অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

স্বল্প রান তাড়ায় কুমিল্লার কষ্টার্জিত জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:০৫ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার  

স্কোয়াড বিবেচনায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স এবার অনেকেরই ফেবারিট। পঞ্চপাণ্ডবের কেউ না থাকলেও লিটন, ইমরুল, মোস্তাফিজকে নিয়ে দুর্দান্ত এক দল গড়েছে কুমিল্লা। প্রথম ম্যাচের বোলিংয়ে দেখাও গেলো সে দাপট। সিলেট সাইনরাইর্সকে থামিয়ে দিয়েছিলো শতরানের নিচে। তবে ব্যাটিংয়ে নিজেদের ছাপ রাখতে পারেনি দুইবারের চ্যাম্পিয়ন দলটি। অল্প টার্গেট পাড়ি দিতেও কষ্ট করতে হয়েছে ইমরুল কায়েসদের। 

সিলেটের দেওয়া ৯৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে হিমশিম খেতে হয়েছে কুমিল্লাকে। শেষ পর্যন্ত ৮ বল ও দুই উইকেট হাতে রেখে জিতলেও পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলে নিয়ে কুমিল্লাকে হারের চোখ রাঙানি দিয়েছেন সোহাগ গাজী ও তাসকিন আহমেদরা। 

অধিনায়ক ইমরুল অবশ্য ইনিংসের গোড়াপত্তন করেননি আজ। দুই বিদেশি রিক্রুট ফাফ ডু প্লেসি এবং ক্যামেরুন ডেলপোর্ট ওপেন করতে নামেন। তবে উইলোবাজি করতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে উড়ে আসা দুজন। দলীয় ১৩ রানে মাথায় ব্যক্তিগত ২ রান করে সোহাগ গাজীর হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফাফ। ডেলপোর্ট গাজীর দ্বিতীয় শিকার হন ১৬ রান করে। ১৯ বলের ইনিংসটি সাজান ১টি করে চার-ছয়ের মারে।

তিনে নামা মুমিনুল হকের ইনিংসও ছিল ধীরগতির। মোসাদ্দেক হোসেনকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন মুক্তার আলির হাতে। ২০ বল খেলে ১৫ রান করেন তিনি। ইমরুল কায়েস ১০ ও আরিফুল হক ৪ রান করে ফিরে গেলে দলীয় ৫৫ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে শঙ্কা তৈরি হয় কুমিল্লা শিবিরে। পরে করিম জানাত এবং নাহিদুলের ২৭ রানের পার্টনারশিপ দলকে চাপ মুক্ত করে। করিম ১৮ রান করে আউট হলে ভাঙে এই জুটি।

করিম আউট হওয়ার পর নাহিদুলও ধৈর্য ধরতে পারেননি। নাজমুল ইসলাম অপুর হাফ-ট্রাকার ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন কলিন ইনগ্রামের হাতে। ১৬ বলে সমান ১৬ রান করে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি শহিদুল ইসলামও। নাজমুল ইসলাম অইপুর বলে দুর্দান্ত একটি ক্যাচ নিয়ে শহিদুলকে আউট করেন রবি বোপারা। এতে ৮৮ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে কুমিল্লা। 

শেষদিকে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে টেনে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। শেষ ৩৬ বলে ১৬ রান তুলতে গিয়ে মাত্র ৮ বল হাতে রেখে ২ উইকেটের জয় পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সিলেটের হয়ে অপু ৩, মোসাদ্দেক এবং সোহাগ গাজী ২টি করে উইকেট নেন।  

এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের অধিনায়ক ইমরুল কায়েস। ব্যাট হাতে নেমে সাবধানী শুরু সিলেটের দুই ওপেনার এনামুল হক বিজয় ও দক্ষিণ আফ্রিকার কলিন ইনগ্রামের। প্রথম ১৬ বলে মাত্র ৭ রান নিতে পারেন তারা। 

তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে এনামুলকে শিকার করে কুমিল্লাকে প্রথম সাফল্য এনে দেন অফ-স্পিনার নাহিদুল ইসলাম। ৯ বলে ৩ রান করেন এনামুল। 

প্রথম উইকেট পতনের পর মারমুখী হয়ে উঠেন ইনগ্রাম। বাঁ-হাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে বাউন্ডারি মারার পর নাহিদুলের তৃতীয় ওভারের শেষ দুই বলে ১টি করে চার-ছক্কা মারেন তিনি। ষষ্ঠ ওভারে শহিদুলের তৃতীয় ডেলিভারিতে  চার মারার পরের বলেই বিদায় নেন ইনগ্রাম। ২১ বলে ৩টি চার ও ১টি ছক্কা ২০ রান করেন তিনি। 

আউট হওয়ার আগে দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের সাথে ২৭ রান যোগ করেন ইনগ্রাম। ইনগ্রামের আউটের পরই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে সিলেট। ৬৫ রানে সপ্তম উইকেটের পতন ঘটে তাদের। মিঠুন ৫, অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন ৩, অলক কাপালি ৬ ও মুক্তার আলি শুন্য রানে ফিরেন। মাঝে ইংল্যান্ডের রবি বোপারা ইনিংসের শুরুটা ভালো করেও বড় স্কোর করতে পারেননি। ১৯ বলে ১৭ রান করেন তিনি। 

শেষদিকে সোহাগ গাজীর ১২ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেসরিক উইলিয়ামসের ৯ রানের সাথে পুরো ইনিংসে অতিরিক্ত থেকে আসা ১৯ রানের পরও সিলেটের দলীয় স্কোর তিন অংকে পৌঁছাতে পারেনি। ১৯ দশমিক ১ ওভারে ৯৬ রানে অলআউট হয় সিলেট।