অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

আজ শুভ বড়দিন

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:৫৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার   আপডেট: ১০:২৪ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার

আজ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মহামানব মুক্তিদাতা প্রভু যিশুর জন্মদিন

আজ খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মহামানব মুক্তিদাতা প্রভু যিশুর জন্মদিন

আজ বড়দিন। খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের মহামানব মুক্তিদাতা প্রভু যিশুর জন্মদিন। বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে যিশুর জন্মোৎসব। আজকের এই আনন্দঘন মুহূর্তে সবাইকে খ্রিষ্টীয় প্রীতিপূর্ণ শুভেচ্ছা। 

এই দিনে খ্রিষ্টধর্মের প্রবর্তক যিশুখ্রিষ্ট বেথলেহেমে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, সৃষ্টিকর্তার মহিমা প্রচার এবং মানবজাতিকে সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করার জন্য যিশু জন্ম নিয়েছিলেন।

গত বছর বৈশ্বিক করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে উৎসব উদ্‌যাপন হয়েছিল অনেকটা অনাড়ম্বরভাবে। তবে এবার বড়দিনের আয়োজনে চাকচিক্য কিছুটা বেড়েছে। যদিও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা বহাল আছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতোও সারা দেশের সব গির্জাও আলোকিত আলোকসজ্জায়। বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থানে শোভা পাচ্ছে বর্ণিল রূপে সাজানো ‘ক্রিসমাস ট্রি’ কিংবা সান্তাক্লজের ছবি। বিশেষ কেক কেটে দিনটি উদ্যাপিত হচ্ছে। আর গির্জায় গির্জায় বিশেষ প্রার্থনা। গির্জা প্রাঙ্গণে থাকা গাছে ঝোলানো হয়েছে রংবেরঙের বাতি।দেশে দেশে প্রার্থনা একটাই, পৃথিবী থেকে দূর হোক করোনাভাইরাস মহামারি। অবসান হোক জরা-মৃত্যু-শোকের।

উৎসব উদ্‌যাপনের শুরু হয় শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রার্থনা অনুষ্ঠানের পর থেকেই। তেজগাঁও গির্জায় অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় দুদিনই (শুক্রবার ও শনিবার) প্রার্থনার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে দুই ধাপে। প্রথম দিন সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০ টা এবং বড়দিনের দিন (শনিবার) সকাল ৭ ও ৯টা। 

অন্যদিকে বড়দিনকে ঘিরে রাজধানীর বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেলগুলোও সাজানো হয়েছে। রঙিন আলোকসজ্জায় ‘ক্রিসমাস ট্রি’ সাজানোর পাশাপাশি ব্যবহার করা হয়েছে রংবেরঙের আলোকসজ্জা। হোটেলের লবিতে ও ক্যাফে বাজার রেস্তোরাঁয় ক্রিসমাস ট্রি হাউস ও সান্টা ক্লজ বিভিন্ন আলোকসজ্জার মাধ্যমে সুসজ্জিত করা হয়েছে।

এবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা থাকায় ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের বাইরে লোকসমাগম হয়, এমন উৎসব উদ্‌যাপনে খ্রিষ্টভক্তদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে গির্জার বাইরে কোনো আনুষ্ঠানিকতা রাখা হচ্ছে না।

তবে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এসব হোটেলে আগত সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। প্রবেশের আগে সবার তাপমাত্রা পরীক্ষা করে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে অতিথিদের প্রবেশ নিশ্চিত করা হবে।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী-

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বার্তায় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে বলেছেন, ‘যীশুখ্রিষ্ট ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারী। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি বহু ত্যাগের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও খ্রিষ্টধর্মের সুমহান বাণী প্রচার করেন। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আহ্বান জানিয়ে গেছেন।’

তিনি আরও বলেন, যীশুখ্রিষ্ট মানুষের মধ্যে ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি ও ন্যায় প্রতিষ্ঠাসহ শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দেন। জাগতিক সুখের পরিবর্তে যীশুখ্রিষ্ট ত্যাগ, সংযম ও দানের মাধ্যমে পরমার্থিক সুখ অর্জনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। জাতিতে জাতিতে সম্প্রীতি ও ঐক্য স্থাপনসহ অশান্ত বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যীশুখ্রিষ্টের শিক্ষা ও আদর্শ খুবই প্রাসঙ্গিক বলে আমি মনে করি।’ 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পৃথিবীতে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা প্রবর্তন ছিল যীশুখ্রিষ্টের অন্যতম ব্রত। মহামতি যীশু বিপন্ন ও অনাহারক্লিষ্ট মানুষের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেন। তার জীবনাচারণ ও দৃঢ় চারিত্রিক গুণাবলির জন্য মানব ইতিহাসে তিনি অমর হয়ে আছেন।’

প্রধানমন্ত্রী কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপটে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবাইকে এবারের বড়দিন উৎসব উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের দেশ ও জাতি তথা বিশ্ববাসীকে এই মহামারি থেকে যেন মুক্তি দেন, এই প্রার্থনা করি।’