অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাচ্ছে না: ফখরুল

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট 

প্রকাশিত: ০৪:০০ পিএম, ২৪ জুন ২০২২ শুক্রবার  

বন্যাকবলিত এলাকায় সরকারের ত্রাণসামগ্রী পৌঁছাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার (২৪ জুন) সকালে রাজধানীর খিলগাঁওয়ে ঢাকা সিটি করপোরেশনের 'গুম' হওয়া কাউন্সিলর চৌধুরী আলমের বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, 'আপনারা দেখছেন যে, দেশে একটা ভয়াবহ বন্যা চলছে সিলেট, সুনামগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলে। আমি নিজে গতকাল সিলেটে গিয়েছিলাম। নিজের চোখে না দেখলে এর ভয়াবহতা সস্পর্কে কোনো ধারণা করা যায় না। মানুষ যে কষ্টে আছে এবং তাদের কাছে যে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া, তাদের বাঁচার ব্যবস্থা করে দেওয়া, তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া, এগুলোর কোনো ব্যবস্থা সরকার করে নাই।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই তথাকথিত অনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তিনি হেলিকপ্টারে গিয়ে ওপর দিয়ে ঘুরলেন, সার্কিট হাউজের হেলিপ্যাডে নেমেছেন। সেখানে ১০ জন লোককে টোকেন ত্রাণ দিয়েছেন এবং তারপর তিনি বলেছেন, সব হয়ে যাবে। গতকাল রাত পর্যন্ত আমি যা খবর পেয়েছি এগুলো একেবারে কিছুই হয়নি।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেনাবাহিনী নামার পর তারা সিস্টেমেটিক্যালি কিছু ত্রাণ রিমোট অঞ্চলগুলোতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। এছাড়া কিছু কাজ করছে বেসরকারি এনজিওগুলো।’

বিএনপির ত্রাণ কার্যক্রম সম্পর্কে মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের দলের নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি কাজ করছে। তারা নিজেদের পয়সা দিয়ে নৌকা ভাড়া করে ত্রাণ নিয়ে মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে এবং ব্যাপকহারে কাজ করছে তারা। আমি আপনাদের মাধ্যমে সিলেটের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

অবিলম্বে বন্যাকবলিত অঞ্চলগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানান মির্জা ফখরুল। বলেন, ‘যে কারণে বন্যা হয় সেই সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা সরকার গ্রহণ করেনি। বরং এটাকে বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। হাওড়ে যে বড় রাস্তা হয়েছে, যেটা কিশোরগঞ্জের ইটনায় গিয়েছে। আমরা শুনেছি সেটা রাষ্ট্রপতির একটা প্রাইজ প্রজেক্ট। ৩৩ কিলোমিটার এই রাস্তা। এই রাস্তা সম্পূর্ণ পানির যে স্বাভাবিক প্রবাহ সেটাকে বন্ধ করে দিয়েছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বা গতিকে আজ বন্ধ করা হয়েছে। যার ফলে এভাবে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আজ যাদেরকে গুম করা হয়েছে, তাদেরকে জীবনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের পরিবার তাদের ব্যাংকের লেনদেন, সম্পত্তির মালিকানা, ওয়ারিশ সার্টিফিকেট পর্যন্ত পাচ্ছে না। গুম হওয়ার পরিবার চরম কষ্টের মধ্যে আছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে এই সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যে কারণে আমি বলেছিলাম এই সরকারকে একমাত্র আখ্যা দেওয়া যেতে পারে— গণশত্রু। তারা জনগণের শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চৌধুরী আলমকে এই সরকারের নির্যাতনকারী বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে ১২ বছরে শত চেষ্টা করেও তার পরিবার ও বিএনপি কোথাও কোনো সন্ধান পায়নি। এখন পর্যন্ত সরকার তার কোনো খোঁজ দিতে পারেনি। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর এই ধরনের ঘটনা অনেকগুলো সংঘটিত হয়েছে। আমাদের হিসাবে আমাদের দলের লোকই আছে ৬শর ওপরে।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে আবারও সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানান মির্জা ফখরুল।