির্ভর করার জন্য ২০০২-০৩ সাল থেকে মহিলা বিষয়ক বিভাগ এবং জাতীয় মহিলা সংস্থার মাধ্যমে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ সহ ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। ২০১৬-১৭ পর্যšত মহিলা বিভাগের অধীনে এই প্রোগ্রামের মোট সুবিধাভোগী ১১,৬০২৯। কর্মজীবী মহিলাদের জন্য হোস্টেল ‘আটটি কর্মজীবী নারী’ হোস্টেলের মধ্যে মোট এক হাজার ৬০৮ জন কর্মজীবী নারী হোস্টেল সুবিধা পাচ্ছেন। সারাদেশে হোস্টেলগুলোর মধ্যে চারটি ঢাকায় এবং বাকিগুলো রয়েছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও যশোর এলাকায়।

নীতিমালা বাস্তবায়নে সমস্যাসমূহ

সরকারের এতোসব নীতিমালা গ্রহণ করার পরও মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে অর্থনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ বিশাল সমস্যাদায়ক ঘটনা। মাঠপর্যায়ের সাক্ষাৎকারে প্রথমেই যে বিষয়টি কর্মজীবী নারীরা তুলে ধরেছেন তা হলো মাতৃত্বসংক্রান্ত সমস্যা। গর্ভকালীনসময়কালের শেষভাগে অনেক কর্মজীবী নারী জটিলতার কারণে অগ্রিম ছুটি নিতে বাধ্য হন, সেক্ষেত্রে তিনি মাতৃত্বকালীন পূর্ণ ছুটিটি ভোগ করতে পারেন না। এতে শিশুটি যেমন মাতৃদুগ্ধ পান থেকে বঞ্চিত হয় তেমনি মাকেও পড়তে হয় নানারকম বিড়ম্বনায়। ‘মা’ শব্দটিকে যদি সাধারণীকরণ করে ফেলা হয় তবে তারও সমস্যা রয়েছে। কারণ কেউ এক বাচ্চার মা, কেউ দুই বাচ্চার মা, কেউ জমজ বাচ্চার মা বা কেউ অসু¯থ বাচ্চার মা, কেউ কর্পোরেট মা অথবা কেউ গার্মেন্টসকর্মী মা ইত্যাদি নানারকম বিভাজন রয়েছে। এই মায়েদের সমস্যা অবশ্যই একরকম নয়। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক মা এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি যে অফিসে কাজ করেন, ডে কেয়ার সেন্টারটি যদি সেই অফিস বিল্ডিং এ থাকে তবে বাচ্চার জন্য তা সুবিধাজনক। আবার একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর ( সাধারণত ৬ বছর) বাচ্চাকে ডে কেয়ারে রাখার ব্যবস্থা নেই। আবার, কোন বাচ্চা যদি জটিল রোগে ভোগে তবে সেই বাচ্চার জন্য দিবাযতœ কেন্দ্রগুলো বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেয় না। ঠিক এসব ক্ষেত্রে ঢাকা শহরে দেখা গেছে নারীর বাবা মাকেই এই বিশেষ সহায়তা প্রদানের কাজটি করতে হয়। বাংলাদেশে পিতৃতান্ত্রিকতায় বড় রকমের পরিবর্তন এসেছে। অণু পরিবার বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যাপকভাবে, সেটা শুধু শহর অঞ্চলে নয়, গ্রামাঞ্চলগুলোতেও। শহর অঞ্চলে যেমন একই ফ্ল্যাট বাড়িতে আত্মীয়রা থাকেন, গ্রাম অঞ্চলে একটা উঠোনকে কেন্দ্র করে আত্মীয়রা থাকে। আত্মীয় হলেও তাদের খাবার ব্যবস্থা আলাদা এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। চাকুরীজীবী নারীদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে তারা যতোটা শ^শুরবাড়ির সহায়তা পান তার চেয়েও বেশি তার বাবা মা তাকে সহায়তা করে থাকে। