অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

এই ম্যাজিক ব্যাগ আমার সন্তানের জীবনে সত্যিই ম্যাজিক এনে দিয়েছে 

অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:৫৩ পিএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১ রোববার  

সেভ দ্য চিলড্রেন এর ফোস্টারিং প্লেফুল হোমস প্রকল্পের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে রবিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে অংশীজনদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। 

প্রকল্প হতে সহায়তা প্রাপ্ত একজন শিশুর অভিভাবক বলেন, “কোভিডকালীন এই সময়ে এই প্রকল্প হতে ম্যাজিক ব্যাগ পেয়ে আমার সন্তান ও আমার অনেক ভালো সময় কেটেছে। খেলার পাশাপাশি অনেক উপকরন আছে যা দিয়ে শিশুরা সহজেই লেখাপড়া শিখতে পারে। এছাড়া আমি টিভিতে গল্প বলা আর খেলনা তৈরির ভিডিও দেখেছি যা আমাকে শিশুদের জন্য গল্প বলার ও বাড়িতে কিভাবে সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে খেলনা বানানো যায় তার ধারনা দিয়েছে। আমার মনে হয়েছে শিশুদের মানসিক বিকাশে এই ধরনের সহায়তা খুবই দরকার।”       

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিশু মাতৃস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট এর শিশুবিভাগ এর প্রধান প্রফেসর ড. ওয়াহিদা খানম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. আহসান হাবীব, অধ্যাপক, শিক্ষা ও গবেষনা ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। আরো উপস্থিত ছিলেন   কামাল হোসেন, উপদেষ্টা, শিক্ষা বিভাগ, সেভ দ্য চিলড্রেন এবং   হোসনে আরা খন্দকার, পরিচালক, শিশুদের জন্য প্রোগ্রাম, সেভ দ্য চিলড্রেন। 

পাশপাশি প্রকল্পের পার্টনার মানবিক সাহায্য সংস্থা হতে আব্দুল হালিম, ডেপুটি ডিরেক্টর, ফাইনান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্ট এবং সেইন্ট বাংলাদেশ হতে   কাজী জাহাঙ্গীর কবির, নির্বাহী পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানের শুরুতে উদ্বেধনী বক্তব্য রাখেন হোসনে আরা খন্দকার, পরিচালক, শিশুদের জন্য প্রোগ্রাম, সেভ দ্য চিলড্রেন। এরপর বিকাশ চন্দ্র সরকার, ম্যানেজার, ফোস্টারিং প্লেফুল হোমস প্রকল্প সম্পর্কে সকলের মাঝে তুলে ধরেন। অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক পর্যায়ে   শাহীনুজ্জামান, ম্যানেজার, মিল, সেভ দ্য চিলড্রেন প্রকল্প হতে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করেন যা উপস্থিত অতিথিদের প্রকল্প সম্পর্কে জানতে আরো আগ্রহী করে তোলে, ফলে একটি প্রশ্নোত্তর পর্বের আয়োজন করা হয়। 

প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. ওয়াহিদা খানম তার বক্তব্যে সেভ দ্য চিলড্রেন এবং এর সহযোগী সংস্থাসমূহকে ধন্যবাদ জানান ফোস্টারিং প্লেফুল হোমস প্রকল্পের মতো এরকম একটি সময়োপযোগী কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য। তিনি বলেন, শিশুদের সঠিক শারিরীক ও মানসিক বিকাশে এ ধরনের কার্যক্রম আরো বড় পরিসরে গ্রহণ করা প্রয়োজন, বিশেষ করে কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই প্রকল্প হতে অর্জিত অভিজ্ঞতা পরবর্তিতে এধরনের উদ্যোগে সহায়ক হবে বলে তিনি মনে করেন। পাশপাশি, প্রকল্পের বাস্তবায়ন সহযোগী সংস্থাদ্বয়ের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, করোনাকালীন সময়ে এই উদ্যোগ কমিউনিটির কাছে প্রসংশিত হয়েছে যদিও প্রকল্পের সময়কাল কম ছিল এবং অতিমারির কারনে অনেক চ্যালেঞ্জ এর মধ্যে দিয়ে এই প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। তবে সঠিক পরিকল্পনা, সকলের মাঝে সমন্বয় এবং বাস্তবায়ন এলাকার সরকারি কর্মকর্তা ও কমিউনিটির সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারলে এধরনের প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব।   

সেভ দ্য চিলড্রেন এর পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, প্রকল্পের এই অভিজ্ঞতাকে পরবর্তিতে ধরে রাখার জন্য প্রকল্পের আওতায় তৈরিকৃত ম্যাজিক ব্যাগ, সকল খেলার ও শিখন উপকরণ, গল্প বলার ও খেলনা বানানোর ভিডিও ও অভিভাবকদের জন্য প্রস্তুতকৃত নির্দেশিকাসমূহ যাতে অন্যান্য প্রকল্প বা প্রতিষ্ঠান ব্যবহার কওে আরো শিশুদের সহায়তা করতে পারে সেই উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রয়োজনে সরকারের সংশ্লিষ্ঠ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের সাথেও যোগাযোগ করা হবে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন   শাহীন ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক, শিক্ষা বিভাগ, সেভ দ্য চিলড্রেন।     
 
উল্লেখ্য যে, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী আর্লি চাইল্ডহুড কেয়ার এন্ড ডেভেলপমেন্ট (ইসিসিডি) কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ফোস্টারিং প্লেফুল হোমস্ প্রকল্পটি একযোগে বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানে বাস্তবায়িত হয়েছে। এই প্রকল্পটি লেগো ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং সেভ দ্য চিলড্রেন এর কারিগরি সহায়তায় এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান মানবিক সাহায্য সংস্থা (এমএসএস) এবং সেইন্ট বাংলাদেশ এর মাধ্যমে ০-৫ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড-১৯ সময়কালে তাদের শিখন দক্ষতা এবং বিকাশে সহায়তার জন্য খেলনা ও শিখন উপকরণ ব্যবহার করে বাড়িতে খেলার অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে কাজ করেছে। এই প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে শিশুর জন্য খেলনা ও শিখন উপকরণ সমৃদ্ধ একটি ম্যাজিক ব্যাগ প্রস্তুত ও বিতরণ; অভিভাবকগণকে গল্প বলা এবং বাড়িতে খেলনা তৈরিতে উৎসাহিত করতে এ সংক্রান্ত ভিডিও প্রস্তুত ও প্রদর্শন; এবং অভিভাবকগণকে মানসিক স্বাস্থ্য ও মনোসামাজিক সহায়তা বিষয়ক তথ্য প্রদান। এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-আরবান ও বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও মুলাদী  উপজেলার ১২০০০ শিশু এবং ৪২৮৬ জন অভিভাবক সরাসরি সহায়তা পেয়েছে।