বাংলাদেশে এখন রিকশাওয়ালারাও রিজার্ভের কথা বলে: কাদের
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৮:০২ পিএম, ১৬ আগস্ট ২০২২ মঙ্গলবার
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ফাইল ছবি
বাংলাদেশ এখনো এগিয়ে যাচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশে এখন রিকশাওয়ালারাও রিজার্ভের কথা বলে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভার সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
কাদের বলেন, তারা (বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে) বলেন, বিদেশিদের চাপে প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনে বাধা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। লন্ডন থেকে স্লোগান দেয় আর প্রতিধ্বনি হয় পল্টনে। কী স্লোগান? ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’। টেক ব্যাক করে কোথায় যাবে? লুটপাটের হাওয়া ভবনে? বিএনপি তাদের শাসনামলে দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়েছে।
তিনি বলেন, সংকটের বিস্তীর্ণ কাঁটাবন পেরিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এখনো বাংলাদেশ স্ট্যাবিলিটি বজায় রেখেছে। এখনো বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখনো রেমিট্যান্স আসছে হাজার হাজার কোটি টাকা। এখনো ৪০ থেকে ৪২ বিলিয়ন ডলার আমাদের রিজার্ভে। বললাম কেন? বাংলাদেশে এখন রিকশাওয়ালারাও রিজার্ভের কথা বলেন। শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ ফুরিয়ে গেছে। পাকিস্তানের রিজার্ভ তলানিতে। এজন্য বাংলাদেশকে নিয়েও তারা দুঃস্বপ্ন দেখে।
তিনি বলেন, সবাই শুধু ঐক্যবদ্ধ থাকুন। দলটাকে সুশৃঙ্খল রাখুন। দেশ যেভাবে এগোচ্ছে, আমরা যদি নেত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এগোতে পারি, আগামী নির্বাচনে আবারও বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাতে পারবো। আওয়ামী লীগে সব আছে। এখানে ভালো মানুষের অভাব নেই। শুধু ঐক্যটা রাখলেই হবে। ঐক্য থাকলে বিজয় আসবেই, কেউ ঠেকাতে পারবে না।
দলীয় ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনার উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক তথ্য অজানা রয়ে গেছে। অনেকের ভূমিকাও অজানা। সত্যের খাতিরে ইতিহাসের এসব তথ্য উন্মোচন করা দরকার। আইনমন্ত্রী বলেছেন, কমিশন গঠন করবেন। শুধু মুখে নয়, আমি বলবো বাস্তবে এর কার্যকারিতা বাংলার মানুষ দেখতে চায়। ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের রহস্যময় আরও পুরুষ আছে। যাদের জাতি চেনে না। কিন্তু তারা চেনা মুখ। সত্য জানা উচিত। সত্যের মুখোমুখি আমাদের হতে হবে। সত্য আমাদের জানতে ও জানাতে হবে।
তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান খুনিদের পুরস্কৃত করে থাইল্যান্ডে পাঠান। তারপর তাদের চাকরি দেন বিদেশে বাংলাদেশের বিভিন্ন দূতাবাসে। কয়েকজনকে প্রমোশনও দেন। এটাই শুধু নয়, খন্দকার মোশতাকের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স হত্যাকারীদের বিচাররোধকারী। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জিয়াউর রহমান পঞ্চম সংশোধনীতে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশের সংবিধানকে কলঙ্কিত করেছেন। খুনিদের জিয়াউর রহমানই সাংবিধানিক বৈধতা দিতে চেয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান নাকি মুক্তিযোদ্ধা। তাহলে আমার মুক্তিযুদ্ধের রণধ্বনি কেন নিষিদ্ধ হয়? সর্বকালের সেরা ভাষণের একটি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ কেন নিষিদ্ধ হয়? বাংলাদেশ বেতার কেন রেডিও বাংলা হয়? মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ স্বাধীনতার সব আদর্শ নির্বাসনে পাঠাল কে? ইতিহাস কি তাকে ক্ষমা করবে?
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা সঞ্চালন করেন দলটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ।
এতে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।