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের একজন নারী শিক্ষক তার জমজ বাচ্চা লালনপালনের জন্য বাবামায়ের বাড়িতে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। বাংলাদেশে জাতিসংঘের একটা অঙ্গসংস্থায় চাকুরি করা একজন নারীর সন্তানের দেখভালের ব্যবস্থা তার বৃদ্ধবাবা মাকে দিতে বাধ্য হয়েছেন।  বাসার সাপোর্ট স্টাফকে তারা টাকা দিলেও আসলে অনেক সময় এই সহায়তা তারা পান না। শিশু সন্তান নিয়ে এমন বিড়ম্বনার জন্য নারী নিশ্চিন্তে নির্ভাবনায় চাকুরীস্থলে কীভাবে কাজ করবেন তা ভাবার বিষয়। বর্তমানে, দেশে ১১৯টি দিবাযতœ কেন্দ্র রয়েছে যা মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, যেখানে অতিরিক্ত ২০টি কেন্দ্র সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন। জুলাই ২০২১ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে বা¯তবায়িত উক্ত কর্মসূচির আওতায় প্রতি মাসে প্রতিটি সেন্টারে ৩০ জন করে ২০টি সেন্টারে ৬০০ জন শিশুকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান, অক্ষরজ্ঞান দান, অভ্যšতরীণ খেলাধুলা ও অন্যান্য বিনোদনমূলক কার্যক্রম গ্রহণসহ দিবাকালীন সেবা প্রদান করা হচ্ছে। এ কর্মসূচি বা¯তবায়নের ফলে গার্মেন্টস ও কারখানায় কর্মরত মহিলা শ্রমিকরা দুশ্চিšতামুক্ত হয়ে তাদের ৪ মাস থেকে ৬ বছরের সšতানদের বিনামূল্যে সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা সহ সকাল ৮.০০ থেকে রাত ৬.০০ পর্যšত নিরাপদ পরিবেশে সযতেœ দেখা শোনার সুযোগ পাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে চাকুরীজীবী নারীর তুলনায় এই সংখ্যা এখনও অপ্রতুল। এর পাশাপাশি বাচ্চাকে স্কুল থেকে আনা নেয়ার কাজটিও মা কেই করতে হয়। একজন কর্মজীবীনারী হঠাৎ অসুস্থ হলে তার জন্য আলাদা কোন আর্থিক সহায়তা কথা থাকে না। এই নিয়ে আলাদা কোন ঋণ বা সহায়তার ব্যবস্থা নেই। যে চিকিৎসা ভাতা দেয়া হয় সেটা এখনও পর্যন্ত পর্যাপ্ত নয়। প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখনও পর্যন্ত নারীবান্ধব টয়লেটের অভাব রয়েছে। ক্ষমতায়নয়ের সবচেয়ে বড় মাপকাঠি হলো সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষমতা। দেশের শীর্ষস্থানীয় পাবলিক বিশ^বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকরা আক্ষেপ করে বলেছেন  বিভাগীয় মিটিংগুলোতে এখনও পর্যন্ত বিভাগীয় জ্যেষ্ঠ পুরুষ শিক্ষকরা যে সিদ্ধান্ত নেন সেই বিষয়গুলো তাদের অনেক সময় মেনে নিতে হয়। তা না হলে একধরনের চাপে থাকেন তারা। নারীর কর্মপরিসর বিস্তৃত হবার ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের অন্তরায়। নারীর গবেষণার ক্ষেত্র তৈরির জন্য আলাদা ব্যবস্থা, ট্রেনিং এর ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন অনেকেই। কর্মজীবী নারীর জন্য নেই নারীবান্ধব পরিবহনব্যবস্থা। গণপরিবহনে তারা প্রায়ই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।

