অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

জীবনের শেষ দিনটিও নগরবাসীর জন্য উৎসর্গ করবো: আইভী

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: ১১:২৯ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২ রোববার  

জনগণের চাহিদামতো কাজ করার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী

জনগণের চাহিদামতো কাজ করার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের নবনির্বাচিত মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী

সামনের দিনগুলোতে জনগণের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করার প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সদ্য বিজয়ী সেলিনা হায়াৎ আইভী। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হ্যাটট্রিক জয়ের পর জীবনের শেষ দিনটিও নগরবাসীর জন্য উৎসর্গ করবেন বলে জানিয়েছেন আইভী। সেইসঙ্গে নির্বাচনে তিনি উন্নয়নের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সেগুলোও পূরণ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি। ভোটগ্রহণ ধীরগতি না হলে ভোটের ব্যবধান অন্তত এক লাখ হতে পারত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

**তৃতীয়বারের মতো নারায়ণগঞ্জের মেয়র হচ্ছেন আইভী

টানা তৃতীয় জয়ের পর রবিবার (১৬ জানুয়ারি) রাতে নগরীর দেওভোগে নিজ বাড়ির বারান্দায় বসে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন আইভী।

তিনি আরও বলেন, ‘এই জয় আমার মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনার জন্য। এই জয় নারায়ণগঞ্জের সব নিবেদিত প্রাণের, যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভোট দিয়ে আমাকে জয়যুক্ত করেছেন। এটি মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের জয়। আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি আমার নেত্রীর প্রতি, যিনি আমাকে নৌকা তুলে দিয়েছেন। আমার দলের প্রতি, যারা আমার সঙ্গে কাজ করেছেন।’

নারায়ণগঞ্জবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইভী বলেন, ‘সব কটি নির্বাচন ছিল চ্যালেঞ্জিং। একেকটার ধরন একেক রকম ছিল। আমি এত চ্যালেঞ্জের কথা বলতে চাই না। নির্বাচন মানেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা, প্রতিযোগিতা। সব অতিক্রম করে এ জয়টা নিয়ে আসার মধ্যেই আমাদের সাফল্য।’ আর জনগণের আস্থাকে নিজের সাফল্যের ‘নেপথ্য নায়ক’ হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।

নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমার যত কিছু হয়েছে বা অতীতেও যে বিজয় হয়েছে, সবকিছুর মূলে কিন্তু আমার জনশক্তি, জনস্রোত এবং জনসমর্থন। জনসমর্থন ‍যদি না থাকত, তাহলে আমি নারায়ণগঞ্জে দাঁড়িয়ে থাকতে পারতাম না।’

কেন এই জনসমর্থন তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন নৌকা প্রতীকের এই বিজয়ী প্রার্থী। তিনি বলেন, ‘এটা সত্য যে, জনগণের যে আস্থা আমার প্রতি, তার কারণ মানুষকে কখনও মিথ্যে বলিনি, কখনও অযথা আশ্বাস দিইনি। আমি গতানুগতিকের বাইরে গিয়ে আপনাদের সঙ্গে মিশেছি, কাজ করেছি। যেটা পেরেছি, সেটা করেছি; যেটা পারিনি, সেটা বলিনি। সবচেয়ে বড় কথা হলো নিঃস্বার্থভাবে মানুষকে ভালোবেসেছি। মানুষ প্রতিবারই আমাকে প্রতিদান দিয়েছে।’

দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিও কৃতজ্ঞতা ফুটে উঠেছে তার কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আমার দল আমার প্রতি আস্থা রেখেছে। আমার নেত্রী আমাকে নৌকা দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জবাসী তাকে বিমুখ করেনি। এই নারায়ণগঞ্জ প্রমাণ করল- এটা আওয়ামী লীগের ঘাঁটি এবং বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের জন্ম এই নারায়ণগঞ্জেই হয়েছিল।'

আরও বলেন,  ‘তারই ধারাবাহিকতা রক্ষা পেরেছি বলে নিজেকে গর্বিত মনে করি। শেখ হাসিনার একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে সারা জীবন আমি এই দল করব। জয় বাংলা বলব। কিন্তু সবকিছুর ঊর্ধ্বে গিয়ে আমি নারায়ণগঞ্জের মানুষের সেবা করব। দল-মতের ঊর্ধ্বে উঠে জনকল্যাণে কাজ করব।’

এই নির্বাচনে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা তৈমুর আলম খন্দকার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তৈমুরকে কাকা সম্বোধন করে আইভী বলেছেন, ‘অবশ্যই উনাকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করব। কাকা তো আগেও অনেক সময় অনেক কথা বলেছেন। সহযোগিতা করেছেন। উনাকে সম্মান করি, শ্রদ্ধা করি।’

নির্বাচনী প্রচারে তৈমুর আলম খন্দকার যেসব পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন, সেগুলো বিবেচনায় নেওয়ার কথা বলেছেন আইভী। ওই সব পরিকল্পনার অনেক কিছুই তার পরিকল্পনার মধ্যেও আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আইভী বলেছেন, ‘উনিও তো নারায়ণগঞ্জের মানুষ। উনিও নারায়ণগঞ্জের মানুষের কল্যাণে কথা বলেছেন, আমিও তা বলেছি। তাই উনিসহ সবার সহযোগিতা ও পরামর্শ নিয়ে কাজ করব।’

নারায়ণগঞ্জের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমানকে ইঙ্গিত করে করে একজন সাংবাদিক আইভীর উদ্দেশে বলেন, নারায়নগঞ্জ–৪ আসনের সাংসদ যে কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন, সেখানে নৌকা প্রতীক কম ভোট পেয়েছে। এ ব্যাপারে আপনার মন্তব্য কী, জবাবে আইভী বলেন, ‘কে কোথায় ভোট দিয়েছে, কোথায় দেয়নি, তা বড় বিষয় নয়। ওই কেন্দ্র তৈমুর কাকার কেন্দ্র। তৈমুর কাকা তার কেন্দ্রে পাস করবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার কেন্দ্রেও তো আমি পাস করেছি।’

শামীম ওসমানকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করবেন কি না, এই প্রশ্নের জবাবে আইভী বলেন, যে কেউ মতামত দিতে পারেন। অংশগ্রহণ করতে পারেন। তিনি সবাইকে নিয়ে কাজ করবেন।