অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

চট্টগ্রামে বর্ষবরণ উৎসবে প্রাণের স্পন্দন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ০৪:১২ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২২ বৃহস্পতিবার  

করোনাকে পেছনে ফেলে দুবছর পর বাংলা নববর্ষের উৎসবে মেতেছে চট্টগ্রামবাসী। এবার সুস্থ সময়ের প্রত্যাশায় মঙ্গলবার্তা ছড়িয়ে শুরু হয় ১৪২৯ সনের বাংলা নববর্ষের মঙ্গল শোভাযাত্রা। এবারে নির্বিঘ্নে বর্ষবরণ উৎসবে মানুষের স্বতস্ফুর্ত উপস্থিতিতে যেন ফিরে পেয়েছে প্রাণের স্পন্দন। 

চট্টগ্রাম নগরের ডিসি হিল, সিআরবির শিরীষতলা, শিল্পকলা একাডেমি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ (চবি) বিভিন্ন স্থানে হয়েছে নববর্ষকে বরণ করে নেওয়ার নানা আয়োজন।

শোভাযাত্রায় আবহমান বাংলার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীকী উপস্থাপনের নানা বিষয় স্থান পেয়েছে। শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো’ গানে বরণ করে নেন বাংলা নববর্ষকে। এবার ৪৫তম বৈশাখ বরণের থিম ছিল ‘পহেলা বৈশাখ বাঙালির, সবার যোগে জয়যুক্ত হোক’।

চট্টগ্রামে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে কড়া নিরাপত্তা বলয়। সন্দেহভাজনদের তল্লাশি চালানো হচ্ছে। 

এরআগে, বর্ষবরণের অনুষ্ঠান দুপুর ২টার মধ্যে শেষ করাসহ ১১ দফা নির্দেশনা দেয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। সেই অনুযায়ী দুপুর ২টার মধ্যেই শেষ হয় সব অনুষ্ঠান।  

এদিকে সকাল থেকেই অনুষ্ঠানস্থলে লোকজনের প্রচ- ভিড় দেখা গেছে। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে চট্টগ্রামে বর্ষবরণের কোনও অনুষ্ঠান হয়নি। তাই এবার বর্ষবরণের আয়োজনে সবার ছিল স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতি, যেন জড়তা কাটিয়ে জেগে ওঠার চেষ্টা। 

নগরের ডিসি হিলে সকাল থেকে শুরু হয় পহেলা বৈশাখ-বরণ। সংগীত ভবন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, ওডিসি ড্যান্স মুভমেন্টসহ বিভিন্ন সংগঠন নাচ-গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেছে উৎসবে।

সিআরবির শিরীষতলায় সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল। তবে এবার সেখানে বলীখেলা হয়নি।

এছাড়া চবি চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে সকাল ১০টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়। রমজান মাসের কারণে মঙ্গল শোভাযাত্রাটি যায় কাজীর দেউড়ি পর্যন্ত।
চারুকলা অনুষদে এবারের আয়োজন চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীকে উৎসর্গ করা হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে চিত্রশিল্পী রশিদ চৌধুরীর স্লোগান ‘শিল্পের প্রয়োজন; বিবেকের জন্য, জীবনের জন্য’কে প্রতিপাদ্য করা হয়েছে।

নববর্ষ উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুচরিত দাশ খোকন বলেন, সকাল ৭টায় আমাদের নির্ধারিত অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়। গান, নাচ, আবৃত্তিসহ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে বাংলা নতুন বছরকে বরণ করা হয়। এবার ৩২টি সংগঠন পারফর্ম করেছে। সিএমপির নির্দেশনা মেনে দুপুর ২টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করা হয় বলে জানান তিনি।  

এদিকে সকাল ৯টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে শুরু হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা। জেলা প্রশাসনের উদ্যাগে আয়োজিত এ শোভাযাত্রা এমএম আলী সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। ডিসি হিলে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদযাপন পরিষদের আয়োজনে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শুরু হয় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায়।