গৌরাঙ্গ দাসের হস্তশিল্প দেশ ছাড়িয়ে এখন ইউরোপে
মালিকুজ্জামান কাকা, যশোর
প্রকাশিত: ০৬:৫১ পিএম, ২৪ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার
পরিবারসহ বিভিন্ন শো’পিস তৈরিতে ব্যস্ত গৌরাঙ্গ দাস
বাঁশের চোঁচ, নারিকেলের কাতা (ছোবড়া) পেটের আঁশ, ধানের বিছালী, খেজুর গাছের আঁচা (ফাতরা) ও খড়কুটার মত ফেলে দেয়া জিনিস দিয়ে বিভিন্ন ডিজাইনের শো’পিচ তৈরি করেন যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়া গ্রামের গৌরাঙ্গ দাস। তার এ হস্তশিল্প পণ্য এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ইউরোপের সাতটি দেশে।
একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় এসব পণ্য রফতানি সম্ভব হচ্ছিলো বলে জানিয়েছেন তিনি।
যশোর সদর উপজেলার ১৪ নং নরেন্দ্রপুর ইউনিয়নের চাউলিয়া দাসপাড়ার বাসিন্দা মেধাবী এই হস্তশিল্পী গৌরাঙ্গ দাস।
সরেজমিনে তার বাড়িতে দেখা যায় ইউরোপিয় ইউনিয়ন ভূক্ত দেশ বেলজিয়াম থেকে অর্ডার পাওয়া বিভিন্ন ডিজাইনের ভিন্নভিন্ন নামীয় পাখির বাসা সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে কর্মব্যস্ত গৌরাঙ্গ দাস তার স্ত্রী-সন্তান ও আরো ৭-৮ জন।
এ নিয়ে কথা বলে জানা যায়, গৌরাঙ্গ দাস শুধু পাখির বাসায় তৈরি করেন না তিনি তার দুই চোখে যা দেখেন অথবা কেউ যদি ছবি তুলে বা ক্যাটালগ দেখিয়ে কিছু বানিয়ে দিতে বলেন হুবাহু সে ভাবেই তাই গড়িয়ে দিতে পারেন নিমিষেই। এটি তার একটি বিশেষ সৃজনশীল গুণ।
গৌরাঙ্গ দাসের তৈরি দৃষ্টিনন্দন ও মুগ্ধকর শোপিস যে কারোরই মন ছুঁয়ে যাবে। তার তৈরিকৃত শোপিচ গুলোর মধ্যে অন্যতম বাঁশের চাটই বা চাঁচ দিয়ে বিশেষভাবে বানানোর নৌকা, ছনের কুঁড়েঘর, ফুলদানি সহ নান্দনিক ডিজাইনের খেলনা সামগ্রীও।
করোনা মহামারির আগে তার এই হস্তশিল্প পণ্য রপ্তানি হতো অস্ট্রেলিয়া, হলান্ড, পর্তুগাল, জার্মান, নিউজিল্যান্ড ও বেলজিয়ামের মত দেশে। দেশ গুলোতে এসব হস্তশিল্প পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। যা করোনা মহামারিতে থমকে গেছে।
গৌরাঙ্গ দাস ১৯৮৬ সাল থেকে বাঁশ ও বেত দিয়ে ডালা, ঝুড়ি, কুলো, ঢামা, চালন, মাছ ধরা পোলো ইত্যাদি সব গৃহস্থলীর আসবাবপত্র তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আধুনিকতার বদৌলতে এখন ওসব জিনিসের কদর না থাকায় বাপদাদার পেশা না পাল্টে মানুষের চাহিদা বিবেচনায় পণ্য তৈরিতে ভিন্নতা এনে দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন শোপিচ তৈরি করে আসছিলেন। আশা করছেন করোনা কেটে গেলে আবারও রফতানি বাড়বে।