কাল শুরু হচ্ছে ৫ দলের লড়াই
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে কোন দল কেমন, সম্ভাব্য একাদশ
স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২০ সোমবার আপডেট: ০১:৩০ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২০ সোমবার
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) শুরু হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ। স্পন্সর বাছাই, ফিটনেস পরীক্ষা, খেলোয়াড় ভাগ করা সবই শেষ। আজ সোমবার (২৩ নভেম্বর) তৃতীয় দিনের মতো অনুশীলনও করছেন ক্রিকেটাররা। এখন অপেক্ষা শুধু ব্যাট বলের লড়াইয়ের।
কাল বেক্সিমকো ঢাকা আর মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর ম্যাচ দিয়ে মাঠে গড়াবে খেলা। তার আগে দেখে নেয়া যাক কোন দল কেমন। প্রতিটি দলের শক্তিমত্তা বা দূর্বলতাই বা কী এবং সম্ভাব্য একাদশ কেমন হতে পারে।
জেমকন খুলনা
কাগজে কলমে সহজেই ফেবারিট বলা যায় জেমকন খুলনাকে। সে সুযোগ অবশ্য করে দিয়েছে রাজশাহী। কেননা সব দলের সুযোগ ছিল গ্রেড ‘এ’ এর সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও মোস্তাফিজুর রহমান থেকে যে কোন একজনকে নেয়ার। কিন্তু রাজশাহী মাহমুদুল্লাহর জায়গায় সাইফুদ্দিনকে নেয়ায় জেমকন খুলনা পেয়ে যায় সাকিব ও মাহমুদুল্লাহকে। ফলে সবচেয়ে শক্তিশালী মিডল অর্ডার গড়ে ফেলে খুলনা।
এছাড়া খুলনার খেলোয়াড় বাছাইও ছিল দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত। যে জায়গায় যেমন ক্রিকেটার দরকার দলটি সেরকম ক্রিকেটারই দলে ভিড়িয়েছে। শক্তিশালী মিডল অর্ডারের পাশাপাশি দলে নিয়েছে দুই অভিজ্ঞ ওপেনার ইমরুল কায়েস ও আনামুল হককে। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে ফর্মে থাকা আরিফুল হক ও জহুরুল ইসলামও আছেন স্কোয়াডে। ব্যাটিং লাইনাপে ব্যাকআপ হিসেবে আছেন শুভাগত হোম, জাকির হোসেন, সালমান হোসেন ও অনূর্ধ্ব-১৯ এর অলরাউন্ডার শামিম হোসেন।
আর বোলিং লাইনআপে খুলনা নিয়েছে দেশের দুই অন্যতম টি-টোয়েন্টি বোলার আল আমিন হোসেন ও শফিউল ইসলামকে। এছাড়া তৃতীয় বোলার হিসেবে আছেন জাতীয় দলে খেলা তরুণ পেসার হাসান মাহমুদ ও শাহিদুল ইসলামের একজন। আর স্পিন বিভাগে সাকিবের সাথে বল ঘুরাবেন ‘নাগিন’ নাজমুল ইসলাম ও আলোচিত লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন।
সম্ভাব্য একাদশ: ১ ইমরুল কায়েস ২ আনামুল হক বিজয় (উইকেটরক্ষক) ৩ সাকিব আল হাসান ৪ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক) ৫ আরিফুল হক ৬ শুভাগত হোম ৭ শামিম হোসেন ৮ রিশাদ হোসেন, ৯ শফিউল ইসলাম ১০ আল আমিন ১১ হাসান মাহমুদ।
গাজী গ্রুপ চট্টগ্রাম
তারুণ্যনির্ভর এই দলটিও অনেক শক্তিশালী। বিশেষ করে ওপেনিং ও মিডল অর্ডারে জাতীয় দলে বেশ কিছু পরিচিত মুখ আছে। গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হয়ে ওপেনিং করবেন লিটন দাস ও সৌম্য সরকার। তারপর ব্যাটিংয়ে আসবেন মোহাম্মদ মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেন ও বর্ষীয়ান শামসুর রহমান। এছাড়া অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা মাহমুদুল হাসান জয়ও আছেন চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইনআপে।
পেস আক্রমণে দেশের সেরা বোলার মোস্তাফিজুর রহমানের পাশাপাশি আরেক সম্ভাবনাময় বাঁহাতি পেসার শরিফুল হাসানকেও নিয়েছেন কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন। এছাড়া বর্তমান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পেসার মেহাদি হাসানও আছেন এই দলে। চট্টগ্রাম দলটি আসলে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের আশ্রম। স্পিন বিভাগেই যেমন অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলামের সাথে আছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই স্পিনার রাকিবুল হাসান ও সঞ্জিত সাহা।
