অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ঘুড়িতে ছেয়ে গেছে পুরান ঢাকার আকাশ, চলছে সাকরাইন উৎসব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:২৭ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার   আপডেট: ০৪:২৮ পিএম, ১৪ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

চলছে সাকরাইন উৎসব। ফাইল ছবি

চলছে সাকরাইন উৎসব। ফাইল ছবি

পুরান ঢাকায় আকাশ আস্তে আস্তে ঘুড়িময় হয়ে উঠছে। ঘুড়িগুলো যেনো জানান দিচ্ছে আজ পৌষমাসের শেষদিন। সাকরাইন উৎসব নামে যে দিনটিকে পুরান ঢাকার বাসিন্দারা বরণ করেন নেন ঘুড়ি-ফানুস উড়িয়ে ও আতশবাজি ফুটিয়ে। 

তবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নিষেদাজ্ঞা থাকায় এবার কেবল ঘুড়ি উড়িয়েই পালন করতে হচ্ছে উৎসব। থার্টি ফার্স্ট নাইটে ফানুসের কারণে বেশ কয়েক স্থানে আগুনের ঘটনায় এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে প্রশাসন। 

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল থেকেই পুরান ঢাকায় শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। প্রতিটি বাসাবাড়িতে চলছে ঘুড়ি ওড়ানোর প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে থাকছে গান-বাজনার আয়োজন। বাড়িতে বাড়িতে চলছে পিঠা বানানোর ধুম। ছোট থেকে বৃদ্ধ সবাই মেতেছেন সাকরাইন উৎসবে। সবার চোখেমুখেই যেন উৎসবের ছোঁয়া।

উৎপত্তিগত জায়গায় সংস্কৃত শব্দ 'সংক্রান্তি' ঢাকাইয়া অপভ্রংশে সাকরাইন শব্দে রূপ নিয়েছে। বাংলা পৌষ মাসের শেষ ও মাঘ মাসের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী এই ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করে থাকে পুরান ঢাকাবাসী।

দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় বিভিন্ন আয়োজনে সবাই আনন্দে মেতে ওঠে পুরান ঢাকাবাসী। ঘুড়ি তৈরিতে রয়েছে শৈল্পিক নিদর্শন। সঠিকভাবে, সঠিক মাপে ঘুড়ি তৈরি করতে না পারলে আপনার ঘুড়ি আকাশের নীল রং ধরতে পারবে না। এ জন্য বাহারি রঙের ঘুড়ি তৈরি করা হয় সাকরাইন উৎসবে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে গোয়াদার, চোকদার, মাসদার, গরুদান, লেজলম্বা, চারভুয়াদার, পানদার, লেনঠনদার, গায়েল ঘুড্ডিগুলো অন্যতম। বাহারি রঙের কাগজ, পলিব্যাগ ও বাঁশের অংশবিশেষ দিয়ে তৈরি হয় এসব ঘুড়ি। সঙ্গে থাকে বাহারি রঙের নাটাই, এ ছাড়া নাটাই ও ঘুড়িতে সংযোগ করা হয় বাহারি রঙের সুতা। সেসব সুতার মধ্যে রয়েছে রক সুতা, ডাবল ড্রাগন, কিং কোবরা, ক্লাক ডেভিল, ব্ল্যাক গান, ডাবল গান, সম্রাট, ডাবল ব্লেট, মানজা, বর্ধমান, লালগান ও টাইগারসুতা অন্যতম।

আরও পড়ুন: সাকরাইনে ফানুস-আতশবাজি নিষিদ্ধ

এসব বাহারি ঘুড়ি নিয়ে আয়োজন করা হয় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা। বাসার ছাদে এসব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়ে থাকে। প্রতিযোগীদের মাঝে চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ নির্ধারণ করা হয়। ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতায় মূলত একসঙ্গে ঘুড়ি ওড়ার পর যিনি যত বেশি উড়ন্ত ঘুড়ির সুতা দিয়ে ঘুড়ি কাটতে পারবেন, এবং শেষ পর্যন্ত উড়ন্ত ঘুড়ি অক্ষত রাখতে পারবেন তিনি হবেন চ্যাম্পিয়ন। বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও হয় জাঁকজমকপূর্ণ। সেই সঙ্গে নানা রকমের খাবারের আয়োজন থাকে এই অনুষ্ঠানে।