অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

‘মুজিব’ সিনেমার কলাকুশলীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নৈশভোজ

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৩০ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২৩ শনিবার  

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীনির্ভর সিনেমা ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছে গতকাল শুক্রবার। মুক্তির প্রথম দিনই এই বায়োপিকের অভিনয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের নিয়ে নৈশভোজের আয়োজন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তাঁর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি কে এম সাখাওয়াত মুন জানান, শুক্রবার রাতে গণভবনে নৈশভোজের সময় প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানাও ছিলেন ওই আয়োজনে।

বাসস জানিয়েছে, নতুন প্রজন্ম যাতে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে, সে জন্য ভবিষ্যতে আরও এ ধরনের চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলগুলো সংস্কার করে ফের চালু করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

অনুষ্ঠানে ‘মুজিব’ চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের হাতে স্মারক তুলে দেন শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে চিত্রিত ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভে সিনেমার প্রিমিয়ার শো দেখেন বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা।

শুক্রবার দেশের ১৫৩টি প্রেক্ষাগৃহে একযোগে মুক্তি পায় ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ (মুজিব: দ্য মেকিং অব এ নেশন)। প্রথম দিনই ঢাকার সিনেপ্লেক্সগুলোতে দেখা যায় উপচে পড়া ভিড়। সিনেমা দেখতে এসে টিকিট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরেও গেছেন অনেকে।

অনুষ্ঠানে ‘মুজিব’ চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের হাতে স্মারক তুলে দেন শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত এই বায়োপিকের শুটিং শুরু হয় ২০২১ সালের ২২ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাই ফিল্ম সিটিতে। আর শুটিং কাজের সমাপ্তি ঘটে একই বছরের ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে।

২০২২ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকীতে চলচ্চিত্রটির প্রথম পোস্টার প্রকাশ হয়। দ্বিতীয় পোস্টার প্রকাশ্যে আসে গত বছরের ৩ মে। আর ১৯ মে ফ্রান্সের কান চলচ্চিত্র উৎসবে সিনেমাটির ট্রেলার প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশে সিনেমাটি প্রদর্শনে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পায় চলতি বছরের ৩১ জুলাই।

অতুল তিওয়ারি ও শামা জায়দির ইংরেজি চিত্রনাট্য থেকে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের তত্ত্বাবধানে বাংলায় রূপায়িত এই ঐতিহাসিক সিনেমায় প্রায় দেড় শ চরিত্রের মধ্যে শতাধিক অভিনয় শিল্পী বাংলাদেশের।

মুম্বাইয়ের দাদাসাহেব ফিল্ম সিটি, গোরেগাঁও ফিল্ম সিটিসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় একং ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়ি এবং টুঙ্গিপাড়ার জাতির পিতার গ্রামের বাড়ির আদলে সেট সাজিয়ে দৃশ্য ধারণ করা হয়।

সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আরিফিন শুভ। বঙ্গবন্ধুর স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছার চরিত্রে নুসরাত ইমরোজ তিশা, আর শেখ হাসিনা চরিত্রটি রূপায়ণ করেছেন অভিনেত্রী নুসরাত ফারিয়া। সাবিলা নূর করেছেন শেখ রেহানার চরিত্র। বেগম ফজিলাতুন্নেছার অল্প বয়সের চরিত্রটি করেছেন প্রার্থনা দীঘি।

অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মধ্যে তাজউদ্দীন আহমদের চরিত্রে রিয়াজ আহমেদ অভিনয় করেছেন। তৌকির আহমেদ হয়েছেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, সায়েম সামাদ হয়েছেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মো. কামরুজ্জামান হয়েছেন সমু চৌধুরী এবং মনসুর আলী হয়েছেন খলিলুর রহমান কাদেরী।

রাইসুল ইসলাম আসাদকে দেখা গেছে আবদুল হামিদ খান ভাসানীর চরিত্রে, এ কে ফজলুল হক হয়েছেন শহীদুল আলম সাচ্চু, আবদুল হামিদ হয়েছেন গাজী রাকায়েত আর শওকত মিয়ার চরিত্র করছেন সিয়াম আহমেদ।

বঙ্গবন্ধুর বাবা শেখ লুৎফর রহমানের দুই বয়সের দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন খায়রুল আলম সবুজ ও চঞ্চল চৌধুরী; মা সায়েরা খাতুন হয়ে পর্দায় এসেছেন দিলারা জামান ও সঙ্গীতা চৌধুরী।

খন্দকার মোশতাক চরিত্র রূপায়ণকারী অভিনেতা ফজলুর রহমান বাবু। মিশা সওদাগর অভিনয় করেছেন জেনারেল আইয়ুব খানের চরিত্রে, আর টিক্কা খান হয়েছেন জায়েদ খান।

এই বায়োপিকের শিল্প নির্দেশনার দায়িত্বে ছিলেন নীতিশ রায়। সংগীত পরিচালনা করেছেন ভারতের শান্তনু মৈত্র।