সম্ভাব্য একাদশ: ১ লিটন দাস (উইকেটরক্ষক) ২ সৌম্য সরকার ৩ মাহমুদুল হাসান জয় ৪ মোহাম্মদ মিঠুন ৫ মোসাদ্দেক হোসেন ৬ শামসুর রহমান ৭, জিয়াউর রহমান ৮ তাইজুল ইসলাম ৯ রাকিবুল হাসান ১০ মোস্তাফিজুর রহমান ১১ শরিফুল ইসলাম।
বেক্সিমকো ঢাকা
চট্টগ্রামের মতো বেক্সিমকো ঢাকাও অনেকটা তারুণ্য নির্ভর দল গড়েছে। কিন্তু ড্রাফ্টের শুরুতেই সাকিবকে না নিয়ে মুশফিকুর রহিমকে বাছাই করে কোচ খালেদ মাহমুদ বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি নির্ভরযোগ্য ব্যাটিং লাইনআপ চান।
দলে ওপেনার হিসেবে আছেন জাতীয় দলে খেলা নাঈম শেখ ও তরুণ তানজিদ হাসান তামিম। তারপরই মাঠে নামবেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান ও ইয়াসির আলী। এছাড়াও আছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক আকবর আলী ও অন্যতম সদস্য শাহাদাত হোসেন।
এদিকে মিরপুরের স্লো উইকেট বিবেচনায় দলে নেয়া হয়েছে অফস্পিনার নাঈম হাসান ও বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে। আর পেস বোলিং ডিপার্টমেন্টে আছেন রুবেল হোসেন ও গত বিপিএলে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারী মেহেদি হাসান রানা। এছাড়া আছেন অলরাউন্ডার মুক্তার আলী ও বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি।
সম্ভাব্য একাদশ: ১ তানজিদ হাসান ২ নাঈম শেখ, ৩ মুশফিকুর রহিম (অধিনায়াক ও উইকেটরক্ষক) ৪, ইয়াসির আলী, ৫ সাব্বির রহমান, ৬ আকবর আলী ৭, শাহাদাত হোসেন ৮ নাঈম হাসান, ৯ আবু হায়দার, ১০ রুবেল হোসেন, ১১ মেহেদি হাসান রানা।
মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহী
‘এ’ গ্রেড থেকে কোন খেলোয়াড় না কিনে মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে কিনেছিল রাজশাহী। কিন্তু রবিবার (২২ নভেম্বর) অনুশীলনে ফুটবল খেলতে গিয়ে পায়ের গোঁড়ালিতে চোট পেয়েছেন এই অলরাউন্ডার। মাঠে কবে ফিরতে পারবেন বা আদৌ ফিরতে পারবেন কিনা তা জানা যাবে আজ।
শেষ পরযন্ত যদি তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হয় তবে দলের সাফল্য নির্ভর করবে অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত, নুরুল হাসান ও তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদি হাসানের উপর।
বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে একজনকেও নেননি দলের কোচ সারোয়ার ইমরান। বরং মোহাম্মদ আশরাফুল, আরাফাত সানি ও রনি তালুকদারের মতো দীর্ঘদিন খেলা ক্রিকেটারদের উপরই বেশি আস্থা রাখছেন। এছাড়া ব্যাটিং লাইনআপে আরও আছেন ফজলে মাহমুদ ও জাকির আলী। অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজাও আছেন দলটিতে।
বোলিং লাইনআপে থাকছছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি ও সানজামুল ইসলাম। পেস বোলিং ডিপার্টমেন্ট সামলাবেন এবাদত হোসেন ও তরুণ মুকিদুল ইসলাম।
সম্ভাব্য একাদম: ১ নাজমুল হাসান শান্ত (অধিনায়ক) , ২ রনি তালুকদার, ৩ মেহেদি হাসান, ৪ নুরুল হাসান (উইকেটরক্ষক), ৫ ফজলে মাহমুদ, ৬ মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, ৭ জাকের আলী, ৮ ফরহাদ রেজা, ৯ আরাফাত সানি, ১০ সানজামুল ইসলাম, ১১ এবাদত হোসেন।
ফরচুন বরিশাল
কাগজে কলমে কোন সন্দেহ ছাড়াই সবচেয়ে দুর্বল দল ফরচুন বরিশাল। তামিম ইকবালের পাশাপাশি তারা আরও চারজন ওপেনার নিয়েছে। ফলে দূর্বল হয়ে গেছে মিডল অর্ডার। এছাড়া দলে অলরাউন্ডার আছে মাত্র ১ জন।
মেহেদি হাসান মিরাজ ছাড়া আর কোন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার না থাকায় প্রেসিডেন্ট কাপে ভালো করা ইরফান শুক্কুরে উপর দলের ব্যাটিং লাইনআপ অনেক বেশি নির্ভর করবে।
দলের চারজন পেস বোলারের মধ্যে আছেন তাসকিন আহমেদ ও আবু জায়েদ রাহি। স্পিনারদের মাঝে আছেন আমিনুল ইসলাম, তানভির ইসলাম ও সোহরাওয়ার্দী শুভ।
সম্ভাব্য একাদশ: ১ তামিম ইকবাল (অধিনায়ক), ২ আফিফ হোসেন, ৩ সাইফ হাসান, ৪ ইরফান শুক্কুর, ৫ তৌহিদ হৃদয়, ৬ মাহিদুল ইসলাম, ৭ মেহেদি হাসান মিরাজ, ৮ আমিনুল ইসলাম, ৯ তানভির ইসলাম ১০, তাসকিন আহমেদ, ১১ আবু জায়েদ।