অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

উচ্ছিষ্টভোগীকে নির্বাচনি ট্রেনে তুলেছে সরকার: রিজভী

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০২৩ শুক্রবার  

‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে ব্যর্থ হয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেছেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) বিএনপি ও সমমনা দলগুলোকে লোভ দেখিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেছে। প্রহসনের নির্বাচনে নেওয়ার চেষ্টায় সরকার ব্যর্থ হয়েছে। ভুঁইফোঁড় দলগুলোকে জোড়াতালি দিয়ে নির্বাচনে আনার চেষ্টাই তার প্রমাণ। এ ছাড়াও নগদ টাকায় কেনা কতিপয় উচ্ছিষ্টভোগী বেইমান গণশত্রুকে ছলে বলে কৌশলে ভাগিয়ে নিয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ট্রেনে তুলেছে। এসব নিকৃষ্ট লোভী ছাড়া কেউ সরকারের হীনকর্মের সঙ্গী হয়নি। একতরফা নির্বাচনে তাদের রক্ষা হবে না।’ 

শুক্রবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের গ্রেফতার ও মামলার সংখ্যা তুলে ধরেন রিজভী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সারা দেশে ৩১৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। মামলা হয়েছে ১২টি। আসামি ১ হাজার ৩১৫ জন।

রিজভী বলেন, ‘যারা লোভে পড়ে সরকারের পাতানো নির্বাচনে অংশ নেবেন তারা রাজনীতির আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হবেন। সাধারণ মানুষ ইতোমধ্যে তাদের বেইমান আখ্যায়িত করেছে। বিএনপি এবং গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে-বিদেশে কোথাও জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক বিবেচিত হবে না। বিএনপিকে জাতীয় নির্বাচনে দূরে রাখতে সুকৌশলে পুলিশের ইউনিফর্ম পরিয়ে চিহ্নিত মাফিয়া চক্রকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ 

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ট্রেনের সব যাত্রী নৌকা আর গণবিচ্ছিন্ন লোকজন। যারা এলাকায় গেলে ভোটবঞ্চিত মানুষের গণধোলাইয়ের শিকার হতে পারে। ইতোমধ্যে জাতিসংঘসহ ইউরোপ-আমেরিকা নিশ্চিত হয়েছে, আরেকটি তামাশার পাতানো নির্বাচন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কারণে জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে এই নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। অন্য সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।’

রিজভী বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী সরকার গত একযুগে সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দেড় লাখেরও বেশি মামলা দিয়েছে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এসব ভুয়া মামলায় ৫০ লাখের বেশি মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ধরনের অনাচার বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন। ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযোগী সঙ্গী রাজাকার বাহিনীর চরিত্রে গড়ে ওঠা আওয়ামী হানাদার বাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়নে সারা দেশে বিএনপির দুই কোটির বেশি নেতাকর্মী দিনের পর দিন ঘরছাড়া।’ 

রিজভী বলেন, ‘গোটা বিশ্ব যখন বাংলাদেশের ভোটাধিকার বঞ্চিত, গণতন্ত্রকামী মানুষের পক্ষে সরব, তখন গত ১৫ বছর ধরে বিনা ভোটে বন্দুকের নলের মুখে ক্ষমতা দখল করে থাকা শেখ হাসিনার পক্ষে বক্তব্য-বিবৃতি দিচ্ছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। রাশিয়া-চীনে তো গণতন্ত্র নেই। আমাদের কাছের প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি গণতান্ত্রিক। যেখানে গণতন্ত্রের ঐতিহ্য আছে। তারা সরাসরি কিভাবে একটি অগণতান্ত্রিক স্বৈরাচারের পক্ষে অবস্থান নেয়? তারা মুখে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে আছে বললেও, ১৮ কোটি জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যা দুঃখজনক।’ 

তিনি বলেন, ‘ভারতের সরকার বাংলাদেশের জনগণকে তার প্রতিপক্ষ করেছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ ভারতের জনগণকে বন্ধু মনে করে। কর্তৃত্ববাদী দেশ রাশিয়া শেখ হাসিনাকে (প্রধানমন্ত্রী) সমর্থন করতে পারে। কারণ রাশিয়াতে কোনো গণতন্ত্রের ছিটেফোঁটাও নেই।’

রিজভী আরও বলেন, ‘বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো দেশের ১২ কোটি মানুষের লুণ্ঠিত ভোটের অধিকার আদায় করে ফ্যাসিষ্ট সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রেখে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবে। আমরা যদি সিদ্ধান্তে অটল ও ঐক্যবদ্ধ থাকি, এই বিজয়ের মাসেই হয় তো আমরা আরেকটি বিজয়ের সুখবর পাব।’