অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর মানবাধিকার কোথায় ছিল: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৯:০৫ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৯:০৬ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার

১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ পরিবারের সবাইকে হত্যার পর মানবাধিকার কোথায় ছিল প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তারাই আবার বাংলাদেশকে মানবাধিকারের ছবক দেয়।

মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে চারিদিকে অনেক প্রশ্ন, মানবাধিকারের প্রশ্ন আসে। মানবাধিকারের কথা বলা হয়, আমাদের সরকারকে মানবাধিকারের ব্যাপারে প্রশ্ন করে। যারা এই প্রশ্ন করে তাদের কাছে আমার জিজ্ঞাসা, আমাদের মানবাধিকার, ১৫ আগস্ট আমরা যারা আপনজন হারিয়েছি তাদের মানবাধিকার কোথায় ছিল? আমাদের তো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। আমি আমার বাবা-মা হারিয়েছি কিন্তু আমি মামলা করতে পারব না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই খুনি রাশেদ। এই রাশেদ ছিল মিন্টু রোডে যে অপারেশন হয় সেই অপারেশনের কমান্ডিং অফিসার। আমেরিকার সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলছি কিন্তু তারা তাকে (রাশেদ) দিচ্ছে না। এদের কাছ থেকে আমাদের মানবতার সবক নিতে হয়। তারা আমাদেরকে মানবতার সবক শেখায় যারা আমার বাবা, মা, নারী, শিশু-তাদেরকে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, ৩২ নম্বর, ওই ধানমণ্ডির। লাশগুলো তো পড়েছিল। কত স্লোগান, তুমি আছ যেখানে, আমরা সেখানে। কোথায় ছিল সেই মানুষগুলো? একটি মানুষ ছিল না সাহস করে এগিয়ে আসার? একটি মানুষ ছিল না প্রতিবাদ করার? কেন করতে পারিনি? এত বড় সংগঠন, এত সমর্থক, এত লোক- কেউ তো একটা কথা বলার সাহস পায়নি। ১৫ আগস্ট থেকে ১৬ আগস্ট সেই লাশ পড়েছিল। বিচারের বাণী তো নিভৃতে কাঁদে। আমি ফিরে এসেও তো বিচার করতে পারিনি। আমাদের তো মামলা করারও অধিকার ছিল না। কারণ ইনডেমনিটি দিয়ে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারের বাণী নীরবে কাঁদে। আমি দেশে ফিরে এসেও বিচার চাইতে পারিনি। ‘৯৬-তে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে আদালতে গিয়েছি, বক্তব্যে চেয়েছি..আমাদের তো মামলা করারও অধিকার ছিল না। কারণ সেখানে তো ইনডেমনিটি দিয়ে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছে। খুনিদের রাজনৈতিক দল গঠন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। জিয়াউর রহমান তাদের নিজে উদ্যোগী হয়ে লিবিয়ায় তাদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে সহযোগিতা করেছিলেন। পাকিস্তানের ভুট্টোকে অনুরোধ করে তার মাধ্যমে লিবিয়ার গাদ্দাফির সঙ্গে আলোচনা করে এই খুনিদের সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। পরে তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। সে যদি খুনিই না হবে, ষড়যন্ত্রকারীই না হবে, তাহলে খুনি মোস্তাক তাকে সেনাপ্রধানই করবে কেন আর কেন খুনিদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দেবে।

এসময় খুনিদের পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে জিয়াউর রহমানের পর খালেদা জিয়ার ভূমিকা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া খুনি ফারুক, রশীদ এবং হুদা তাদের নির্বাচনে প্রার্থী করে। তাদের সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা বানায় খালেদা জিয়া। এটাকে কীভাবে অস্বীকার করবে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তারা জড়িত না।

তিনি বলেন, যেদিন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের রায় হবে সেদিনও হরতাল ডেকেছিল বিএনপি, যাতে বিচারক আদালতে যেতে না পারেন। কিন্তু সেদিন রায় হয়েছিল।  

বক্তব্যের এক পর্যায়ে ১৫ আগস্টে নির্মম হত্যাকাণ্ডের সেই দিনের স্মৃতি স্মরণ করেন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।