অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

লক্ষ্মীপুরে শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় ধর্ষকের ফাঁসি

ডিসট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, লক্ষীপুর

প্রকাশিত: ০৭:১৭ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ০৭:৩০ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জে সাত বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলার রায় মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ঘোষণা করেছেন লক্ষ্মীপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সিরাজদ্দৌলাহ কুতুবী। গত ২২ সেপ্টেম্বর আলোচিত এই হত্যা মামলায় রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি-তর্ক শেষ হয়।

যুক্তিতর্ক শেষে ১২ অক্টোবর সকাল ১১টায় আলোচিত এ হত্যাকান্ডে শাহ আলম রুবেল নামের একজনকে ফাঁসি ও অপর আসামী বোরহান উদ্দিনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।

আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। পরে মামলার বাদী ও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপিত হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণী সূত্রে জানা গেছে, রামগঞ্জ উপজেলার নোয়াগাঁও এক সৌদি প্রবাসীর মেয়েকে (৭) ২০১৮ সালের ২৩ মার্চ শুক্রবার দুপুরে আইসক্রিম খাওয়ানো ও টিভি দেখার কথা বলে শাহ আলম ওরফে রুবেল (৩০) তার বাসায় নিয়ে যান। এসময় তাকে ধর্ষণ করেন শাহ আলম। পরবর্তীতে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়।

ঘটনার তিন দিন পর ২৬ মার্চ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় পাশ্ববর্তি কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপাড়া ঠাকুর বাড়ীর ব্রীজের নিছ থেকে সে শিশুর বস্তবন্দী অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

ঘটনার পর শিশুর মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে রামগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ওই সময় শিশু হত্যাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ, ঢাকা প্রেসক্লাব, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় মানববন্ধন করেন ক্ষুব্ধ লোকজন।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি (পিপি) মো. আবুল বাশার জানান, আলোচিত এ মামলার রায়ের জন্য আদালত মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন। এর আগেও কয়েকবার রায়ের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছিল। তবে করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন কারণে আদালত রায় ঘোষণা করতে পারেননি।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিশুর মা জানান, তৎকালীন রামগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ তোতা মিয়া লাশের সাথে উদ্ধার হওয়া ব্যাগটির পোষ্টার ছেপে পুরো উপজেলাব্যপি ছড়িয়ে দেন। মসজিদে মসজিদে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সহযোগীতা চান ওসি।

লাশ উদ্ধারের এক সপ্তাহ পর নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন রানার সহযোগীতায় শিশুর লাশের ব্যাগ বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সা চালক মোঃ রাকিব হোসেনের তথ্যমতে আটক করা হয় হত্যা ও ধর্ষনকারী শাহ আলম রুবেলের বন্ধু নোয়াগাঁও বাজারের ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী মোঃ বোরহান উদ্দিন (২৫)কে।

বোরহান উদ্দিনকে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে বের হয় মূল ঘটনা। মোবাইল ট্যাকিংয়ের সূত্র ধরে পুলিশ বেশ কিছু এলাকায় হানা দিলেও গ্রেফতার করতে পারেনি ধর্ষণ ও হত্যাকারী একই বাড়ীর চাচা সর্ম্পকৃত শাহ আলম রুবেলকে।

১ এপ্রিল রাতে খুলনা মেট্রো পলিটন পুলিশের সহযোগীতায় রামগঞ্জ থানা পুলিশের হাতে আটক হয় হত্যা ও ধর্ষনকারী শাহ আলম রুবেল। পরে শাহ আলম রুবেল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্ধি দেয় কিভাবে শিশুটিকে হত্যা করা হয়েছে।

শিশুর বাবা সৌদি আরব থেকে জানান, আমি মামলার রায়ে খুশি। এখন আমাদের দাবী দ্রুত তার ফাঁসির রায় কার্যকর করা।