অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

৪৫ বছর আগে পাচার হওয়া শিশুকন্যার সন্ধান মিলেছে পাকিস্তানে

চিত্তরঞ্জন সাহা চিতু, চুয়াডাঙ্গা

প্রকাশিত: ১১:৪৭ এএম, ১৪ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০১:২০ পিএম, ১৪ অক্টোবর ২০২১ বৃহস্পতিবার

চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার বাবুপাড়া থেকে ৪৫ বছর আগে পাচার হয়ে যাওয়া শিশুকন্যা কোমো  খাতুনের সন্ধান মিলেছে পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। সেই শিশুকন্যার বয়স এখন ৫৪ বছর এবং এক প্রতিবন্ধি ব্যক্তির সাথে তার বিয়ে দেয়া হয়েছে। পাকিস্তানের এক ইউটিউব চ্যানেলের সাক্ষাতকারে কোমো খাতুন তার বাড়ি আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ায় জানিয়ে জীবনে একবার তার স্বজনদের দেখার আকুতি জানান।

আলমডাঙ্গার বাবুপাড়ার মৃত শেখ মনির উদ্দীনের মেয়ে কোমো খাতুনের বয়স যখন ৮ বছর তখন পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েন। পাচারকারীরা তাকে ১৯৭৯ সালের দিকে পাকিস্তানে নিয়ে করাচির (ইসলামাবাদ) এক ব্যক্তির নিকট ৫৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়। পরে ওই ক্রেতা তার প্রতিবন্ধী ছেলের সাথে কোমো খাতুনের বিয়ে দেন। কয়েক দিন পূর্বে পাকিস্তানের এক ইউটিউব চ্যানেলের সাক্ষাতকারের এ সব তথ্য জানিয়ে কোমো খাতুন জীবনে একবারের জন্য হলেও বাংলাদেশে তার স্বজনদের কাছে ফেরার আকুতি জানান।

সাক্ষাৎকারের ভিডিওতে কোমো খাতুনের পাশে তার প্রতিবন্ধী স্বামীকে বসে থাকতে দেখা যায়। যখন বিয়ে হয় তখন কোমোর বয়স ছিল মাত্র ১১/১২ বছর এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটির বয়স ৩০ বছর। তিনি গত ৪৫ বছর ধরে প্রতিবন্ধী স্বামীর সংসার করছেন।

তার ভাইয়ের সাথে শত্রুতার জের ধরে বাংলাদেশি এক মহিলা তাকে ফুঁসলিয়ে সাথে নিয়ে ভারত হয়ে সড়কপথে পাকিস্থানের করাচীতে চলে যায়। সেখানে ৩ বছর যাবৎ নানা ভাবে নির্যাতনের পর তাকে বিক্রি করে দেয়া হয়। শুধু তিনি একা নন, সেই সময়ে আরও অনেক বাংলাদেশী মেয়ে একসাথে এভাবে অপহরণের শিকার হন।

তারা ৫ বোন ও ২ ভাই, যাদের মধ্যে ৪ বোন ও ২ ভাই আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ায় থাকেন। তিনি মেজো বোনের নাম বলেছেন আমিরন। এদিকে, উর্দু ভাষায় এ সাক্ষাতকারের ভিডিওটি কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওটি আলমডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর বাবুপাড়ার আলী আজগর সাচ্চুর নজরে আসে। তিনি খুঁজে বের করেন পাচার হওয়া কোমো খাতুনের পরিবারকে। গতকাল ১১ অক্টোবর বিকেলে কোমো খাতুনের বোনদের খুঁজে বের করেন তিনি। এখন তাকে পাকিস্তান থেকে কীভাবে নিয়ে আসা যায় সে বিষয়টি ভাবা হচ্ছে।