জনপরিসরের বাইরে পারিবারিক পর্যায়ে দেখা যায় কর্মজীবী নারী যতক্ষণ গৃহে অবস্থান করেন ততক্ষণ তাকে গৃহিনী হয়ে উঠতে হয়। ঘুম থেকে উঠে ঘর মোছা, বাসন মাজা, রান্না করা, সšতানকে খাওয়ানো, স্কুলের জন্য তৈরি করা এবং স্বামী ও সšতানের টিফিন তৈরি করা থেকে শুরু করে কর্মক্ষেত্রের কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরে আবার রাতে রান্না,সন্ধ্যার না¯তা বানানোসহ  সংসারের যাবতীয় কাজ নিজেকে  অথবা গৃহসহকর্মীর সহায়তায় করতে হয়। সন্তানের পড়াশোনার দায়িত্বও অনেক সময় মায়ের কাঁধে বর্তায়। সন্তানকে সময় দেয়াও যেন তার দায়িত্ব। এর সাথে কখনো কখনো যুক্ত হয় গৃহকর্মীর অসহযোগিতা। কর্মজীবী নারীরা তাদের সন্তান রেখে গেলে মায়ের অনপুস্থিতিতে সšতানকে ভালোভাবে দেখাশোনা করে না ও সময়  মতো খেতে দেয় না। এসব কারণে কর্মজীবী মাকে নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করতে হয়। গৃহস্থালি এবং কর্র্মক্ষেত্র সামলে নিতে তারা কর্মক্ষেত্রের পাশে বাসা নেয়ার চেষ্টা করেন। তাতে করে তাদের যাতায়াতে কম সময় ব্যয় হয়, লাঞ্চ টাইমে বাসায় যেয়ে বাচ্চাকে খাওয়ানো ও বাসার ছোটোখাটো কাজ করে আসেন তারা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তারা তাদের আত্মীয়দের বাসার কাছে বাসা নিয়ে থাকে এবং গৃহকর্মীকে নানারকম সুবিধা প্রদান করে থাকেন। কখনো কখনো পরিবারের সদস্যদের অমতে কর্র্মক্ষেত্রে যোগদান করার কারণে কর্মজীবী নারীর অনপুস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসা পায় না তার সšতান। অনেক পরিবার গৃহকর্মীর রান্না খেতে চায় না। তখন রান্নার কাজটিও করতে হয় কর্মজীবী নারীকে। মাসের বেতন অধিকাংশই নারীকে তার সংসারের জন্য ব্যয় করতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অর্থ নিয়ে তার সিদ্ধান্ত গৌণ হয়ে থাকে।  নিজের অর্থের উপরও নেই নারীর অধিকার। অনেক নারী গৃহকর্মী, নারী শ্রমিক বা গার্মেন্টসকর্মীর টাকা তার বাবা মা এবং পরবর্তীতে তার স্বামী জোর করে নিয়ে নেয়। শিক্ষিত নারীর ক্ষেত্রেও এর অন্যথায় প্রায় হয় না বললেই চলে। নীতি মালা এবং আইন থাকা সত্ত্বেও সামাজিক মূল্যবোধের পরিবর্তন না ঘটলে বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের এই চিত্রের পরিবর্তন সহসাই ঘটবে না।

পরিশেষে বলা যায়, স্বাধীনতার তেপ্পান্ন বছর পর কর্মজীবী নারী আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হলেও সামাজিক দুর্বলতাকে অতিক্রম করে নিজেকে ক্ষমতায়িত করতে পারেনি। পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে এখনও মুক্তি মেলেনি বাংলাদেশের সমাজের। পুরুষতান্ত্রিক পরিবারের নারীরাও পুরুষতন্ত্রের আজ্ঞাবহ। বাংলাদেশের নারীরাও পর্যাপ্ত স্বাধীনতা নিয়ে বড় হয় না, তারা নিজেরাই পিতৃতান্ত্রিক মানসে বড় হয়ে থাকে। ফলে পুরুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে অন্যায়ের প্রতিকার করতে শেখে না তারা। নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এটা গুরুত্বপূর্ণ। ছোট থেকেই মেয়ে এবং ছেলে শিশু উভয়কেই এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষিত করার জন্য নীতিমালা তৈরি করতে হবে। কর্মজীবী মায়েদের জন্য বিভিন্ন বয়সী সন্তান রাখার ব্যবস্থা রাষ্ট্রকে করতে হবে। কর্মজীবী নারীকে বাসার কাজে সহায়তা করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দক্ষ গৃহকর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে। আইনী ব্যবস্থাপনাকে অবশ্যই নারীবান্ধব হতে হবে যেন পারিবারিক সহিংসতা বা অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হলে একজন নারী দ্রুত আইনী পরামর্শ পেতে পারেন। স্বাধীনতার তেপ্পান্ন বছরে বাংলাদেশের নারী এগিয়ে গেছে বহুদূর। তাকে আরও এগিয়ে নিতে পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার পরিবর্তন এবং আইন ও নীতিমালার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।  

ড. শাওলী মাহবুব: অধ্যাপক, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।