অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শাবিপ্রবি: শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত দাবি দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০১:৫৩ পিএম, ২৩ জানুয়ারি ২০২২ রোববার  

শাবিপ্রবি: শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত দাবি দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

শাবিপ্রবি: শিক্ষামন্ত্রীকে লিখিত দাবি দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে তাদের দাবি লিখিতভাবে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

উপাচার্য ইস্যুতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শনিবার গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দীপু মনি আশ্বস্ত করেন, লিখিত দাবি পেলে সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেবে সরকার।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গণমাধ্যমকে বলেছেন ‘শিক্ষামন্ত্রী আমাদের দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার কথা বলেছেন। এরপর আজ আবার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে মন্ত্রীর কাছে আমাদের প্রস্তাব জমা দেব।'

এখনও সময় নির্ধারণ না হলেও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ভার্চুয়াল আলোচনা রবিবার হবে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

এর আগে শনিবার রাতে ঢাকায় নিজ বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রয়োজনে তার প্রতিনিধিদল শাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যখন কথা বলতে রাজি হবে, তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবে। পারিবারিক কারণে এখন তিনি সিলেটে যেতে পারছেন না।

এরপর রাত সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। মন্ত্রীর পক্ষে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেনসহ কয়েকজন নেতা। এতে শিক্ষামন্ত্রী ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন ২৪ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজনের বাবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে এখন ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৮ শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের শরীরে স্যালাইন পুশ করেছেন চিকিৎসকেরা। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়।  

পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ওই হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।