ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ : রিট করতে বললেন হাইকোর্ট
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০১:২০ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২২ বুধবার
ভুয়া ঠিকানা ও নথিপত্রে কাগুজে কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া এবং একই ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার বিষয়ে রিট আবেদন করার পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত পৃথক প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনার পর বুধবার (৩০ নভেম্বর) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ পরামর্শ দেন।
এদিন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি আদালতের কাছে আদেশ প্রার্থনা করলে উচ্চ আদালত বলেন, ‘প্রতিবেদনগুলো সংযুক্ত করে রিট আবেদন আকারে কোর্টে আসুন।’
এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান উপস্থিত ছিলেন।
আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা আজই (বুধবার) আদালতে রিট করবো।
গত ২৪ নভেম্বর জাতীয় দৈনিকে ইসলামী ব্যাংকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনের প্রথমাংশে বলা হয়, ব্যাংকের নথিপত্রে নাবিল গ্রেইন ক্রপস লিমিটেডের অফিসের ঠিকানা বনানীর বি ব্লকের ২৩ নম্বর সড়কের ৯ নম্বর বাড়ি। সেখানে গিয়ে দেখা গেল, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক ভবন। ঋণ পাওয়া মার্টস বিজনেস লিমিটেডের ঠিকানা বনানীর ডি ব্লকের ১৭ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর বাড়ি। সেখানে গিয়ে মিলল রাজশাহীর নাবিল গ্রুপের অফিস। তবে মার্টস বিজনেস লাইন নামে তাদের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। এভাবেই ভুয়া ঠিকানায় একাধিক কাগুজে কোম্পানি খুলে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড (আইবিবিএল) থেকে দুই হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছে একটি অসাধু চক্র।
সব মিলিয়ে বিভিন্ন উপায়ে ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। আটটি প্রতিষ্ঠানের নামে চলতি বছরেই এ অর্থ নেওয়া হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ তুলে নেওয়া হয় চলতি নভেম্বর মাসের ১ থেকে ১৭ তারিখ সময়ে। যার পরিমাণ ২ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। এ জন্যই ব্যাংকটির কর্মকর্তারা চলতি মাসকে ‘ভয়ংকর নভেম্বর’ বলে অভিহিত করছেন।
একইভাবে বেসরকারি খাতের সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল) ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকেও ২ হাজার ৩২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে কোম্পানিগুলো। ফলে এ তিন ব্যাংকের কাছে প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদসহ দেনা বেড়ে হয়েছে সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা। এমন সময়ে এসব অর্থ তুলে নেওয়া হয়, যখন ব্যাংক খাতে ডলার সংকটের পর টাকার সংকট বড় আলোচনার বিষয়।
এদিকে মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) নিউ এইজ পত্রিকায় এস আলম গ্রুপ একাই ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে- এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ প্রতিবেদনটিও আজ আদালতের নজরে আনা হয়।